এই মাত্র পাওয়া :

শিরোনাম: আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বান্দরবানে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ বান্দরবান বাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বিএনকেএস এর উদ্যোগে টেকনাফের ক্যাম্প-২২ এ শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্ণিল আয়োজনে স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপিত ঢাকায় পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ বান্দরবান সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উদযাপিত বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রকল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

সাংবাদিকের বয়ান, ‘যেন মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এলাম’


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ এপ্রিল, ২০২০ ৯:৪৪ : অপরাহ্ণ 572 Views

‘প্রথম যখন করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল, খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার এমনিতেই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে। ফলে ভয়টা ছিল বেশি। তারপর আবার স্ত্রী ও দুই কন্যার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি না থাকলে তাদের কি হবে? তারাও এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলো কিনা? এসব চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেতো। কিন্তু আল্লাহ সহায় হয়েছে। আমি, আমার স্ত্রী ও এক কন্যা করোনাকে পরাজিত করে বাসায় ফিরেছি। আরেক কন্যার করোনা নেগেটিভ এসেছিল আগেই। হাসপাতালের দিনগুলো খুব শঙ্কার মধ্য দিয়ে কাটিয়েছি। প্রতিদিনই খবরে মৃত্যুর খবর দেখছিলাম। বাসায় এসে মনে হলো যেন সত্যিই মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এলাম।’ —কথাগুলো বলছিলেন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বুধবার (২২ এপ্রিল) বাসায় ফেরা সাংবাদিক এমদাদুল হক খান। স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তানসহ তিনি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যরা পৃথকভাবে আরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা শুরু করেছেন সাংবাদিকতার পাশাপাশি টিভি নাটকের এই নির্মাতা।
এমদাদুল হক জানান, গত মাসের ২৮ মার্চ থেকে তিনি জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন। পরিচিত এক চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেয়েছেন। কিন্তু জ্বর ছাড়ছিল না। ওই চিকিৎসকের পরামর্শে করোনা টেস্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আইইডিসিআর-এর হটলাইনে অসংখ্যবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি। এর মধ্যেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা ও এক্সরে করেন। চিকিৎসক মৌসুমি রোগ বলে কিছু ওষুধ দেন। পরে আইইডিসিআর-এ কর্মরত পরিচিত আরেক চিকিৎসকের ডা. সাদিয়ার পরামর্শে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে করোনার টেস্টের নমুনা দিয়ে আসেন। ১০ এপ্রিল ঢাকার সিভিল সার্জন অফিস থেকে একজন ফোন করে করোনা পজিটিভ বলে জানান। এর কিছুক্ষণ পরেই শাজাহানপুর থানা থেকে ফোন করে বাসার ঠিকানা নেয়। পুলিশ এসে বাসা লকডাউন করে দিয়ে যায়।

এমদাদুল হক খান বলেন, করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরে প্রথমে আমি মুষড়ে পড়ি। চোখের সামনে যেন সব স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসছিল, ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে আসছিল। কিন্তু আমার সাংবাদিক সহকর্মী, ডিরেক্টর গিল্ডের সহকর্মীরা আমাকে ফোন করে সাহস যোগায়। তাদের সহযোগিতায় দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে আমি ওইদিন রাতেই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হই।

বাংলাদেশের খবর পত্রিকার এই সাংবাদিক জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার স্ত্রী রেখা খানম ও দুই কন্যা সন্তান সুস্মিতা খান অ্যানি এবং রোবায়দা খান এশার করোনা পরীক্ষা করা হয়। এতে তার স্ত্রী ও বড় কন্যার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তারা তিনজন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন।

এমদাদ জানান, করোনা নেগেটিভ আসায় শ্যালকের মাধ্যমে ছোট মেয়েকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মালিবাগের ভাড়া বাসায় ঢুকতে প্রতিবেশীরা প্রথমে বাঁধা দেন। এতে আরও দুশ্চিন্তা শুরু হয় তার। পরে প্রতিবেশীদের অনেক অনুনয়-বিনয় করলে শ্যালক ও ছোট মেয়ে বাসায় ঢুকতে পারে। এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন দিনে একাধিকবার করে গরম পানির বাষ্প নেওয়া ও অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য দুধ-ডিম-ফল বেশি বেশি খেতে থাকেন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদ বলেন, আমার সবসময় মনে হয়েছে যেভাবেই হোক আমাকে বাঁচতে হবে। এজন্য আমি চিকিৎসকের পরামর্শ যথাযথভাবে পালন করেছি। ওষুধ খেয়ে ও ব্যায়াম করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। পরবর্তীতে আর হতাশাকে গ্রাস করতে দেইনি। মনকে উৎফুল্ল রাখার চেষ্টা করেছি। পরিচিতরা সবাই আমাকে ফোন করে সাহস যুগিয়েছেন।

কার দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন, এ বিষয়ে ধারণা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা নিয়ে রিপোর্টিং করতে তিনি কয়েকটি বস্তি ও গার্মেন্টস কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলেছিলেন। এছাড়া আরেক সাংবাদিক সহকর্মীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন, যিনি করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন। এদের কারো থেকে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

করোনা আক্রান্তদের উদ্দেশে এমদাদ বলেন, করোনা পজিটিভ হলেই ভেঙে পড়বেন না। মনোবল রাখুন। অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য ফলমূল ও ডিম দুধ খাবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। তাহলেই করোনাকে জয় করতে পারবেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!