বিএনপির জামায়াতপ্রেমে টালমাটাল দল


প্রকাশের সময় :২৯ নভেম্বর, ২০১৮ ৪:১৪ : অপরাহ্ণ 544 Views

নিউজ ডেস্কঃ-জামায়াতপ্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে বিএনপি। একসময় নিজেদের ‘মুক্তিযোদ্ধার প্রতিষ্ঠিত দল’ হিসেবে জাহির করলেও এখন সেই বেলুনও চুপসে গিয়েছে। বিভিন্ন নথিপত্র বা বইয়ের লেখায় এটি এখন স্পষ্ট যে, জিয়া পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবেই মুক্তিযুদ্ধে আসেন। কোন সম্মুখযুদ্ধেও অংশ নেননি তিনি, বরং ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আদলে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তাই দেশের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ‘বাংলার দ্বিতীয় মীরজাফর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বারংবার।

নিজেদের শাসনামলগুলোতে বিএনপি জাতির সামনে ভুয়া ইতিহাস তুলে ধরেছিলো। ইতিহাসের খলনায়ক জিয়াকে মহান করে তুলতে সব আয়োজন সম্পন্ন করে তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে জিয়ার নামটি হয়ে উঠেছে বিশ্বাসঘাতকতা, ষড়যন্ত্রের মূর্ত প্রতীক।

মুখোশ খুলে যাবার পরে বিএনপিও তাই রাখঢাক না রেখেই দেশদ্রোহী জামায়াতের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি খালেদা জিয়া শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চেয়েছেন প্রকাশ্যে। এ ঘটনা শহীদ পরিবার ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের বুকে যেন মর্টার শেল হয়ে বিঁধেছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্নাও কি কষ্ট পায়নি?

তবে জামায়াতকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ নামটির সাথেই চিরশত্রুতা স্থাপন করেছে বিএনপি। খালেদা-তারেক গং বিভিন্ন সময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার দুঃসাহসও দেখিয়েছেন। ২০০১-০৬ এর শাসনামলে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা-লাঞ্চিত করার কলঙ্ক দলটি বয়ে বেড়াচ্ছে আজও।

তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে আরো খেলা দেখাচ্ছে বিএনপি। দলের অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাদের করা হচ্ছে মনোনয়নবঞ্চিত।

মূলত জামায়াত ও পাকিস্তানের প্রেসক্রিপশনেই বিএনপির এ সিদ্ধান্ত। মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাদের স্থলে মনোনয়ন পাচ্ছেন বিতর্কিত, দেশবিরোধী জামায়াত নেতারা। কেন্দ্রের এরকম সিদ্ধান্তে ক্ষোভের অন্ত নেই মুক্তিযোদ্ধা দলে।

সার্বিক বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে আলাপ আলোচনার প্রেক্ষিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় তারা অচিরেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা দেশবাসীকে অবহিত করবেন।

এ বিষয়ে আক্ষেপ করে রাঙামাটি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় রাঙামাটিতে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকারী লেঃ কর্নেল (অব) মণীষ দেওয়ান তার কষ্টের কথা ফেসবুকের স্ট্যাটাসে বিবৃত করেন। তিনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও একজন প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও দেশবিরোধীদের নিকট মনোনয়ন যুদ্ধে পরাজিত হওয়ায় হতাশা ব্যাক্ত করেই স্ট্যাটাসটি দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী জানান,আমরা চরম ক্ষুব্ধ, হতবাক। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সাথে দলের এ অযাচিত সম্পর্কের চরম মূল্য দিতে হবে। আমরা জনগণের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। জনগনের কাছে মুখ দেখানোর উপায় থাকছে না। নিজেদের প্রতারিত ও বোঝা মনে হচ্ছে’।

অপর এক নেতা জানান, ‘বিএনপি দাবি করে তারা মুক্তিযোদ্ধার দল। অথচ তারা সরাসরি রাজাকারের তোষণ করে। জামায়াত নেতারা তারেককে টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে নিচ্ছেন। যে দলে রাজকারেরা মনোনয়ন পায়, সে দল নিয়ে আমি আশাবাদী হতে পারি না। অনেক সহ্য করেছি। রাজাকারদের মনোনয়ন দিয়ে আমাদের চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে’।

তারা অনেকেই দলত্যাগের কথা ভাবছেন বলেও জানান।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
July 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!