প্রশ্নপত্র ফাঁস: গুজবে কান দিয়ে প্রতারিত হতে পারেন আপনিও!


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ৩:২৩ : অপরাহ্ণ 591 Views

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক প্রতারক চক্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গ্রুপ ও পেজ খুলে মাত্র ১০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিক্রির লোভনীয় অফার দেয়া হচ্ছে। প্রশ্নপত্র হাতে তুলে দেয়া হবে বলেও শতভাগ গ্যারান্টি দেয়া হচ্ছে। প্রতারক চক্রের গুজবে কান দিয়ে প্রতারিত হতে পারেন আপনিও! ফলে প্রতারণার শিকার হয়ে জীবনকে হুমকির মুখে তুলে না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজবের সঙ্গে শিক্ষার্থী জড়িত থাকলে তার দায়ে সাজা হতে পারে অভিভাবকেরও!
এমন প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিটি শাখায় নজরদারি করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন সাইটে দেখা গেছে, ফেসবুক গ্রুপ, ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ এবং হোয়াটস অ্যাপে ১০টির বেশি এমন গ্রুপ রয়েছে যারা একের পর এক প্রশ্নপত্র সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে আছে- এসএসসি অল বোর্ড কোশ্চেন আউট ২০১৯, এসএসসি কোশ্চেন আউট-২০১৯, এসএসসি কোশ্চেন সল্যুশন, জেএসসি-এসএসসি-এইচএসসি কোশ্চেন আউট, ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ এসএসসি ব্যাচ ২০১৯, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ এসএসসি ২০১৯ কিউ গ্রুপ, এসএসসি মিশন ২০১৯ সহ বেশ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে।
এসব গ্রুপে সক্রিয় কয়েকটি ফেসবুক প্রোফাইলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ফয়সাল আহমেদ পাটোয়ারি। এ ছাড়া আরিয়ান খান, জাহিদুল আলম সরকার, জুয়েল আহমেদ, জীবন আহমেদ, নাহিদ আলী, এমএক্স মুহিতসহ অনেকেই। তবে এসব আইডির নামগুলো পরিবর্তন করতেও দেখা গেছে। ফেসবুকে তাদের পোস্ট করা বিজ্ঞাপনগুলো ঘেঁটে দেখা যায়, তাদের প্রলোভনগুলো প্রায়ই একই রকম। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলা হচ্ছে- ‘এসএসসি ২০১৯ এর প্রশ্ন দিবো, কোন অ্যাডভান্স লাগবে না। ১০০ ভাগ কমনের পর টাকা দিবা। প্রতি প্রশ্নের টাকা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দিতে হবে ৩০০ টাকা করে। তাই প্রশ্ন নিতে চাইলে জলদি ইনবক্স করো।’
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের যত প্রোলভনই আসুক এরসবই ভুয়া বলে উল্লেখ করেছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক। তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন সুযোগ নেই। খুবই কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া এবার প্রশ্নফাঁস এবং নকল রোধে কঠোর নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, এবার তার চেয়েও ভিন্ন কিছু কৌশল আমরা নিয়েছি। এবার প্রশ্নপত্রের সেট অনেক বেশি। তবে কত সেট হবে তা আগে থেকেই জানানো যাবে না। প্রয়োজনে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।’
অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন থেকে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র পোস্ট ও গুজব রটনাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সাইবার ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে ১০টি স্পেয়ার হিট টিমও গঠন করা হয়েছে।’
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ডিভাইস দিয়ে নকল রোধে পরীক্ষা কেন্দ্রে বসানো হবে ম্যাগনেট, অপটিক ও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর। ফলে কোনভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুযোগ নাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যেসব গ্রুপে যারা প্রশ্ন সরবরাহ করবে বলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, সেগুলো ভুয়া।
এদিকে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারের খামে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে বলে গত কয়েকদিন আগেই ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, ‘প্রশ্নফাঁস রোধে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারের খামে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। খাম কেউ আগে খুললে ধরা পড়ে যাবে।’

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!