এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: বান্দরবানে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের কথন’ শীর্ষক আলোচনা সভা মেধাবী শিক্ষার্থী ছাইনুমে মারমার পাশে দাঁড়লো পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ জুলাই পুর্নজাগরণঃ রোয়াংছড়িতে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বান্দরবানে মাছরাঙা টেলিভিশনের ১৪তম বর্ষপূর্তি উদযাপিত বান্দরবানে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনায় নিহত উক্যছাইং মার্মাকে বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন রোয়াংছড়িতে তরুণকে পাথর ছুড়ে মেরে হত্যাঃ লাশ খালে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ জুলাই পুনর্জাগরণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানঃ বান্দরবানে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

তিন বছরের গবেষণায় ফিরল বিলুপ্তপ্রায় কাকিলা মাছ


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৬ আগস্ট, ২০২১ ৯:৫৩ : অপরাহ্ণ 314 Views

দেহ সরু, ঠোঁট লম্বাটে এবং ধারালো দাঁতযুক্ত কাকিলা মাছ চেনে না এমন ভোজনরসিক বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। মানবদেহের জন্য উপকারী অণুপুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ এবং কাঁটা কম থাকায় সবার কাছে প্রিয় এই মাছ একসময় অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও বিরূপ জলবায়ুর প্রভাবের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে এর বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মাছটি এখন বিলুপ্তপ্রায়।

তবে সুখবর হলো, বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীদের তিন বছরের গবেষণায় ফিরছে বিলুপ্তপ্রায় এই মাছ। বিএফআরআইয়ের স্বাদুপানি উপকেন্দ্র, যশোরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কমকর্তা ড. মো. রবিউল আউয়াল হোসেন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কমকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এবং বৈজ্ঞানিক কমকর্তা শিশির কুমার দে ঐ গবেষণা পরিচালনা করেন। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানান, কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজনন বাংলাদেশে প্রথম এবং বিশ্বের কোথাও এই মাছের কৃত্রিম প্রজননের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এটি একটি বিলুপ্তপ্রায় মাছ। বাংলাদেশে যে জাতটি পাওয়া যায়, সেটি মিঠা পানির জাত। মাছটি বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে কাইকল্যা, কাইক্কা নামেই বেশি পরিচিত। বাংলাদেশ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ মাছ পাওয়া যায়। তবে রং ও আকারে কিছু পার্থক্য থাকে।

গবেষক দলের প্রধান ড. মো. রবিউল আউয়াল হোসেন জানান, কাকিলার দেহ লম্বা, সামান্য চাপা এবং প্রায় সিলিন্ডার আকৃতির। এগুলো লম্বায় ২৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার হয়। পরিণত পুরুষ মাছের মাথার শীর্ষে লাল চূড়া দেখতে পাওয়া যায়, যা থেকে সহজেই স্ত্রী ও পুরুষ মাছ আলাদা করা যায়। এছাড়া পুরুষ মাছের দেহ স্ত্রী মাছের তুলনায় সরু এবং আকারে একটু ছোট হয়। এটি শিকারি মাছ। মূলত ছোট মাছ খেয়ে থাকে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমান জলাশয়ে, বিশেষ করে নদীতে এবং বর্ষাকালে প্লাবিত অঞ্চলে প্রজনন করে থাকে। পরিণত মাছেরা ভাসমান জলজ উদ্ভিদ নেই এমন স্থানে বসবাস করলেও জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচে ও ভাসমান শেকড়ে এদের স্ত্রীরা ডিম পাড়ে।

গবেষক দলের সদস্য ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কমকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ী জেলাসংলগ্ন কুষ্টিয়ার পদ্মা নদী থেকে কাকিলা ব্রুড (মা-বাবা) মাছ সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে যশোরে এনে যশোরের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের পুকুরে ছাড়া হয়। পরে হ্যাচারিতে উত্পাদিত কার্পজাতীয় মাছের জীবিত পোনা এবং নানা জলাশয় থেকে সংগৃহীত জীবিত ছোট মাছ খাইয়ে পুকুরের আবদ্ধ পরিবেশে মাছকে অভ্যস্ত করা হয়। এর পরে চলতি বছরের মে মাস থেকে কৃত্রিম প্রজননের উদ্দেশ্যে উপকেন্দ্রের হ্যাচারিতে নির্দিষ্টসংখ্যক মা-বাবা মাছকে বিভিন্ন ডোজে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়। এভাবে কয়েকবার বিভিন্ন ডোজের ট্রায়াল দেওয়া হলেও মাছের প্রজননে সফলতা আসেনি। অবশেষে গতকাল সোমবার প্রজননকৃত মাছের ডিম থেকে পোনা বের হয় এবং কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা আসে। গবেষক দলের আরেক সদস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিশির কুমার দে বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম খাওয়ার উপযোগী কাকিলা মাছে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রোটিন, লিপিড ২ দশমিক ২৩ শতাংশ, ফসফরাস ২ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ ক্যালিসিয়াম রয়েছে, যা অন্যান্য ছোট মাছের তুলনায় অনেক বেশি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, দেশের বিলুপ্তপ্রায় ৬৪টি মাছের মধ্যে ৩০টি মাছের কৃত্রিম প্রজননে ইতিমধ্যে বিএফআরআই সফলতা লাভ করেছে। সফলতার ধারাবাহিকতায় ৩১তম মাছ হিসেবে কাকিলা মাছ যুক্ত হলো। পর্যায়ক্রমে সব বিপন্ন প্রজাতির মাছকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হবে, যাতে দেশের পত্যেকের খাবারের প্লেটে দেশীয় মাছ থাকে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
August 2025
MTWTFSS
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!