

“ক্রীড়াই শক্তি,ক্রীড়াই বল” এই অনুপ্রেরণামূলক মূলমন্ত্রকে ধারণ করে পাহাড়ি জনপদের হৃদয়ে আবারও বাজলো ফুটবলের ঢাকের আওয়াজ।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বান্দরবানের নীল পাহাড়,সবুজ প্রান্তর আর নদীর কোল ঘেঁষে শুরু হয়েছে আন্তঃউপজেলা ভিত্তিক ‘রিজিয়ন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট–২০২৫’।খেলাধুলা কেবল বিনোদন নয় এটি সুস্থ শরীর,শৃঙ্খলাবোধ,দলগত চেতনা ও নেতৃত্বগুণ গড়ে তোলার শক্তিশালী মাধ্যম।বান্দরবান সেনা রিজিয়ন দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য,অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনের বিকাশেও বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।এবারের এই ফুটবল টুর্নামেন্ট তারই আরেকটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।সোমবার (১১ আগস্ট) রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান কাউসার।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এম.সাকের আহমেদ,অফিসার ইনচার্জ,রোয়াংছড়ি থানা।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রোয়াংছড়ি সাব জোন কমান্ডার মেজর এম.এম.ইয়াসিন আজিজ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দুর্গম পাড়া থেকে আগত খেলোয়াড়,ক্রীড়াপ্রেমী দর্শক,জনপ্রতিনিধি,প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।বান্দরবান সেনা রিজিয়ন আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে।এতে সহযোগিতা করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।প্রতিটি উপজেলায় অনুষ্ঠিত খেলাগুলো থেকে সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে উপজেলা ভিত্তিক দল গঠন করা হবে এবং পরবর্তীতে তারা জেলা পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “খেলাধুলা আমাদের শরীরকে যেমন সুস্থ রাখে,তেমনি মনের ভেতরেও শৃঙ্খলা,ধৈর্য,পরিশ্রম ও সহমর্মিতা তৈরি করে।আজকের এই রিজিয়ন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়।এটি ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় তৈরির ক্ষেত্র,এটি একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগানোর একটি মঞ্চ।আমরা চাই,বান্দরবানের প্রতিটি গ্রাম থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসুক,যারা একদিন দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলবে এবং বাংলাদেশের পতাকাকে গর্বের সাথে উড়িয়ে দেবে।সেনাবাহিনী সর্বদা শিক্ষা,ক্রীড়া ও সমাজ উন্নয়নের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে আলোকিত পথে এগিয়ে নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।আমরা বিশ্বাস করি,খেলাধুলা হবে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধের অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার।” জানা যায়, রোয়াংছড়ি সাব জোন কমান্ডার মেজর এম.এম. ইয়াসিন আজিজ ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।তার উদ্যোগ ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে এর পূর্বে স্থানীয় পর্যায়ে সফলভাবে ভলিবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়,যা এলাকায় ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে।এছাড়া, তিনি দুর্গম পাড়াগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, খেলোয়াড়দের জন্য প্রশিক্ষণ সুযোগ সৃষ্টি এবং উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে খেলাধুলার ধারাবাহিকতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।তার প্রচেষ্টায় ক্রীড়ার মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের মধ্যে সম্পর্ক,সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে।আয়োজক সংশ্লিষ্ট মতে,বান্দরবানে ফুটবলের মানোন্নয়ন,প্রতিভাবান খেলোয়াড় সৃষ্টি এবং তরুণ প্রজন্মকে মোবাইল আসক্তি ও মাদক থেকে দূরে রেখে সুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে জীবন গঠনের সুযোগ করে দেওয়াই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ পাহাড়ি এলাকার ক্রীড়াঙ্গনকে নতুন প্রাণ দেবে এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।