শিরোনাম: পর্যটকের মৃত্যুঃ ট্যুর এক্সপার্ট এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে গ্রেফতার ইরান যদি আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যায় তাহলে পাল্টা হামলায় তেহরানকে জ্বালিয়ে দেয়া হবেঃ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করতে হবেঃ সাচিং প্রু জেরী কাতার রেডক্রস এর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরন করলো বান্দরবান রেডক্রিসেন্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে পবিত্র ঈদুল আযহার ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত কুহালং হেডম্যান পাড়ায় নানা আয়োজনে মাসিক স্বাস্থ্য দিবস-২৫ পালিত বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন বান্দরবানে ভূমি মেলা-২০২৫ এর উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন খাগড়াছড়ির ইনা ত্রিপুরা


ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশের সময় :১২ আগস্ট, ২০২১ ১১:০৫ : অপরাহ্ণ 569 Views

খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ি পল্লী থেকে উঠে আসা ইনা ত্রিপুরা এখন অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন।তার বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ৫নং ভাইবোনছড়া ইউনিয়নস্থ লম্বাপাড়া গ্রামে।

জানা যায়, ১৯৮৬ সালে কৃষক পরিবারের জন্ম নেন ইনা ত্রিপুরা।বাবা বর্ণ কুমার ত্রিপুরা ও মা দ্বিফরশ্রী ত্রিপুরা দুজনই জুমচাষি। তিন বছর বয়স থেকে জুমচাষি বাবার কাছে বড় হতে থাকেন ইনা।বেশিরভাগ সময়ই জুমে কৃষিকাজে ব্যস্ত থাকতেন বাবা।পরিবারে আর্থিক অসচ্ছলতা থাকলেও পড়ালেখার প্রতি ইনার গভীর মনোযোগ ছিল।

এমনকি বাবার সঙ্গে জুম চাষে গেলেও সেখানে বই নিয়ে যেতেন!পারিবারিক অসচ্ছলতার পাশাপাশি সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও মোকাবিলা করতে হয়েছে তাকে।

অনেক দিন না খেয়েই স্কুলবেলা কেটেছে ইনার। নারী শিক্ষার প্রতি গ্রামের মানুষের সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছে তাকে। তবে মেয়ের শিক্ষা সংগ্রামে সবসময় পাশে ছিলেন বাবা।

অদম্য ইনা নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে পড়ালেখা চালিয়ে যান। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তা এবং টিউশনি করে মাধ্যমিক পাস করেন। খাগড়াছড়ির সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন ইনা। তবে কলেজে পড়ার সময় বাবার মৃত্যুর পর আবারও অনিশ্চিত জীবনের মুখোমুখি হোন ইনা। তবে দমে যাননি তিনি।

২০০৬ সালে ইনার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে মেধাবী ইনা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত মিরিন্ডা হাউস কলেজে (Mirinda House College) সমাজবিদ্যায় স্নাতক পড়ার সুযোগ পান ইনা। আর পেছনে ফিরতে হয়নি তাকে।

২০০৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে এসে ইউএনডিপির সিএইচটিডিএফ প্রকল্পে কাজ করার সময় দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য বৃত্তি পান। একই সময়ে তিনি আউসএইডের ( AusAid) বৃত্তিও পান। এর পর তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান এবং ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ২০১৪ সালে দেশে ফিরে আসেন।

এর পর হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থায় নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিয়ে চার বছর কাজ করার পর আবার বৃত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যান। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে হিউম্যানিটারিয়ান জেন্ডার পলিসির ওপর পিএইচডি ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত। অস্ট্রেলিয়ার এডেলেইড শহর বাস করেন ইনা ত্রিপুরা।

অদম্য ইনা জানান, কৃষক বাবার পক্ষে আমাদের সবার মৌলিক চাহিদা মেটানো সম্ভব ছিল না। পরিবারে অর্থ-কষ্ট সবসময় লেগেই থাকত। প্রাথমিকে সবসময় খালি পায়ে স্কুলে যেতাম।কারণ জুতা কিনে দেওয়ার মতো বাবার সামর্থ্য ছিল না। কখনও দমে যায়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো দুর্গম এলাকায় থাকার পরও নিজের ইচ্ছাশক্তির কারণে এতদূর এসেছি।

তিনি আরও জানান, জীবনে চলার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা আসবেই। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর হলে সেই প্রতিবন্ধতা আরও প্রখর হয়। যেটুকু সুযোগ রয়েছে পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা দিয়ে সাফল্য অর্জন করতে হবে। এখনও দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউটর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতা করি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা জানান,মেধার পাশাপাশি ইচ্ছাশক্তি ও প্রচেষ্টা থাকলে দারিদ্র্য কাউকে দমিয়ে রাখতে পারে না।ইনা ত্রিপুরা এর একটি দৃষ্টান্ত।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!