এই মাত্র পাওয়া :

লামায় বৈসাবী উৎসব ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি


প্রকাশের সময় :১১ এপ্রিল, ২০১৮ ৭:৫৩ : অপরাহ্ণ 1167 Views

বান্দরবান অফিসঃ-উপজাতি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব “বৈসাবি” কে ঘিরে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে বান্দরবানের লামা উপজেলার নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়।পাহাড়ি গ্রাম গুলোতে এখন সাজ-সাজ রব।পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরের বরণকে সামনে রেখে প্রত্যান্ত পাহাড়ি গ্রামগুলোতে চলছে নানা প্রস্তুতি।হাট-বাজারগুলোতে পড়েছে কেনা-কাটার ধুম।এদিকে সাংগ্রাই উৎসবকে সামনে রেখে হোটেল-মোটেলে আগাম বুকিং হয়ে গেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ,সরকারী উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও নৃ-গোষ্ঠী নেতৃবৃন্দরা পৃথক বার্তায় সুখ, সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তাসমূহ নিজস্ব সামাজিক ঐতিহ্য নিয়ে বৈসাবি উৎসব পালন করে থাকে।ত্রিপুরা সম্প্রদায় এই উৎসবকে বৈসু,মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই,বম সম্প্রদায় চাংক্রান,খেয়াং সম্প্রদায় সাংগ্রান,খুমী সম্প্রদায় সাংগ্রায়,তংচঙ্গ্যা সম্প্রদায় বিষু ও চাকমারা বিজু নামে এই উৎসবটি আদিকাল থেকে পালন করে আসছে।এই উৎসবকে সমষ্টিগতভাবে বৈসাবি বলা হয়।মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন এই উৎসবটিকে বিভিন্ন খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,পানি খেলা ও বলি খেলা মাধ্যমে মুখরিত করে তোলে।তিন দিনের সাংগ্রাই উৎসবে বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা অংশ গ্রহণ করে থাকে।
নতুন আশা আজ নব-প্রভাতে,শিশু-নারীসহ সকলে থাকুক শান্তিতে,বন্ধ হোক যত সহিংসতা,মৈত্রীময় স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় আসুক শুভ্রতা,এইসব শান্তির বাণী সামনে রেখে লামা সহ বান্দরবানের ৭টি উপজেলার লোকজন মেতে উঠেছে বৈ-সা-বি উৎসবে।১২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এ উৎসব।মারমাদের সাংগ্রাই মূল আকর্ষন জলকেলি বা মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসব।সকল পাপাচার ও গ্লানি ধুয়ে মুছে নিতে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটানোর উৎসবে মেতে উঠেন এসময়।এই উৎসব শুধু পাহাড়িরা নয় বাঙালিরাও নানা ভাবে পালন করে থাকেন।সাংগ্রাই উৎসবকে দেখার জন্য পার্বত্য জেলা ও উপজেলা গুলোতে বহু দেশি বিদেশি পর্যটকের আগমন ঘটে।এদিকে লামা উপজেলার প্রধান পাহাড়ি জাতিস্বত্বা মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে ৩ দিন ব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।এর মধ্যে রয়েছে সমবেত প্রার্থনা,জলকেলি (পানি খেলা),পিঠা তৈরি,বৌদ্ধ মূর্তি স্লান,হাজারো প্রদীপ প্রজ্বলন,বয়স্ক পূজা এবং পাহাড়ি নিজস্ব ঐতিহ্যবাসী নৃত্য-গান নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।আগামী ১৩ এপ্রিল বিশাল র‌্যালি ও ১৫ এপ্রিল বিকালে লামা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার মাঠে ও সাবেক বিলছড়ি বৌদ্ধ বিহারে পানি বর্ষণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসমূহ পালন করা হবে।
বৈসাবি উৎসবকে সামনে রেখে লামা উপজেলার হাট-বাজারে কেনা-কাটা বেড়েছে।বিপনী বিতান গুলোতে এখন পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙ্গালী তরুণীদেরও উপচে পড়া ভিড়। লামায় এবার উৎসব মখুর পরিবেশে সাংগ্রাই পালিত হবে।লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি জানিয়েছেন, বাংলা বর্ষবরণ ও সাংগ্রাই উৎযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পহেলা বৈশাখের সকল উৎসব পালনে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রশাসন।প্রসঙ্গত,১৯৮৫ সাল থেকে বান্দরবান সহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসব পালন করে আসছে।যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বৈসাবি উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি ও ঐক্য আরো সু-দৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা সকলের।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2025
MTWTFSS
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর