বিএনপির রাজনীতি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছে খালেদা-তারেক


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ৪:১৩ : অপরাহ্ণ 837 Views

বিএনপির রাজনীতি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছে খালেদা-তারেক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কঠিন দুঃসময়ে বিএনপি। যোগ্য নেতৃত্ব ও সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে ছন্নছাড়া দলটি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার স্বেচ্ছাচারিতায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসে অবশেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দলটি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আগেই নেতৃত্ব হারায় বিএনপি। জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ১০ বছর কারাদণ্ডে দলের চেয়ারপার্সন ও ভাইস চেয়ারম্যানের পদ রুদ্ধ হয় খালেদা ও তারেকের। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় ঘোষণার ১০ দিন আগে দলীয় গঠনতন্ত্রের ৭ নম্বর ধারা সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিলেও ৭ নং ধারা নিয়ে সংশোধিত অংশগ্রহণ না করতে ৩০ অক্টোবর বুধবার ইসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে খালেদা এবং তারেক দুজনই দলের দায়িত্ব হারানোর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপির সকল সিনিয়র নেতাই এর আগে দলে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দলের মধ্যে যথোপযুক্ত ‘কর্তৃত্ব’ নেই। আন্দোলনের সময় সারাদেশের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা পর্যায়ে বিএনপির কর্মীরা রাজপথ দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ঢাকায় রাজপথে নামার ক্ষেত্রে দলের ব্যর্থতার চিত্র কর্মীদের চাঙ্গা করার চেয়ে হতাশ করেছে বেশি।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা ও তারেকের নেতিবাচক মনোভাবের পরও মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি। নেতৃত্বহীন অগোছালো দল নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের ছায়াতলে এসে নির্বাচনে আসে। একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের নেতৃত্ব পূরণ করতে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানকে ভাবা হলেও জিয়া পরিবারের কেউ-ই এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তারেক জিয়ার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে দলের নেতৃত্বের জন্য দল থেকে প্রস্তাব করা হলেও লন্ডনে তার পাসপোর্ট সারেন্ডার করার কারণে সে পথও বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে কথিত ঐক্যফ্রন্টে উজ্জীবিত বিএনপি। ড. কামাল হোসেনের নাম এখন সামনের সারিতে। গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট, কৃষক-শ্রমিক লীগে ‘হ য ব র ল’ অবস্থা বিএনপির। যে যার মতো দল পরিচালনা করছে। কোনো ছন্দ নেই দলে। রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়া কিছু ব্যক্তি বিএনপির চালিকা শক্তি হতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। ড. কামাল হোসেন মূল নেতা হলেও নির্বাচন পরবর্তী কতোদিন দেশে থাকেন সেটিই দেখার বিষয়। তাছাড়া ড. কামাল হোসেনের বয়স বিবেচনায় কতোদিন এগোতে পারবে সেটিও মুখ্য বিষয়। আ স ম রব, কাদের সিদ্দিকী, মান্নাদের দলেই বিএনপির বিলুপ্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরাও দলের সংস্কারের পক্ষে। খালেদা তারেকের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় দলীয় ভাবমূর্তি অনেকটা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন দলের একাধিক সিনিয়র নেতা। মনোনয়ন বাণিজ্যে তারেক রহমানের ব্যাপক অর্থ লোভ দলের অনেক ত্যাগী নেতাদের হতাশ করে। দলের তৃণমূল নেতারা তারেক রহমানের চেয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামকেই বেশি নিবেদিত বলে মনে করে। বেগম খালেদা জিয়া তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে যেমন মরিয়া ছিলেন তেমনি তারেক রহমান খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করার জন্য মরিয়া। দল ও দলের নেতা কর্মীদের নিয়ে ভাবা একমাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেই বিএনপির কাণ্ডারি মনে করেন দলের অনেক নেতাকর্মী।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!