যে আদর্শ বাবা বুকে ধারণ করতেন, সে আদর্শ নিয়ে চলেছি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১:০০ : অপরাহ্ণ 402 Views

বাংলাদেশের জনগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ১৩ বছরের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার দুপুরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের স্বীকৃতি আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি তিনি দেশের সব মানুষকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, এমন একটি সময় যখন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছি। দেশে-বিদেশে আমাদের যত বাঙালি, সবাইকে আমি অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলের তৃণমূলের মানুষকে আমি অভিনন্দন জানাই। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। শুধু স্বাধীনতা নয়, বাঙালি জাতিকে একটি উন্নত মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন। আমি শ্রদ্ধা জানাই জাতীয় ৪ নেতার প্রতি, ৩০ লাখ শহীদের প্রতি, ২ লাখ মা-বোনের প্রতি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই সালাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করেছি কিন্তু কখনো ভাবিনি বড় একটা দায়িত্ব নিতে হয়। আমার বাবা রাজনীতি করেছেন আমরা পাশে থেকেছি, কাজ করেছি। স্কুল জীবন থেকে বেরিয়ে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। একজন কর্মী হিসেবেই সক্রিয় ছিলাম। দুর্ভাগ্য আমাদের ৭৫’র ১৫ আগস্ট আমরা সব হারিয়েছি। জানি না কী অপরাধ ছিল আমার বাবা-মা-ভাইদের। আমার বাবা এ দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন এ দেশের মানুষের জন্য। তারই নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে মাত্র সাড়ে ৩ বছরে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। তিনি চেয়েছিলেন ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা এবং এ দেশের মানুষকে ক্ষমতাশীল করে দিয়ে দেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করা। কিন্তু সে সুযোগটা তিনি আর পাননি। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। এরপর ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, একের পর এক ক্যু, সেগুলো চলতে থাকে। বাংলাদেশের মানুষ অন্ধকারেই থেকে যায়।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার চলার পথ এত সহজ ছিল না। যে দেশের মাটিতে আমার বাবা-মা-ভাইয়ের হত্যাকারীরা ক্ষমতাসীন, যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতাসীন। সে দেশে যে কোনো সময় আমি হারিয়ে যেতে পারি। কিন্তু আমি ভয় পাইনি। পিছনে ফিরে তাকাইনি। আমি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি দেশের মানুষকে নিয়ে। বাবার কাছ থেকে শেখা দেশকে ভালোবাসা, মানুষকে ভালোবাসা। তার স্বপ্ন চোখে নিয়ে, বুকে নিয়ে, আদর্শ বুকে নিয়ে পথ চলার চেষ্টা করেছি। নিজের জীবনে কোনো চাওয়া-পাওয়া রাখিনি। দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম সেটাই ছিল বিবেচ্য বিষয়। যে আদর্শ আমার বাবা বুকে ধারণ করতেন, সে আদর্শ নিয়ে চলেছি।

আজ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক আমাদের নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমরা থেমে থাকিনি। আমরা এগিয়ে চলেছি। সব শর্ত পূরণ করে আমরা চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেয়েছি। ২০২১-এর ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে এ অর্জন জাতির জন্য কৃতিত্ব ও গৌরবের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সব সময় বলতেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে, এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।’ এই অল্প কথায় তিনি এটাই বুঝিয়েছিলেন তিনি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তাদের উন্নত জীবন তিনি দিতে চেয়েছিলেন, বলেন শেখ হাসিনা।

এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার যে লক্ষ্য, জাতির পিতার বঙ্গবন্ধুর যে লক্ষ্য সে লক্ষ্যটা আমাদের অর্জন করতেই হবে। সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নতুন প্রজন্ম এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটাই আমাদের আশা। সেভাবেই তাদের তৈরি করতে চাই।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!