মুক্তমত নিউজ ডেস্কঃ-এ দেশের ই একজন নাগরিক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজনের বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।মামলার অনেকগুলোতে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে জনসাধারণকে মারধোর,গাড়ি ভাংচুর,হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত, জখমসহ ক্ষতিসাধন,সরকারী কর্মচারীকে কর্তব্য পালনে বাধা দান,সরকারী সড়কের বেইলি ব্রিজের পাটাতন তুলে অন্তর্ঘাতমুলক কাজ করা,পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও সহায়তা এবং সোশাল মিডিয়ায় মিথ্যা ও মানহানিকর পোস্ট দেয়া ইত্যাদি ছিল বলে জানা যায়।এমন একজনের প্রতি আপনার সহানুভুতি কতটুকু থাকা উচিত?
কথাগুলো বলা হচ্ছে খাগড়াছড়িতে সম্প্রতি গুলিতে আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ সংগঠক মিথুন চাকমার নিহত হওয়া পরবর্তী সামাজিক গণমাধ্যমে ও বিভিন্ন পর্যায়ের সহানুভুতি প্রদর্শনের কৃত্রিম চেষ্টাকে লক্ষ্য রেখে।কেননা নিহত মিথুন চাকমার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের আগে তার সম্পর্কে সঠিক ধারণা সমাজে বিদ্যমান থাকা জরুরী।ব্যাপারটা এভাবে ভাবলে কি খুব বেশি অন্যায় হবে যে,তার অন্যায়ে যাদের সায় আছে শুধুমাত্র তারাই তার প্রতি সহানুভুতিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন।অথবা,এমন প্রশ্নের অবতারণা করা কি খুব বেশি অযৌক্তিক হবে যে,এমন একজন ব্যক্তির জন্য সহানুভুতি প্রদর্শন তার অপকর্মে ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার নিরীহ সাধারণ মানুষের প্রতি অবিচার নয় কি?এখন একটু ভিন্ন তথ্য দিয়ে পাঠককে চিন্তার সুযোগ করে দেয়া যাক। ধরুণ,আপনার সামনে এমনভাবে এই ব্যক্তিকে উপস্থাপন করা হয়েছে যে,আপনি তার খারাপ দিকগুলো জানেন না। এমতাবস্থায় এই লোকের মৃত্যুর সংবাদে আপনি কি সহানুভূতিশীল না হয়ে থাকতে পারবেন?আর মৃত্যুটি যদি স্বাভাবিক না হয়?যদি এটি একটি হত্যাকাণ্ড হয়?আপনি কি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা একজন মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন না?আমি মোটেও অবাক হয়নি যখন দেখলাম যে,দেশের অন্যতম প্রধান কয়েকটি জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা মিথুন চাকমার হত্যার খবরটি বড় করে কাভার করেছে,কিন্তু তার নামে যে প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে সেটি বেমালুম চেপে গেছে!এমনকি,৩ জানুয়ারি ২০১৮ তে এমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েব পেজে প্রকাশিত এক দাবি অনুযায়ী,এই মামলাগুলোর মধ্যে কয়েকটি মামলা করা হয়েছে আইসিটি এক্টে।(Some of these cases were brought under the Information and Communication Technology (ICT) Act 2006)।অথচ বাস্তবতা ভিন্ন।তার নামে আই সি টি এক্টে মাত্র একটি মামলা রয়েছে।বাকি মামলাগুলো পেনাল কোড,বিস্ফোরক দ্রব্য আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারা অনুযায়ী করা হয়েছে।অনেকে বলতে পারেন,এগূলো রাজনৈতিক মামলা,মিথ্যা অভিযোগ এবং সবই বানোয়াট।আমার কথা হলো,এই সব বহুল প্রচলিত সংবাদপত্রগুলোর পেশাদার সাংবাদিকগণ কি এই তথ্যটুকু সংবাদে উল্লেখ করতে পারতেন না?যারা সংবাদগুলো পড়েছেন,নিশ্চয় দেখেছেন যে,কত বিস্তারিতভাবে ঘটনা এবং এ বিষয়ে অন্যদের মতামত উদ্ধৃত করা হয়েছে?অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে,এতসব জানার পরেও কেন অবাক হইনি?কারণ অতি পরিষ্কার;আমাদের সমাজের কিছু লোক ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করে। যে ভয়টির কথা গত ২৮ ডিসেম্বরের প্রথম আলোয় বারাক ওবামার সাক্ষাৎকারে ঊজ্জলভাবে উঠে এসেছে।তিনি বলেছেন, “ইন্টারনেটের একটা ঝুঁকি হচ্ছে,মানুষ ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতায় বসবাস করতে পারে।সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য মানুষের পক্ষপাতমূলক ধারণাগুলোকে আরও শক্তিশালী করবে।“সুতরাং,এখন আপনিই বলুন,এই বহুল প্রচলিত সংবাদপত্রগুলো পড়ে বা এমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েব পেজের দাবি দেখে কিংবা সোসাল মিডিয়ার কল্যাণে ‘ ভিন্ন বাস্তবতায় বসবাসকারীদের কেউ যদি একজন মৃত ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন,আমাদের সমাজের কতজন তাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখবে?আর এই সহানুভুতি কি মৃত ব্যক্তির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বা অন্যায়ের শিকার হওয়া নিরীহ ব্যক্তিগুলোর প্রতি অবিচার বলে বিবেচিত হবে না?
(((মেহের আলম,খাগড়াছড়ি থেকে)))
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2025 Chttimes.com. All rights reserved.