শ্রমিক আন্দোলনের নেপথ্যে প্ররোচনা দিচ্ছে স্বার্থান্বেষী মহল


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ৩:২১ : অপরাহ্ণ 837 Views

নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিগত রবিবার থেকে ন্যায্য মজুরির জন্য আন্দোলনে নেমেছে পোশাক শ্রমিকরা। আর এ আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার পেছনে প্ররোচনা দিয়ে যাচ্ছে দেশের স্বার্থান্বেষী একটি মহল। তারা শ্রমিক আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পায়তারা করে যাচ্ছে।

সরকার ঘোষিত কাঠামো পর্যালোচনা করে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের দাবিতে গত রোববার থেকে প্রতিদিনই ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে পোশাক শ্রমিকরা। তাদের অভিযোগ, সরকার তাদের জন্য যে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে দিয়েছে, মালিকপক্ষ সে অনুযায়ী বেতন দিচ্ছে না। বরং তাদের নানাভাবে ‘অন্যায়-অবিচারের’ শিকার হতে হচ্ছে। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করে গত ২৫ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে তা কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেখানে। তাতে পোশাক খাতের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের মজুরি আগের চেয়ে গড়ে ৫১ শতাংশ বাড়লেও ‘বিভিন্ন রকম’ ব্যাখ্যা দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হয়েছিলো।

নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় শপথ নেওয়ার পর দায়িত্বের প্রথম দিনই পোশাক খাতের সমস্যা মেটাতে গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেন বাণিজ্যমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী। বৈঠকে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শিদীসহ গার্মেন্টস মালিক, শ্রমিক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা কমিটির ১২ সদস্যের মধ্যে ১০ জন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানোও হয়েছে, দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে বলে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করে আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা করার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে, সরকারের পক্ষ থেকে বেতন বৃদ্ধির হিসাব সংক্রান্ত কাগজপত্র বিজিএমইএ, বিকেএমইএ-এর মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের কাছে পুনরায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে, যাতে কোনো রকমের বিভ্রান্তি না হয়।

কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। সমসাময়িক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশের সবেচেয়ে বড় গার্মেন্টস সেক্টরে অসন্তোষ সৃষ্টি করার জন্য কিছু কিছু মহল চেষ্টা করছে। কোথাও কোথাও বিক্ষুব্ধদের রাস্তা থেকে সরাতে গিয়ে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হচ্ছে পুলিশকে। দেশের অর্থনীতিতে বরাবরই বিশাল অবদান রেখে আসা পোশাক শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে তাদের ধ্বংসাত্মক করে তুলছে একটি স্বার্থন্বেষী মহল। এর আগে বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক বিক্ষোভ হলেও প্রত্যেকবারই সরকার আশ্বাস দেওয়ার সাথে সাথে শ্রমিকরা কারখানায় ফিরে গিয়েছে। এবার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। তারা কোন একটি স্বার্থন্বেষী মহলের প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্যে যারাই শ্রমিকদের উস্কানি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। না হলে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা ব্যাপক।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর