শিরোনাম: পর্যটকের মৃত্যুঃ ট্যুর এক্সপার্ট এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে গ্রেফতার ইরান যদি আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যায় তাহলে পাল্টা হামলায় তেহরানকে জ্বালিয়ে দেয়া হবেঃ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করতে হবেঃ সাচিং প্রু জেরী কাতার রেডক্রস এর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরন করলো বান্দরবান রেডক্রিসেন্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বান্দরবানে পবিত্র ঈদুল আযহার ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত কুহালং হেডম্যান পাড়ায় নানা আয়োজনে মাসিক স্বাস্থ্য দিবস-২৫ পালিত বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন বান্দরবানে ভূমি মেলা-২০২৫ এর উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক

মধ্যরাত থেকে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরার উৎসব


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১ মে, ২০২১ ৮:০৯ : অপরাহ্ণ 325 Views

দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষ। নৌকা আর জাল নিয়ে প্রস্তুতিও সম্পন্ন। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরার উৎসবে মাতবেন জেলেরা। শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নদীতে মাছ ধরার দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা।জালে রূপালী ইলিশের ঝাঁক ধরা পড়বে এই আশায় বুক বেঁধেছেন জেলেরা।মৎস্য কর্মকর্তাদের দাবি, অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল হয়েছে। যার সুফল পাওয়া যাবে আগামীতে।মা ইলিশ সংরক্ষণ ও জাটকা রক্ষা কার্যক্রম সফল হওয়ায় আগামীতে দেশে ইলিশের উৎপাদন রেকর্ড ছাড়াবে বলে আশাবাদী হয়ে উঠছেন ইলিশ গবেষকরা।ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ইলিশ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় এই দুই মাস চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদী সীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এই সময়ে নদীতে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।

সদর উপজেলার হরিণা ফেরীঘাট, বহরিয়া, রনগোয়াল, পুরানবাজার, আনন্দ বাজার এলাকার জেলে পল্লীগুলো ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ ধরতে মুখিয়ে আছেন জেলেরা।

নিষেধাজ্ঞার অবসর সময়ে মাছ ধরার নৌকা মেরামত ও জাল সেলাই করে সময় কেটেছে তাদের। নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় জেলেদের মাঝে ফিরে আসে আনন্দঘন পরিবেশ।
চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দ বাজার এবং বিষ্ণপুর এলাকার জেলে রইস উদ্দিন ও মিজানুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকে নদীতে মাছ ধরা ছাড়া অন্য কাজ শিখি নাই। তাই নিষিদ্ধ সময়ে আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। নদীতে যেতে না পারায় আয়ের পথও বন্ধ ছিল। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। এই সময় বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে মাথায় ঋণের বোঝা আরো বেড়েছে। নিষেধাজ্ঞা মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবার নদীতে মাছ ধরতে পারব।

লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া এলাকার জেলে আবুল কাশেম ও আলী আকবর বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমরা নৌকা মেরামত ও জাল সেলাই করে কাটিয়েছি। এখন আমরা ইলিশ ধরতে তৈরি। মধ্যরাত থেকেই মেঘনায় নৌকা নিয়ে ছুটব ইলিশ ধরতে। ভাগ্যে মাছ থাকলে তা বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের ব্যয় বহন করতে পারব। নয়তো আমাদের দুঃখের সীমা থাকবে না।

তারা আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞা সময়ে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা পেয়েছি ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে। তা ছাড়া প্রকৃত জেলেরা নদীতে না নামলেও অনেক অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে নেমে নির্বিচারে জাটকা ধরেছে। এতে করে আগামীতে ইলিশ পাওয়া নিয়ে সঙ্কিত আমরা।

তাদের দাবি, আগামীতে নদীতে অভিযান দিলে প্রশাসন যেন ভালোভাবে তদারকি করে। এভাবে মাছ ধরলে অভিযান দিয়ে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, স্বল্প জনবল নিয়েও প্রসাশন নিষিদ্ধ সময়ে জাটকা রক্ষায় নিরলস কাজ করেছে। মৎস্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড দিনরাত পালাক্রমে নদীতে অভিযান চালিয়েছে। তারপরও কিছু অসাধু জেলে নদীতে জাটকা শিকার করেছে। তবে সর্বোপরি আমাদের এই অভিযান সফল হয়েছে বলে মনে করছি আমরা। এর সুফল আগামীতে পাওয়া যাবে।

আসাদুল বাকী বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন গত দুই মাসে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় মোট ৫৭৫ অভিযান চালানো হয়। এতে করে প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ৩৮ দশমিক ৬৬ মেট্রিক টন জাটকা মাছ জব্দ করা হয়। অভিযানে ২৯০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ৪ শতাধিক জেলেকে অর্থদণ্ড করা হয়।

তিনি বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে নিবন্ধিত ৫১ হাজার ১৯০ জেলে। এসব জেলেদের মধ্যে ৪০ হাজার ৫ জন জেলেকে নিষিদ্ধ সময়ে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁদপুর এর মুখ্য বৈজ্ঞানীক কর্মকর্তা ও প্রখ্যাত ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, গত বছর মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম ভালোভাবে করতে পারায় প্রচুর ইলিশ নদীতে ডিম ছেড়েছে। এতে করে এ বছর জাটকা উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছিল। যদিও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলেরা কিছু জাটকা নিধন করেছে। তবু পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে আমরা দেখেছি, এ বছর অনেক জাটকা আমরা রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছি। এতে করে দেশে ইলিশ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকবে।

আনিসুর রহমান বলেন, গত বছর দেশে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হলেও আশা করি এবছর সেই রেকর্ড ভেঙে পৌনে ৬ লাখ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হবে দেশে। আগামীতে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারলে ইলিশ উৎপাদনের ধারা আরো বৃদ্ধি পাবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!