

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ-ইরাক ও ইরানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণহানি বেড়ে ৪০০ জনে দাঁড়িয়েছে।এতে শেষ খবর পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত সাত হাজার মানুষ।ভূমিকম্পে ইরানের ইরাক সীমান্ত সংলগ্ন কেরমানশাহ প্রদেশে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির খবর জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।স্থানীয় সময় রোববার (১২ নভেম্বর) রাত ৯টায় আঘাত হানা ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের একটি দাতব্য সংস্থা।ভূমিকম্পের বেঁচে যাওয়া বাগদাদের তিন সন্তানে জননী মাজিদা আমির বলেন,রাতের খাবার শেষ করে আমি আমার সন্তানদের নিয়ে বসেছিলাম,হঠাৎ দেখলাম ঘরবাড়ি বাতাসের মতো দুলছে।প্রথম ভেবেছিলাম কোনো বোমা বিস্ফোরণ,পরক্ষণেই চারদিক থেকে মানুষজনের ভূমিকম্প চিৎকার শুনতে পাই।ইরানে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেরমান শাহ প্রদেশের সারপোল-ই জাহাব শহর।সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ শহরটিতেই অধিকাংশ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ইরিন।সংলগ্ন আটটি গ্রামও ভূমিকম্পে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের রেড ক্রিসেন্ট এর প্রধান মোরতেজা সেলিম।ভূমিকম্পে শহরের প্রধান হাসপাতালটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। বিদ্যুৎবিচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা।ইরাকের স্বায়ত্ত্বশাসিত কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার শাসিত সুলাইমানিয়া প্রদেশের দরবানদিখান শহরে ৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন প্রদেশটির গভর্নর ওমর আহমেদ। এছাড়া আহত হয়েছেন বহু।ভূমিকম্পে দরবানদিখান শহরের অনেক ভবন ধসে পড়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।রিখটার স্কেলে সাত দশমিক তিন মাত্রার ওই ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পুরো মধ্যপ্রাচ্য।ইসরায়েল,লেবানন থেকে শুরু করে কাতার এমনকি পাকিস্তানেও অনুভূত হয় ওই ভূমিকম্পের কম্পন।ভূমিকম্পের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ইরাকের রাজধানী বাগদাদেও।এদিকে ভূমিকম্পের ফলে বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধসের ঘটনায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাঘাত ঘটছে।ফলে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার তৎপরতা ও সাহায্য কর্যক্রম।ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রেডক্রসের ৩০টি টিম কাজ করছে।এছাড়া তিনটি জরুরি রিলিফ ক্যাম্প খোলার প্রক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন কেরমানশাহ প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর মোজতাবা নিকাদ্দার।
ইরানের জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রধান পির হোসেন কুলিভান্দ বলেছেন,ভূমিকম্পে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ধসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সাহায্য পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে।৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিলো ইরান সীমান্ত সংলগ্ন হালাবজা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে।যা রাজধানী বাগদাদ থেকে মাত্র ৩৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।