শিরোনাম: বর্ণিল আয়োজনে পালিত হলো ভিক্টরি টাইগার্স (৫-ইবি) এর ৫৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত বান্দরবানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল জেলা মডেল মসজিদ স্থাপনে প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করলেন ধর্ম উপদেষ্টা লামায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও জরিমানা রোয়াংছড়িতে প্রবারণা পূর্ণিমায় সেনাবাহিনীর আর্থিক অনুদান ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বান্দরবানে সমাপ্ত হলো দুইদিনের প্রবারণা উৎসব নাইক্ষ্যংছড়িতে ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত প্রবারনা পূর্নিমা ও কঠিন চীবর দান উপলক্ষে স্থানীয় খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকদের মতবিনিময় ও শুভেচ্ছা উপহার বিতরন

সাংবাদিকের বয়ান, ‘যেন মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এলাম’


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ এপ্রিল, ২০২০ ৯:৪৪ : অপরাহ্ণ 440 Views

‘প্রথম যখন করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল, খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার এমনিতেই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে। ফলে ভয়টা ছিল বেশি। তারপর আবার স্ত্রী ও দুই কন্যার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি না থাকলে তাদের কি হবে? তারাও এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলো কিনা? এসব চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেতো। কিন্তু আল্লাহ সহায় হয়েছে। আমি, আমার স্ত্রী ও এক কন্যা করোনাকে পরাজিত করে বাসায় ফিরেছি। আরেক কন্যার করোনা নেগেটিভ এসেছিল আগেই। হাসপাতালের দিনগুলো খুব শঙ্কার মধ্য দিয়ে কাটিয়েছি। প্রতিদিনই খবরে মৃত্যুর খবর দেখছিলাম। বাসায় এসে মনে হলো যেন সত্যিই মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এলাম।’ —কথাগুলো বলছিলেন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বুধবার (২২ এপ্রিল) বাসায় ফেরা সাংবাদিক এমদাদুল হক খান। স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তানসহ তিনি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যরা পৃথকভাবে আরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা শুরু করেছেন সাংবাদিকতার পাশাপাশি টিভি নাটকের এই নির্মাতা।
এমদাদুল হক জানান, গত মাসের ২৮ মার্চ থেকে তিনি জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন। পরিচিত এক চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেয়েছেন। কিন্তু জ্বর ছাড়ছিল না। ওই চিকিৎসকের পরামর্শে করোনা টেস্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আইইডিসিআর-এর হটলাইনে অসংখ্যবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি। এর মধ্যেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা ও এক্সরে করেন। চিকিৎসক মৌসুমি রোগ বলে কিছু ওষুধ দেন। পরে আইইডিসিআর-এ কর্মরত পরিচিত আরেক চিকিৎসকের ডা. সাদিয়ার পরামর্শে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে করোনার টেস্টের নমুনা দিয়ে আসেন। ১০ এপ্রিল ঢাকার সিভিল সার্জন অফিস থেকে একজন ফোন করে করোনা পজিটিভ বলে জানান। এর কিছুক্ষণ পরেই শাজাহানপুর থানা থেকে ফোন করে বাসার ঠিকানা নেয়। পুলিশ এসে বাসা লকডাউন করে দিয়ে যায়।

এমদাদুল হক খান বলেন, করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরে প্রথমে আমি মুষড়ে পড়ি। চোখের সামনে যেন সব স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসছিল, ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে আসছিল। কিন্তু আমার সাংবাদিক সহকর্মী, ডিরেক্টর গিল্ডের সহকর্মীরা আমাকে ফোন করে সাহস যোগায়। তাদের সহযোগিতায় দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে আমি ওইদিন রাতেই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হই।

বাংলাদেশের খবর পত্রিকার এই সাংবাদিক জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার স্ত্রী রেখা খানম ও দুই কন্যা সন্তান সুস্মিতা খান অ্যানি এবং রোবায়দা খান এশার করোনা পরীক্ষা করা হয়। এতে তার স্ত্রী ও বড় কন্যার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তারা তিনজন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন।

এমদাদ জানান, করোনা নেগেটিভ আসায় শ্যালকের মাধ্যমে ছোট মেয়েকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মালিবাগের ভাড়া বাসায় ঢুকতে প্রতিবেশীরা প্রথমে বাঁধা দেন। এতে আরও দুশ্চিন্তা শুরু হয় তার। পরে প্রতিবেশীদের অনেক অনুনয়-বিনয় করলে শ্যালক ও ছোট মেয়ে বাসায় ঢুকতে পারে। এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন দিনে একাধিকবার করে গরম পানির বাষ্প নেওয়া ও অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য দুধ-ডিম-ফল বেশি বেশি খেতে থাকেন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদ বলেন, আমার সবসময় মনে হয়েছে যেভাবেই হোক আমাকে বাঁচতে হবে। এজন্য আমি চিকিৎসকের পরামর্শ যথাযথভাবে পালন করেছি। ওষুধ খেয়ে ও ব্যায়াম করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। পরবর্তীতে আর হতাশাকে গ্রাস করতে দেইনি। মনকে উৎফুল্ল রাখার চেষ্টা করেছি। পরিচিতরা সবাই আমাকে ফোন করে সাহস যুগিয়েছেন।

কার দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন, এ বিষয়ে ধারণা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা নিয়ে রিপোর্টিং করতে তিনি কয়েকটি বস্তি ও গার্মেন্টস কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলেছিলেন। এছাড়া আরেক সাংবাদিক সহকর্মীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন, যিনি করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন। এদের কারো থেকে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

করোনা আক্রান্তদের উদ্দেশে এমদাদ বলেন, করোনা পজিটিভ হলেই ভেঙে পড়বেন না। মনোবল রাখুন। অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য ফলমূল ও ডিম দুধ খাবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। তাহলেই করোনাকে জয় করতে পারবেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!