মহাসচিব কে? দলের সিন্ধান্তহীনতায় বিপাকে বিএনপি


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৭ মার্চ, ২০১৯ ১:১৬ : অপরাহ্ণ 621 Views

দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। তাদের মধ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে দ্বন্দ্ব বহু আগে থেকেই ছিল। তবে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও এতিমখানার দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দী থাকার পর থেকে এই দ্বন্দ্ব আরো জোরালো রূপ নেয়। এছাড়াও দলের দুই শীর্ষ নেতার অন্যজন তারেক রহমান বিভিন্ন মামলায় বিদেশে পলায়ন থাকায় দলের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতারা।
দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রমে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করতে পারছে না দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফখরুলের বিভিন্ন বক্তব্যের জেরে তাকে দালাল বলতেও দ্বিধাবোধ করেনি রিজভী। এদিকে ফখরুলের মহাসচিব পদ কেড়ে নিতে একাধিক পরিকল্পনা রিজভী হাতে নিয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও সম্প্রতি দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোতে মির্জা ফখরুলকে অবগত না করে রিজভী একাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। দলের অনেক নেতা কর্মীরাই প্রশ্ন তুলছেন বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং নেতৃত্ব নিয়ে। দলের সাংগঠনিক সংকটে যখন সবাই মর্মাহত তখন ফখরুল ও রিজভীর দ্বন্দ্ব দলে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। ইতিমধ্যে তাদের দ্বন্দ্বে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা বাড়ছেই। নেতাদের মধ্যে একটা ‌‘ড্যাম কেয়ার’ ভাব চলে এসেছে
এদিকে রুহুল কবীর রিজভী দীর্ঘ এক বছর ধরে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। মাঝেমধ্যে বাইরে বের হয়ে মিছিল-মিটিং করে আবার গন্তব্য বিএনপি কার্যালয়ে ফেরেন। কার্যালয়ে অবস্থানকালে তার একমাত্র কাজ দৈনিক একবেলা প্রেস কনফারেন্স করা। এই প্রেস কনফারেন্স করে প্রায়শই তিনি দলকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফোন করে প্রেস কনফারেন্স না করার অনুরোধ করেছেন বহুবার। রিজভীকে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ‘আমাদের অনুমতি ছাড়া প্রেস কনফারেন্স করবেন না। করলেও, কি বিষয় নিয়ে কথা বলবেন- সেটা আগে জানাবেন। সেটা মানেননি রিজভী।’
এরপর থেকেই প্রায় প্রতিটি সময়েই রিজভী সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় ফখরুলকে না জানিয়েই দলের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চলছে। টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটিতে ইতোমধ্যেই ভাঙনের রূপ নিয়েছে। দলটির তৃণমূল পর্যায় থেকে দলটির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যন্ত ইতোমধ্যে বেশকিছু নেতারা দল থেকে পদত্যাগ করেছে। দলের শীর্ষ নেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, আলী আসগর লবিসহ অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। শুধু তাই নয় বিএনপির অন্তর্কোন্দলের কারণে এখনো ধারাবাহিকভাবে চলছে দল থেকে পদত্যাগ। কারণ হিসেবে শমসের মবিন জানান, বিএনপি বর্তমানে জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে সরে গেছে। বিএনপিতে এখন জিয়াউর রহমানের কোনো আদর্শ নেই।
বিএনপির এই অন্তর্কোন্দলের কারণে এর ভয়াবহতা গিয়ে পড়েছে দলের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে দলটি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় শতাধিক নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানান, দলের মধ্যে অন্তোর্কোন্দলের সমাধান না হলে বিএনপি নামক এই দলটি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যেতে বেশি সময় লাগবে না।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!