এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: বান্দরবানে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের কথন’ শীর্ষক আলোচনা সভা মেধাবী শিক্ষার্থী ছাইনুমে মারমার পাশে দাঁড়লো পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ জুলাই পুর্নজাগরণঃ রোয়াংছড়িতে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বান্দরবানে মাছরাঙা টেলিভিশনের ১৪তম বর্ষপূর্তি উদযাপিত বান্দরবানে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনায় নিহত উক্যছাইং মার্মাকে বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন রোয়াংছড়িতে তরুণকে পাথর ছুড়ে মেরে হত্যাঃ লাশ খালে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ জুলাই পুনর্জাগরণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানঃ বান্দরবানে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

সরকারি ব্যয়ে বড় সাশ্রয়


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১১:৫৫ : অপরাহ্ণ 546 Views
করোনার জাঁতাকলে পড়ে ছন্দ হারিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। অতিমারিতে ধুঁকছে দেশের সব খাত। ফলে বড় ধরনের টান পড়েছে রাজস্ব আয়ে। এতে সরকার অতি জরুরি নয়, এমন খরচ কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়। এই কৃচ্ছ্রসাধনে সরকার অনেকখানি সফল। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে খরচে লাগাম টানার ফলে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৭৯ হাজার কোটি টাকা। আশার খবর হলো, এই অর্থবছরে (২০২১-২২) আরো আনুমানিক ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গেল বছরের মার্চে। এর পর থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সঙ্গে বাড়ে ভীতি। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে রাজস্ব আয়ের ওপর। কারণ প্রথম ঢেউ এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল স্থবির। এতে রাজস্ব আদায়ে বিশাল ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে করোনা মহামারির মধ্যে বাজেট বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যয় সংকোচনের ছক কষে সরকার। এ রকম প্রেক্ষাপটে নেওয়া হয় নানা উদ্যোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল যানবাহন কেনা বন্ধ, বিদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহ, আপ্যায়ন ভাতাসহ অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থছাড় স্থগিত রাখা। এ ছাড়া বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমিয়েও টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যে উদ্দেশ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা পুরোপুরি সফল। খরচের লাগাম টেনেও যে অর্থনীতি গতিময় রাখা যায় এর ঝকঝকে উদাহরণ এই দুই অর্থবছর।

২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল থেকে জুন) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থছাড় স্থগিত করা হয়। এতে সাশ্রয় হয়েছে কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ওই অর্থবছরের শেষ দিকে এসে সরকারিভাবে যানবাহন কেনা বন্ধ, ভ্রমণ ব্যয় স্থগিতের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে আরো প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করে সরকার।

২০২০-২১ অর্থবছরেও এডিপির পুরো টাকা ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। বলা হয়েছিল, জিওবি খাতের ২৫ শতাংশ টাকা সংরক্ষণ করতে হবে। গেল অর্থবছরের এডিপিতে মোট প্রকল্পের ৩০ শতাংশ কম অগ্রাধিকার ছিল। বাকি ৭০ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ উচ্চ এবং ৩০ শতাংশ ছিল মধ্যম অগ্রাধিকার প্রকল্প। এতে সরকারের সাশ্রয় হয় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ব্যয় সংকোচনের আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ভ্রমণ ব্যয় ৫০ শতাংশ স্থগিত করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের খরচ মেটাতে সরকার দুই হাজার ২৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। এতে অর্থবছর শেষে এক হাজার ১২০ কোটি টাকা সাশ্রয়ের কথা থাকলেও বিভিন্ন বিদেশি সেমিনার, সভা স্থগিত হওয়ায় সেই সাশ্রয়ের অঙ্কটা বেড়ে প্রায় দুই হাজার কোটিতে ঠেকে।

ব্যয় সংকোচন করতে গেল বছরের নভেম্বরে সব সরকারি যানবাহন কেনা স্থগিত করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে যানবাহন কেনার জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের শেষে এই বরাদ্দ থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। ফলে এ খাতে সরকারের প্রায় পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বেচে যায়।

এদিকে করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামাল দিতে অর্থবছরের (২০২০-২১) শুরুতেই মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ ১৮ খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতেও টাকার সাশ্রয় হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই অর্থবছরে সাশ্রয় হয় ৭৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দিন থেকেই সরকার ব্যয় সংকোচনের নীতি অব্যাহত রেখে পরিপত্র জারি করেছে। রাজস্ব আদায় না বাড়লে নভেম্বর বা ডিসেম্বরে আবারও ব্যয় সংকোচনে বড় পদক্ষেপ নিতে পারে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে ধারণা করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবং অর্থনীতিবিদ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনার কারণে এক রকম বাধ্য হয়েই সরকার ব্যয় সংকোচন করেছিল। তবে সরকারি ব্যয়ের প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে সরকারি ব্যয় সুষ্ঠুভাবে করতে হবে। ব্যয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতি রয়ে গেছে। এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

এদিকে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাহুল্যজনিত ব্যয় পরিহার করার কথা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। করোনাকালে সেটা করে যদি খরচের কৃচ্ছ সাধন করা যায় তাহলে অবশ্যই সেটি ভালো। এখন অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পগুলোরও পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার। আর করোনার পর সাধারণ সময়ের জন্য এই চর্চা জারি রাখা যেতে পারে। এতে যে টাকা সাশ্রয় হবে তা অগ্রাধিকারভিত্তিক বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করা যাবে।’

এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় স্বাস্থ্য, চিকিৎসাসেবাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেড়েছিল। আবার রাজস্ব আদায়েও নেতিবাচক প্রভাব ছিল। এসব বিবেচনায় নিয়েই ব্যয় সংকোচন বা সাশ্রয়ের নীতি নেওয়া হয়েছিল। গেল দুই অর্থবছরে এতে খুব ভালো সাশ্রয় করা গেছে। আশা করছি, চলতি অর্থবছরেও ভালো সাশ্রয় হবে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালে আমরা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাব।’

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
August 2025
MTWTFSS
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!