এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বান্দরবানে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ বান্দরবান বাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বিএনকেএস এর উদ্যোগে টেকনাফের ক্যাম্প-২২ এ শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্ণিল আয়োজনে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপিত ঢাকায় পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ বান্দরবান সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উদযাপিত বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

স্মরণীয় হয়ে থাকল মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বিতরণীর নক্ষত্রখচিত রাত


প্রকাশের সময় :২২ এপ্রিল, ২০১৭ ৬:০৬ : পূর্বাহ্ণ 1555 Views

বিনোদন ডেস্কঃ-রঙিন আলোর রোশনাই, সাজসজ্জার জাঁকজমক আর তারকাদের দ্যুতিময় পরিবেশনায় গতকাল (২১ এপ্রিল) স্মরণীয় হয়ে থাকল মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বিতরণীর নক্ষত্রখচিত রাত।শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের খুদে শিল্পীদের তবলা লহরার আনন্দধ্বনির পরিবেশনায় শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠান। তার রেশ বজায় থাকল শেষ পর্যন্ত।তবলাবাদনে অংশ নিয়েছিল নুসরাত ই জাহান,এম জে জে ভুবন,পঞ্চম সান্যাল,ফাহমিদা নাজনীন,সুপান্থ মজুমদার ও প্রশান্ত ভৌমিক।হারমোনিয়ামে ছিলেন অভিজিৎ কুণ্ডু।গানের সুর, নাচের ছন্দ,অভিনয়ের নাটকীয়তায় বরাবরের মতোই মুগ্ধ হলেন দর্শকেরা।তবে আয়োজন শেষ হলো বেদনার আবহে।মঞ্চেই খবর এল, চলে গেছেন শিল্পী–সুরকার লাকী আখান্দ্।দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলো তাঁর প্রতি তাঁরই সৃষ্ট ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে’ গানের সুরে।
এবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ছিল ১৯তম আসর।দেশের বিনোদনজগতের কৃতীজনদের কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির বৃহত্তম আয়োজনটির জন্য সারা বছরই গভীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন তারকা ও তাঁদের ভক্ত-অনুরাগী সবাই।বিনোদন ও সাংস্কৃতিক জগতের খ্যাতিমান তারকাদের উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য হয়ে ওঠে এই আয়োজন।এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের ঘটনার পর থেকে এই আসরে চিত্তবিনোদনের সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধের দিকটিও সংযোজিত হয়েছে।দুর্ঘটনার পরেই তারকারা দুর্গতদের কল্যাণে তাঁদের উদার হাত প্রসারিত করেছিলেন।সেবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে এক রাতেই শিল্পীরা ৫৪ লাখ টাকা দানের কথা বলেছিলেন।গঠন করা হয়েছিল সাভার সহায়তা তহবিল।পরে এই তহবিলে প্রায় ২ কোটি ২২ লাখ টাকা ওঠে।ওই তহবিলের ৫০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ২০ সন্তানকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।বাকি টাকা ১০১ জনকে পুনর্বাসন সহায়তা দেওয়া,চিকিৎসা আর উদ্ধারকাজে ব্যয় করা হয়েছে।এবারও আয়োজনে থাকল সেই প্রসঙ্গ।গতকাল অনুষ্ঠানে দেখানো হলো ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প নামের তথ্যচিত্র।এতে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর যাদের সহায়তা দেওয়া হয়েছিল,তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে।তাদের মধ্যে দুই বোন সুমা ও সুমী এসেছিল অনুষ্ঠানে।মঞ্চে ডাকা হলো তাদের।বাবা-মা হারা দুই বোন এবার সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে।তাদের মতো ২০ জনকে আজীবন শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।স্কয়ার টয়লেট্রিজের হেড অব মার্কেটিং মালিক মোহাম্মদ সাঈদ তাঁর স্বাগত ভাষণে বলেন,দেশে বিনোদনশিল্পের প্রসার ঘটছে। স্কয়ার এতে সহায়তা দিচ্ছে।এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন,এ দেশের শিল্পীরা বরাবরই দেশ-জাতির সংকটে সাড়া দেন। পথে নামেন।রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সেবার এই অনুষ্ঠানেই গঠন করা হয়েছিল সাভার সহায়তা তহবিল। তিনি বলেন,এখন অন্ধকারের শক্তি নানা দিক থেকে বাধা দিচ্ছে।তাদের প্রতিহত করতে শিল্পী,সংস্কৃতিসেবী ও সচেতন মানুষ—সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন অভিনয়শিল্পী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম।তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন নন্দিত অভিনয়শিল্পী কবরী।সম্মাননার প্রতিক্রিয়ায় কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষেপে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন,সাংস্কৃতিক জগতে যখন কাজ শুরু করেছিলেন,যখন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন,কোনো ক্ষেত্রেই কিছু পাওয়ার জন্য কাজ করেননি।তবে স্বীকৃতি পেয়ে ভালো লাগছে।এ ধরনের সম্মাননা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।এরপর জমকালো আয়োজনে পরের পর্বে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানিয়ে এতক্ষণের উপস্থাপক আনিসুল হক মঞ্চ ছাড়েন।
চমকপ্রদ ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেশনের সঙ্গে মঞ্চে আসেন নায়ক ফেরদৌস। এরপরে আসেন নায়িকা পূর্ণিমা।তাঁদের সঙ্গে ২৪ জন শিল্পীর নৃত্য দিয়ে এই জুটি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা শুরু করেন।পর্দায় ‘বিশেষ বুলেটিন’ নামে পূর্ণিমার টিভিতে খবর পাঠের অভিনয় দেখে দর্শকেরা হেসে লুটিয়ে পড়েন।পূর্ণিমা অনুকরণ করেছেন চলচ্চিত্র তারকা শাবনূর,মৌসুমী,শাবানা ও ববিতাকে।টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও সংগীতের বিভিন্ন বিভাগে এবার ১৫টি পুরস্কার দেওয়া হয়।প্রথমে ছিল টিভি সমালোচক পুরস্কার।প্রতিটি পর্বের পুরস্কার বিতরণের ফাঁকে ফাঁকে ফেরদৌস ও পূর্ণিমার সরস সংলাপ উপভোগ্য হয়ে ওঠে।এভাবেই এগিয়ে যায় অনুষ্ঠান।প্রথম দফা পুরস্কার বিতরণের পর ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী মঞ্চে এসে পরিবেশন করেন কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা ও লাকী আখান্দের সুর করা ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না’ গানটি। এর সঙ্গে অপি করিম ও সহশিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন।নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন স্নাতা করিম।নাচ-গানের শেষে এবার চলচ্চিত্র সমালোচনা পুরস্কার।পুরস্কার নিতে এসে আয়নাবাজি সিনেমার ‘যা দেখছ তা,তা না’ গানের সঙ্গে চঞ্চল চৌধুরী,নির্মাতা অমিতাভ রেজা ও শিল্পীদের নৃত্য।এবার অভিনয়ক্ষেত্রে সেরা নবাগত পুরস্কার। তারপর একটি অন্য রকম পরিবেশনা।মঞ্চে এলেন মিরাক্কেলের সজল,শাওন ও জামিল।সংগীত নিয়ে একটি নাটকীয় পরিবেশনা তাঁরা জমিয়ে দিলেন সরস সংলাপে।
অনুষ্ঠানে আরও ছিল সেরা গায়ক,গায়িকা,টিভি ও চলচ্চিত্রের সেরা অভিনেতা–অভিনেত্রীর পুরস্কার।এর ফাঁকে ফাঁকে রোশান-সারিকা,সিয়াম-পিয়া বিপাশা ও ইমন-মেহ্জাবীন জুটির মিশ্র নৃত্য।নৃত্য পরিচালনা করেছেন ইভান শাহরিয়ার।পুরস্কার দিতে এসে তারকা দম্পতি অনন্ত জলিল ও বর্ষা সঞ্চালক ফেরদৌস ও পূর্ণিমার সঙ্গে মেতে উঠলেন রূপচর্চা নিয়ে উপভোগ্য রসিকতায়।বিশিষ্ট অভিনেতা নায়ক ফারুক বললেন,মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বিতরণের এই অনুষ্ঠান থাকে শুধুই শিল্পীদের জন্য,এই বিষয়টি তাঁর খুব ভালো লাগে।নতুনদের এই পুরস্কার ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।আরেক জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন পুরস্কার দিতে এসে পূর্ণিমার গেয়ে ওঠা ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ গানের সঙ্গে এক চক্কর নেচেও নেন।আর সংগীতে পুরস্কার পাওয়া কনা আর ইমরান পুরস্কার নিয়ে উপস্থাপকদের অনুরোধে তাঁদের পুরস্কারজয়ী গানের দু–এক চরণ গেয়েও শুনিয়েছেন।শেষ পরিবেশনা ছিল সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের পরিচালনায় বাঁদী-বান্দার রূপকথা।আলিবাবা ৪০ চোরের কাহিনি অবলম্বনে শামীম আরা নীপা,শিবলী মহম্মদ, আনিসুল ইসলাম হিরুসহ নৃত্যাঞ্চল ও সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের ৫০ জন শিল্পী এই জমকালো নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেন।শেষে মঞ্চে ঘোষিত হলো শিল্পী লাকী আখান্দের চিরপ্রস্থানের বার্তা।দাঁড়িয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন সবাই।পুরো অনুষ্ঠানটি তাঁকে উৎসর্গ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলেও দর্শকেরা কেউ যাচ্ছিলেন না হল ছেড়ে।ভালো লাগার আবেশে তাঁরা আবিষ্ট ছিলেন অনেকক্ষণ।বিশেষ করে পূর্ণিমা আর ফেরদৌসের সপ্রতিভ উপস্থাপনা,পুরস্কার নিতে ও দিতে মঞ্চে ওঠা তারকাদের স্বতঃস্ফূর্ত পরিবেশনা কিংবা মন্তব্যে আনন্দের ঘোর যেন কাটছিলই না।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!