লামায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর ওয়াস ব্লক নির্মাণ কাজে চরম অনিয়ম


প্রকাশের সময় :১৭ এপ্রিল, ২০১৮ ৪:৪৯ : অপরাহ্ণ 759 Views

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (লামা) বান্দরবানঃ-বান্দরবানের লামায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬টি ওয়াস ব্লক নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ব্লক নির্মাণে নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী (ইট, কংকর, রড) ব্যবহার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর ইঞ্জিনিয়ারের অনুপস্থিতে বেইজ, পিলার ও ছাদ ঢালাই, নকশা মোতাবেক কাজ না করা, নির্মাণ কাজে অপরিস্কার বালু ব্যবহার (ছাকুনি ব্যবহার না করা) ও সময়মত কিউরিং (পানি দিয়ে ভেজানো) করা হয়না বলে জানান, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্কুল শিক্ষকরা।সরেজমিনে লাইনঝিরি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লক নির্মাণ কাজে গেলে উক্ত অনিয়ম গুলো পরিলক্ষিত হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে নিম্নমানের কাজ করে এবং তড়িঘড়ি করে নির্মান কাজ শেষ করছে বলে জানায় স্থানীয়রা।জানা গেছে, লামা উপজেলায় সরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬টি আধুনিক মানের ওয়াস ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। স্কুল গুলো হল,লাইনঝিরি,মেরাখোলা,রুপসীপাড়া, গজালিয়া হেডম্যান পাড়া,ফাইতং হেডম্যান পাড়া ও সরই ডলুছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।এর মধ্যে ৫টি ওয়াস ব্লক কাজের কার্যাদেশ পায় মেসার্স মিলন কনসট্রাকসন নামে বান্দরবানের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে কাজগুলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে শেয়ারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অদিধপ্তরের সহকারী উপ-প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান করছেন বলে লোক মুখে শুনা যায়।এতে করে কোনরকম নয়ছয় কাজ শেষ করে বিলের অর্থ উত্তোলন করার জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে।একটি ওয়াস ব্লকের মোট বরাদ্দ দেয়া হয় ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।২৬ ফুট দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ ১৩ ফুটের মোট ২৯০ স্কয়ার ফুটের তৈরী আধুনিক ওয়াস ব্লকে উন্নতমানের ২টি কমোট, ৪টি সাধারণ প্যান,২টি ব্যাসিন,২টি প্রসাবখানা,২টি ফুটওয়াস, সাবমারসেবল পাম্পসহ পানির ট্যাংকি এবং ভেতরে পুরোটাই উন্নতমানের টাইলসযুক্ত এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি থাকার কথা।সংখ্যায় মিল থাকলেও মালামালের কোয়ালিটি খুবই নি¤œমানের।লাইনঝিরি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাজেদা ইয়াছমিন বলেন,ওয়াস ব্লকের কাজে ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার কখনো উপস্থিত থাকে না।মিস্ত্রি ও লেবাররা তাদের মন মত কাজ করছে।ঠিকমত পানি দেয়না।নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে।আমরা বাধা দিলেও শুনেনা।কাজের কোন ধরনের তথ্য আমাদের দেয়া হয়না।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো.নুর জামাল বলেন,কাজের শুরু থেকে চরম অনিয়ন হচ্ছে।বারবার বলার পরেও তারা কথা শুনছেনা।তাই বাধ্য হয়ে আজ মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) কাজ বন্ধ করে দিতে বলেছি।সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আসার পর কাজ করতে বলা হয়েছে।
ওয়াস ব্লক নির্মাণে তদারকীর দায়িত্বে থাকা লামা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মেকানিক নুরুল আমিন বলেন,আমাদের কাছে কোন প্রকার ডিজাইন,ম্যাপ ও কার্যাদেশ নেই।আমি শুধু ঘুরে দেখে যাই।কাজ সঠিক হচ্ছে কিনা আপনি কিভাবে বুঝবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,সেটা আমাদের সহকারী উপ-প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান স্যার জানেন।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিলন কনসট্রাকসনের কর্ণধার মিলন বাবু বলেন,আমি ব্যস্ত তাই সবসময় যেতে পারিনা।ঢালাই কাজে বালু ছাকতে হয়না।এব্যাপারে লামা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী উপ-প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযাগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন,বিষয়টি আমি জানতাম না।আমি সংশ্লিষ্টদের থেকে জেনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর