শিরোনাম: চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট বান্দরবানে আলেম সমাজের সংবাদ সম্মেলন বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে উদযাপিত হলো জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস জেলা প্রশাসক মেধাবৃত্তি,বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সেনা জোনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বান্দরবানে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী ও সুধী সমাবেশে দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তাঃ সুস্থ হয়ে ফিরছে ১১ বছরের জিংক থান ময় বম

বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ভারতীয় অর্থনীতিবিদ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশের সময় :২০ জুন, ২০২১ ১০:৪১ : অপরাহ্ণ 315 Views

উৎপাদন, কর ব্যবস্থাপনা, রফতানিখাতসহ বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভারতের অন্যতম শীর্ষ অর্থনীতিবিদ এবং দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান। সম্প্রতি এক নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশকে উল্লেখ করেছেন ‘উন্নয়নের আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে।

তবে তিনি বলেছেন, উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র মানবসম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে এখনও বাংলাদেশ সরকারের চেয়ে এগিয়ে আছে বেসরকারি সংস্থা ও এনজিওগুলো। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকারি সেবা সংস্থা ও সরকারি কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন ভারতীয় এই অর্থনীতিবিদ।

বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসায় প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে লেখা এক নিবন্ধে সুব্রামানিয়ান বলেন, ‘দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্যাভাব, বিদেশি সাহায্য ও রেমিটেন্সের ওপর অতি-নির্ভরতা— সব মিলিয়ে একসময় বাংলাদেশকে বলা হতো দুর্দশার ঝুড়ি। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশ তার সেই পুরনো চিত্র অনেকটাই বদলে ফেলেছে।’

‘১৯৮৭ সালেও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল অর্ধেক। ২০০৭ সালে ভারতের মাথাপিছু আয়ের তুলনায় বাংলাদেশের আয় ছিল অর্ধেকের কিছু বেশি। কিন্তু ২০২০ সালে উপমহাদেশের দুই বৃহৎ দেশকেই পেছনে ফেলতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ; এবং এখন পর্যন্ত দেশটির উন্নয়নের চিত্র দেখে বোঝা যাচ্ছে, এই পথে আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।’

তৈরি পোষাক ও বস্ত্রখাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে অরবিন্দ সুব্রামনিয়ান বলেন, এই খাতে বাংলাদেশের উন্নতি অসাধারণ। বর্তমানে তৈরি পোষাক খাতে বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। তার সামনে আছে মাত্র দু’টি দেশ— চীন এবং ভিয়েতনাম।

এছাড়া গত দুই দশকে দেশের মানুষের গড় আয়ু ‍বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, নারী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা— এসব বিষয়েও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের।

এসব খাতে উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতারও প্রশংসা করেছেন ভারতের এই শীর্ষ অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর প্রায় দেড়যুগ বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল সামরিক বাহিনী বা সামরিক বাহিনী থেকে আসা কর্মকর্তাদের সরকার। কিন্তু গত ৩ দশকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। দেশটির সেনা কর্মকর্তারাও জাতীয় ক্ষমতায় থাকার চেয়ে সেনানিবাসে থাকতেই বেশি আগ্রহী।’

কর প্রশাসনের বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে কর-ব্যবস্থাপনার আদর্শগত মান থেকে এখনও কিছুটা পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু আমাদের এও মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বছরের পর বছর ধরে দেশটি বিদেশি সাহায্যের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল ছিল। স্বাধীনতার পর প্রথম ২৫ বছর পর্যন্ত দেশটির মোট জিডিপির ৫ শতাংশেরও বেশি আসত বিদেশি সহায়তা থেকে।’

‘গত কয়েক বছর ধরে এই নির্ভরশীলতা কমেছে, পাশাপাশি দেশটিতে বেড়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বলতে হবে কর ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। অন্তত পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের কর ব্যবস্থাপনা এখন উন্নত।’

‘রফতানি খাতেও দেশটির উন্নতি লক্ষণীয়। এর প্রধান কারণ পণ্য প্রস্তুত খাতে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি এবং একটি সবল শ্রমবাজার। ফলে একসময়ের অপ্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি থেকে প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি বাণিজ্যে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।’

তবে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার দিক থেকে বাংলাদেশের সরকারি সেবা সংস্থাগুলো এখনও এনজিও বা বেসরকারি সংস্থাগুলো থেকে কিছুটা পিছিয়ে আছে বলে মনে করেন সুব্রামানিয়ান।

এ বিষয়ে নিবন্ধে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্র্যাকসহ অন্যান্য এনজিও যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে, দেশের সরকারি সেবা সংস্থাগুলোতে এখনও সেই পরিমাণ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের কিছুটা অভাব রয়ে গেছে। এ বিষয়টিতে সরকারের মনযোগ দেওয়া উচিত। বিশেষ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক খাতগুলোতে সরকারি সংস্থাগুলোর দক্ষতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।’

অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক বিভাজনের কবলে পড়ে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে সেই সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নেই পাকিস্তানের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে দেশটির। তারপর বহু বছর পর্যন্ত পাকিস্তান-ভারতের নেহাত নগন্য প্রতিবেশি হিসেবে ছিল বাংলাদেশ।’

‘তবে এখন আর আগের মতো অবস্থা নেই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের উজ্জ্বল মডেল।’

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!