সিএইচটি স্পোর্টস ডেস্কঃ-ক্রিকেটারদের বেতনভাতা,চুক্তি,বৃদ্ধি আরো নানা এমন অর্থ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গেল কয়েক বছরে কম ঝামেলা যায়নি।তবে এর প্রায় পুরোটাই পুরুষদের ক্রিকেট নিয়ে।ওখানে আয় বেশি।প্রত্যেকটা শক্তিশালী দেশ এমনকি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসিও ওসব নিয়েই বেশি ব্যস্ত। প্রধান পুরুষ দলগুলো ভালোই আছে।কিন্তু মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দল? পুরুষ দলের সাথে বৈষম্যটা বিশাল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। বিশেষ করে বেতন ও ম্যাচ ফিতে। এখানে না হয় বেতনের কথাটাই আসুক। আর সেটা ঠিক এখন আসলে বাংলাদেশের মেয়েদের দল মালয়েশিয়ায় ঐতিহাসিক কীর্তি করে ফেলায়।
রোববার কিনরারা একাডেমি ওভালে গেল ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আপনি কি জানেন মাসে কোটি টাকা আয় করা একটি দলকে হারিয়েছে মাসে মাত্র হাতে গোনা কয়েক লাখ টাকা আয় করা একটি দল! এই দলটিই বাংলাদেশের সালমা খাতুনের দল। এটিকেই বলা হয় টাইগ্রেস। তাদের কাছেই বধ হয়েছে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আয় করা নারী ক্রিকেট দল!
কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা টাইগ্রেস ক্রিকেটারদের সবার বেতন মিলিয়েই টেনেটুনে বছরে কোটি টাকা পেরোয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক সালমা বছরে আয় করেন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বেতনে চুক্তিভূক্ত হিসেবে। মাসে বেতন ৩০ হাজার টাকা। আর ভারতের টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউরের এখনকার বাৎসরিক বেতন প্রায় ৬৩ লাখ টাকা। মানে মাসে সোয়া পাঁচ লাখ টাকা ড্র করেন বেতন হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে।
এইটুকু পড়ে নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে বৈষম্যটা এত বেশি! অবশ্যই বেশি। ভারতীয় নারী ক্রিকেটাররা দাবি করেন, তাদের দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাস এবং সাফল্যের কারণেই ২০১৮ সালে তারা এমন এক চুক্তি পেয়েছেন যা তাদের ভালোভাবে বাঁচার, নিশ্চিন্তে জীবনযাপনের একটা পথ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের বয়স যে এখনো ঠিক এক দশকও হলো না!
তারপরও বৈষম্য শব্দটাকে আপনি ব্যবহার করতেই পারেন। শুধু ভারতীয়দের দিকে তাকিয়ে না, তারা সবচেয়ে ধনী বোর্ড, অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ডের দিকে তাকিয়েও। কিন্তু আপাতত প্রসঙ্গ ভারত ও বাংলাদেশ। বিসিবি তিনটি ক্যাটাগরিতে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা নারী ক্রিকেটারদের মাসিক বেতন দেন। সেটা যথাক্রমে গ্রেড অনুযায়ী ৩০, ২০ ও ১০ হাজার। যেখানে সর্বোচ্চ গ্রেডের একজন বাংলাদেশি পুরুষ ক্রিকেটারের বেতন ৪ লাখের বেশি। সর্বনিম্নটাও ১ লাখের উপরে। সালমা, রুমানা, জাহানারাদের মতো অভিজ্ঞদের মাসিক বেতন কতো এখন নিশ্চয়ই পরিষ্কার।
কিন্তু তারা কাদের সাথে লড়ে জিতলেন? লিগপর্বে এই ভারতকে হারিয়েছেন তারা। ফাইনালে আবার সেই ভারতবধ কাব্য। হারমানপ্রিত কাউরের মতো মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী, স্মৃতি মান্ধানারা প্রায় ৬৩ লাখ রূপি আয় করছেন এখন বছরে। এটা কি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডে কাজ করার ফল? তবে ভারতের নারীদের যে কম সংগ্রাম করে এখানে আসতে হয়েছে তাও নয়। ২০১৫ সালের অক্টোবরে তাদের প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেয় ভারত বোর্ড। ২০১৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলে হেরেছে তারা।
এখন এই তুলনাটা আসছে। কিন্তু আসলে তুলনার জন্যই কি তুলনাটা আসছে? কিভাবে ভুলবেন ভারত নারী দলের টেস্ট অভিষেক ১৯৭৬ সালে। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে তাদের অভিষেক। ২০০৫ এও বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে। তিনবার উঠেছে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে। দুবার টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের (২০০৯ ও ২০১০) সেমিতে খেললেও ফাইনাল খেলা হয়নি।
কিন্তু সব কথার শেষ কথা হলো, বাংলার বাঘিনীদের অবিস্মরণীয় এই অর্জন। বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে এখনো শক্তিমান, এখনো অভিজ্ঞ, এখন সমীহ জাগানো দল বলা না গেলেও তারা যে কোটিপতিকেও পথে নামিয়ে আনতে পারে তার প্রমাণ তো গোটা ক্রিকেট বিশ্ব বিস্ফারিত নয়নে দেখে নিল রোববার।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.