জনমনে প্রশ্ন কিশোর গ্যাং নেতৃত্ব দেয়া কে এই ছিনতাইকারী রকি ভাই?


ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশের সময় :১ এপ্রিল, ২০২৩ ৯:২১ : অপরাহ্ণ 630 Views

বান্দরবান এর ৪নং সুয়ালকের বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গত কিছুদিন ধরেই ছিনতাই এর স্বীকার হচ্ছিলো পথচারীরা এমন অভিযোগে ফেসবুকে তুলে ধরছিলেন।কিন্তু বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) এর ফেসবুকে প্রকাশিত একটি ঘটনা সিনেমার ছিনতাই দৃশ্যকেও হার মানিয়েছে।এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্বজিত দাশ লিখেন,সুয়ালক এর হলুদিয়া এলাকায় একটি দোকানে হালকা নাস্তা করতে গেলে হঠাৎ একটি ছেলে বাইক নিয়ে এসে আমাকে কোন কারন ছাড়াই মারাত্মক ভাবে আঘাত করে এবং আমার হাতে থাকা মোবাইল কেড়ে দৌড় মেরে বাইকে উঠে পালিয়ে যায়।আমিও দৌড়ে গিয়ে ছিনতাইকারীর হাত থেকে আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফেলি এবং ছিনতাইকারী আমার পেটে মারাত্মক ভাবে আঘাত করে।স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারী বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।পরে স্থানীয়রা জানিয়েছে এই ছিনতাইকারীর নাম রকি।বান্দরবান সদর এর ৪নং সুয়ালক তথা হলুদিয়া এলাকাস্থ বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এর স্থায়ী ক্যাম্পাস এলাকায় ছিনতাইকারীর কবলে পরা বিশ্বজিত দাশ জনপ্রিয় স্যোশাল মিডিয়া ফেসবুক একাউন্টে এভাবেই নিজের দুঃসহ এই ঘটনার বর্ননা তুলে ধরেন।তিনি আরও লিখেন,বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রাতের বেলায় কেউ বাইক নিয়ে আসলে তাদেরকেও নাকি জিম্মি করে টাকা,মোবাইল এবং অন্যান্য জিনিস হাতিয়ে নিয়ে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পালিয়ে যায় এই রকি বড়ুয়ার নেতৃত্বে থাকা সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসী ও মাদক চক্র।ফেসবুক স্ট্যাটাসে উঠে আসে,একসময় রাতে ছিনতাই করলেও সাম্প্রতিক সময়ে দিন দুপুরে প্রকাশ্যে ছিনতাই শুরু করেছে রকি ও তার দলের ছেলেরা।জানা যায়,এই ছিনতাই চক্রটি বিশ্বজিত দাশ কে হামলার ঘন্টাখানেক আগে একই এলাকায় এক নারী সাইকেলিস্ট এর মোবাইল ছিনতাই করে।এদিকে এতো বড় দুঃসাহসিক কর্মকান্ড সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসার পর ফেসবুকেও রকি বড়ুয়ার সরব উপস্থিতির দেখা মিলেছে।সিএইচটি টাইমস ডটকম এর নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা যায়,রকি বড়ুয়া নিজেই অনেক গুলো নোংরা এবং অশালীন মন্তব্য করেছে এই ঘটনার প্রতিবাদে স্ট্যাটাস পোস্ট করা বিশ্বজিত দাশ এর ফেসবুক প্রোফাইলে।যদিও এই ঘটনায় বান্দরবান সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভুগী বিশ্বজিৎ।

ফেসবুক সুত্র ধরে সেচ্ছাসেবক লীগের সাথে রকি বড়ুয়ার কথিত রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়েও তথ্য মিলেছে।খোজ নিয়ে জানা যায়,বান্দরবান জেলা সেচ্ছাসেবক লীগ বা এর আওতাভুক্ত কোনও ইউনিটের কর্মী নয় কিশোর গ্যাং এর হোতা রকি বড়ুয়া।পরে চট্রগ্রাম দক্ষিন জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ কে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানানো হলে সিএইচটি টাইমস ডটকমকে তিনি বলেন,এই রকি বড়ুয়া ফেসবুকে সেচ্ছাসেবক লীগের সাথে সম্পৃক্ত এমন তথ্য লিখে রাখলেও তাকে দলীয়ভাবে কোনও কমিটিতে রাখা হয়নি।ছিনতাইসহ অপকর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পুরো বিষয়টি চট্রগ্রাম দক্ষিন জেলা সেচ্ছাসেবক লীগ এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অবহিত করবেন বলেও মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন।বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গেলো মাসেও রাত ১০টায় কেরানীহাট থেকে বান্দরবানগামী মোটরসাইকেল আরোহীকে অস্ত্র দেখিয়ে সব কিছু ছিনিয়ে নেয়া হয়।পরে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি করে।যদিও এই এলাকাটি বহু বছর আগে থেকেই একটি ঝুকিপুর্ন এলাকা হিসেবে পরিচিত।এই এলাকায় নব্বই দশকে নিয়মিত ডাকাতের উৎপাত ছিলো।এমনই এক ঘটনায় মইন্যার টেক এলাকায় আলফারুক ইনস্টিউটের শিক্ষার্থী কমল ডলফিন চেয়ারকোচে ডাকাতি চলাকালে রাতের অন্ধকারে ডাকাতের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয়।এই ঘটনার পর রিতিমত পুলিশী পাহারায় দীর্ঘদিন ঢাকার বাসগুলো হলুদিয়া এলাকা পর্যন্ত পার করে দেয়া হতো।যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় ডাকাতের উৎপাত শুন্যের কোটায় পৌছেছে।হঠাৎ করে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাধারন মানুষকে তটস্থ করে দেয়া কিশোর গ্যাং হোতা ও ছিনতাই এবং মাদক সন্ত্রাসী কে এই রকি ভাই বিস্তারিত খোজ নিতে গিয়ে কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ মিলেছে।জানা যায়,রকি বড়ুয়ার বাবা রাজিব বড়ুয়া প্রকাশ রাজিব ডাকাত নিজেও এলাকায় চুরি,ডাকাতি,মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত।২ এপিবিএন এর অভিযানেও সাম্প্রতিককালে এই রাজিব বড়ুয়া আটক হয়।তার বিরুদ্ধেও রয়েছে অসংখ্য মামলা।তবে আইনের সুযোগ নিয়ে প্রতিবারই সে কারাগার থেকে বের হয়ে যায়।

সুয়ালক ও হলুদিয়া এলাকায় বসবাসরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলছেন,এই রকি ভাইয়ের উৎপাত এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।কখন কার গলায় ছুরি ধরে ঠিক নাই।মূলত মাদকের টাকা জোগাড় করতেই সে একটি কিশোর গ্যাং সৃষ্টি করে বান্দরবান জেলার নাগরিক না হয়েও সুয়ালক এর পরিবেশ নষ্ট করছে।প্রান্তিক লেক এলাকায় বেশকিছু ঘটনার জন্ম দিয়েছে কথিত এই রকি ভাই কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা।স্থানীয় সুত্রে আরও জানা যায়,গত কয়েকমাস ধরে নিয়মিত ছিনতাই এর ঘটনায় জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্যটন কেন্দ্র প্রান্তিক লেকে পর্যটক উপস্থিতি মারাত্বক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।এই রকি ভাই এর নেতৃত্বে থাকা কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীদের উৎপাতকেই পর্যটক হ্রাসের জন্য দায়ী করেছে স্থানীয়রা।দিনেদুপুরে পর্যটকের সাথে থাকা সবকিছু কেড়ে নিচ্ছে ছিনতাকারীরা।তবে এই সন্ত্রাসীর পেছনে প্রভাশালী কারো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা খতিয়ে দেখার আহবানও জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।একই সঙ্গে তাকে অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জোর দাবিও জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এদিকে ছিনতাইকারি ও কিশোর গ্যাং এর হোতা এই রকি বড়ুয়া ওরফে রকি ভাই কে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।পুলিশের বেশ কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
April 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!