শিরোনাম: চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট বান্দরবানে আলেম সমাজের সংবাদ সম্মেলন বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে উদযাপিত হলো জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস জেলা প্রশাসক মেধাবৃত্তি,বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সেনা জোনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বান্দরবানে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী ও সুধী সমাবেশে দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তাঃ সুস্থ হয়ে ফিরছে ১১ বছরের জিংক থান ময় বম

ফের শুরু হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর যাত্রা


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ নভেম্বর, ২০২১ ৫:৪৬ : অপরাহ্ণ 345 Views

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ভাসানচর স্থানান্তর ফের শুরু হচ্ছে। এপ্রিলে বর্ষার বৈরী আবহাওয়ায় সমুদ্রের উত্তালতার কারণে বন্ধ থাকা রোহিঙ্গা স্থানান্তর বর্ষা শেষে আবারও শুরু করছে সরকার

এরই অংশ হিসেবে বুধবার (২৪ নভেম্বর) সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বাস রওনা হবার প্রস্তুতি চলছে। এখন থেকে আগামী বর্ষার বৈরী আবহাওয়া না আসা পর্যন্ত প্রতি মাসেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানচর যাত্রা চলমান থাকবে, এমনটি জানিয়েছে কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় সূত্র।

যাত্রার লক্ষ্যে পূর্বের মতো উখিয়া কলেজ মাঠে ট্রানজিট পয়েন্টে মঙ্গলবার দুপুর থেকে জড়ো হওয়া শুরু করে রোহিঙ্গারা। স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগের মতো যাত্রা করবেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় স্বেচ্ছাগামী প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচর পৌঁছে দালানের একেকটি ফ্ল্যাটে আবাসন গেড়েছে। ক্যাম্পে আশ্রয়ে থাকাদের মাঝ থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচর স্থানান্তর করার পরিকল্পনায় কাজ করছে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমশিনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্র জানায়, উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ এলাকা থেকে আগের মতো বাসগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। রোহিঙ্গা নেওয়ার যানবাহনগুলো এরইমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিন্তু, আগের মতো দুদিনের যাত্রা এবার হবে না। পুরো ৩৪ ক্যাম্প থেকেই রোহিঙ্গারা ট্রানজিট পয়েন্টে আসছে। অনেকে মঙ্গলবার বিকেল থেকে আসা শুরু করলেও বুধবার সকালেও আসবে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার। এ যাত্রার জন্য কয়েক ডজন বাস বাস, একাধিক কাভার্ডভ্যান ও প্রয়োজনীয় অন্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখন থেকে আগামী বর্ষার বৈরী আবহাওয়া না আসা পর্যন্ত প্রতি মাসেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানচর যাত্রা চলমান থাকবে।

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝিরা বলেন, আগের মতো ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা স্ব-স্ব ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ে নাম জমা দিয়েছে। ভাসানচরের পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা সম্পর্কে ব্রিফিং করার পর যারা যেতে রাজি হচ্ছে তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে ভাসানচর স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।

বলা হচ্ছে, আগের মতো তেমন সাড়া মিলছে না। ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা অনেকে বিরূপ প্রচারণা চালিয়েছে। সেখানে বন্দির মতো বসবাস করতে হয় উল্লেখ করে তারা প্রচার করেছে, চাইলেই উখিয়া-টেকনাফ ক্যাম্পের মতো সেখানে যখন-তখন কোথাও যাওয়া যায় না। উখিয়া-টেকনাফে থাকা কোনো স্বজন মারা গেলেও সহজে দেখতে আসতে পারবে না। এসব প্রচারের ফলে স্থানান্তরে আগ্রহী অনেক পরিবারও এখন কিছুটা চুপসে গেছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

আর উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয়শিবিরগুলো বেশিরভাগ পাহাড়ের ঢালুতে তৈরি। বর্ষার সময় পাহাড় ধসে ঘরবাড়ি বিলীন হয়, হতাহতের ঘটনা ঘটে। আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও বখাটের উৎপাত বেড়েছে। বেড়েছে খুন, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ, ধর্ষণ ও অরাজকতা। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দলের মধ্যে গোলাগুলিতে রোহিঙ্গার মৃত্যু ঘটছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাই শান্তিকামী রোহিঙ্গারা ঝুঁকি এড়াতে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছে, এমনটি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। এর ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পুরনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। পরবর্তীতে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে। ঘর তৈরির পর গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় স্বেচ্ছাগামী প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছে। রোজার পর সেখানে অবস্থানকারীদের জন্য উৎসবমুখর ভাবে ঈদের জামায়াত ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু যাযাবরের জীবন অতিবাহিত করা রোহিঙ্গাদের অনেকে ভাসানচরের সুখের জীবন ফেলে সেখান থেকেও পালাতে শুরু করে। রাতের আঁধারে ছোট নৌকায় নদী পার হতে গিয়ে ডুবে মরার ঘটনাও আছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!