‘সংলাপের বিপক্ষে’ মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির একাধিক নেতা


প্রকাশের সময় :১ নভেম্বর, ২০১৮ ৪:১০ : অপরাহ্ণ 718 Views

বান্দরবান অফিসঃ- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বানের প্রেক্ষিতে সংলাপে বসতে রাজি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কিন্তু দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া সংলাপের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে মত প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সংলাপের সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক এবং কারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- সে ব্যাপারেও তিনি জানেন না।

সূত্র বলছে, শুধু মির্জা আব্বাসই নয়, বিএনপির এমন অনেক নেতাই আছেন যারা দলের প্রধানকে কারাগারে রেখে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসতে চায় না।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় জোটের নেতাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সংলাপের প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় বিএনপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া জানতে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংলাপ বিষয়ে বিরোধী মনোভাব পোষণ করেন।

দলের প্রধানকে কারাগারে রেখে সংলাপে বসা রাজনৈতিক অধঃপতন বলে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস উদাহরণ টেনে বলেন, ’৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারারুদ্ধ ছিলেন, তখন আওয়ামী লীগ ছয় দফার প্রশ্নে আলোচনার টেবিলে বসেনি। এমনকি বঙ্গবন্ধুকে যখন প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কথা চলছিল তখনও বঙ্গবন্ধু আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পরই কেবল আওয়ামী লীগ গোলটেবিল বৈঠকে বসে। বঙ্গবন্ধু যেমন আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেতা, সেরকম খালেদা জিয়া বর্তমানে বিএনপির মূল নেতা। তাকে বাদ দিয়ে বিএনপি কীভাবে সংলাপ করবে এবং সে সংলাপ থেকে কী ফলাফল আসবে সে ব্যাপারে তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস।

বিএনপির এই নেতা জানিয়েছেন, সংলাপ বিষয়ে তার দল বিএনপি কী ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিনি তা জানেন না। তবে তিনি নিজে সংলাপে অংশ নেবেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, সংলাপে যাওয়ার বিষয়ে ঐক্যফ্রন্ট যে চিঠি আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে পাঠিয়েছে, সেই চিঠির ব্যাপারেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কোন রকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ ধরনের সংলাপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কে এবং কীভাবে নিলো সেটি একটি বড় প্রশ্ন বলে মনে করছেন তারা।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল দল হলেও জোটের আহ্বায়ক হিসেবে সরকারের সঙ্গে সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। আর সরকার যে এত দ্রুত এই প্রস্তাবে ইতিবাচকভাবে সাড়া দেবে- সে আশাও তারা করেনি বলে জানা গেছে। বরং তারা আশা করেছিলো যে, এই প্রস্তাব আওয়ামী লীগ নাকচ করে দিলে এই ইস্যুতে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে। কিন্তু সেরকম হয়নি।

২৯ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আবারও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর এই সময়টাতেই ঐক্যফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংলাপের ব্যাপারে চিঠি আদান-প্রদান এবং সংলাপ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। তাই বিএনপির একটি বড় অংশ মনে করছে, এই সংলাপ আর কিছুই নয়, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়ার একটি কৌশল মাত্র।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!