আজ প্রায় ২০-২২ দিন মতন আমরা নিজ নিজ গৃহে বন্দী জীবন যাপন করছি। বিশ্বের এই ক্রান্তিকালে আমি বা আমরা একটু সচেতন হলে বাঁচবে পরিবার, বাঁচবে সমাজ, বাঁচবে দেশ ও জাতি। এই বন্দি জীবনে খানিকটা ছন্দপতন ঘটলে আপনাকে থাকতে হবে অধিক সচেতন। আমরা ইতোমধ্যে জানি কোভিড- ১৯ বা করোনাভাইরাস ঠাণ্ডাজনিত রোগ। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাই সচেতন জীবনযাপন
মানুষ কীভাবে সুস্থ থাকতে পারে এবং কোন উপায়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে সেটা নিয়ে নানামুখী গবেষণা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। পুষ্টিবিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকগণ বলছেন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী নাহলে অল্পতে অসুস্থ মানুষ খুবই সহজে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং রোগের আক্রমণ ও জোরালো হবে। এক্ষেত্রে খাদ্যভ্যাস এবং জীবনযাপন পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষ সচরাচর যে ধরনের খাবার গুলো খাচ্ছে তা হলো শর্করা, প্রোটিন এবং ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার। যেহেতু এই সময়টাতে ঘর থেকে বের হবার কোনও উপায় নেই, নেই চলাচল করবার মতো কোনও জায়গা যা কিনা আপনার ক্যালোরি খরচ করবে। তাই বেছে নিতে হবে ক্যালরিযুক্ত খাবার কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে সে ধরনের খাদ্য।
মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে ভিটামিন এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এর উপর। দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার গুলো, পুষ্টি বিজ্ঞানের ভাষায় প্রোবায়োটিক হিসেবে পরিচিত, এইসময় দুধ খাওয়া বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
ভিটামিন ডি- এর জন্য দিনের কিছুটা সময় রোদ লাগাতে হবে এটা খাদ্যভ্যাস এবং জীবনাচরণের সাথে সম্পৃক্ত। যার শরীর গঠন ভালো এবং যেখানে কোনো ঘাটতি থাকবে না তার প্রতিরোধ ক্ষমতা ততই বেশি।
ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে। এই ভিটামিনগুলো পানির সঙ্গে মিশে যায় এরা শরীরের জমা থাকে না প্রতিদিনই এই ভিটামিনগুলো গ্রহণ করতে হবে এই ভিটামিনগুলো পানিতে মিশে যাওয়ায় প্রস্রাবের সঙ্গে অথবা ঘামের সাথে আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। শরীরের নার্ভের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এই দুটো ভিটামিন শরীরের বিপাকীয় কারণে যেসব সেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভিটামিন সি সেগুলোকে সারিয়ে তোলে। ভিটামিন সি পাবেন ফল ও সবুজ শাক-সবজির মধ্যে।
অতিরিক্ত চা-কফি পান করা শরীরের জন্য কখনওই ভালো নয় এর কোন কোন উপাদান শরীরের জন্য ভালো আবার খারাপ রয়েছে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন আপনার লো প্রেসার তৈরি করতে পারে। তাই পরিমিত চা-কফি খেতে পারেন।
ভাত বা শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খাবেন না। শর্করা দেহে ফ্যাট বা চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে শরীর শারীরিক পরিশ্রম জড়িত ,একজন মানুষ যখন শারীরিক পরিশ্রম করে তখন তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কারণ প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চলাচলের কারণে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। শরীরের সব স্থানে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাওয়ায় অক্সিজেন সব জায়গায় পৌঁছায় এবং কোষগুলোতে শক্তি উৎপাদন করে থাকে। তাই সামান্য হলেও ব্যায়াম করুন। পরিমিত খাদ্য ও নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন আপনাকে রাখবে ফিট।
লেখক-পুষ্টিবিদ।