

ঢাকাঃ-নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপিতে বিদ্রোহ হয়েছে।দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতার সংখ্যা ৫০ এর ওপর। সহায়ক সরকারের দাবি অর্জিত হোক না হোক,আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান তাঁরা।২০০১ এবং ২০০৬ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপির দুই শতাধিক প্রার্থী এখন নির্বাচনের মাঠে। দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঈদে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় কর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ঈদের পরপরই নির্বাচনী এলাকা সফর করেন।সেখানে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের জন্য আলাদা কমিটি গঠন করে এসেছেন।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশররফ হোসেনও তাঁর নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এসেছেন।দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে,অন্তত ১৭৫ জন সাবেক এমপি ঢাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রুপ আকারে বৈঠক করেছেন।এসব বৈঠকে, সবাই একটি বিষয়ে একমত হয়েছেন,তাহলো যেকোনো পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।এমনকি শেখ হাসিনার অধীনে হলেও বিএনপি নির্বাচনে যাবে।তাঁরা মনে করেন,২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বিএনপি যে ভুল করেছে,একই ভুল এবার আর করা যাবে না।বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘এবার নির্বাচন হলো বিএনপির অস্তীত্বের পরীক্ষা।এই পরীক্ষায় বিএনপিকে উত্তীর্ণ হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও চাইছে বিএনপি যেন নির্বাচনে না আসে।তাহলে তারা ফাঁকা মাঠে গোল করতে পারে।’ ওই নেতা মনে করেন, ‘এবার আওয়ামী লীগকে আর ২০১৪ এর মতো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।’ নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক বিএনপি নেতাদের অন্তত তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই তিনটি বৈঠকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়।এজন্য নেতৃবৃন্দ তারেক জিয়া ‘অপরিণামদর্শী’ সিদ্ধান্তকে দায়ী করেন।বৈঠকে বলা হয়,এবারও তারেক জিয়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে দলকে বিরত রাখতে চাইছেন।তাঁদের মতে,তারেক জিয়া দেশে নেই প্রায় নয় বছর।দেশে এখন আন্দোলনের কোনো বাস্তবতা নেই,তারেক জিয়া সম্ভবত লন্ডন থেকে তা বোঝেন না।ওইসব বৈঠকে এরকম অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে,এবার আন্দোলন ব্যর্থ হলে বিএনপির অস্তীত্বই থাকবে না।তার চেয়ে নির্বাচন করে প্রধান বিরোধী দল হলেও আবার দলকে চাঙ্গা করে ক্ষমতামুখী করা যাবে।তাই,বেগম জিয়া-তারেক জিয়া যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন,বিএনপির বড় অংশ যে নির্বাচনে যাবে,সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।