চট্রগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হলেন ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৮:০৩ : অপরাহ্ণ 443 Views

বান্দরবানের প্রাক্তন জেলা প্রশাসক ও যুগ্নসচিব ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি কে চট্রগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে পদায়ন করেছে সরকার।বর্তমানে তিনি বিদ্যুৎ বিভাগে সংযুক্ত।রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সহকারী সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি সাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি জানা গেছে।উল্লেখ্য,ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি দীর্ঘদিন বান্দরবানে জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।২০২১ সালের ৪ জানুয়ারী তিনি বান্দরবান এর জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০২৩ এর ২৪ জুলাই তিনি জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন এর নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।তারও আগে ২০১১-১২ সাল নাগাদ স্বল্প সময়ের জন্য (১১ মাস) বান্দরবান সদর এর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।কর্মময় জীবনে তিনি চট্রগ্রাম এর পটিয়া উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি),চট্রগ্রাম জেলা প্রশাসনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক,চট্রগ্রাম এর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এবং চট্রগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ (চউক) এর মতো চ্যালেঞ্জিং প্রতিষ্ঠানের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তবে তিনি বান্দরবান এর একজন মানবিক জেলা প্রশাসক হিসেবে দেশখ্যাতি পেয়েছিলেন।জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই তিনি করোনা মহামারী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মাঠে নামেন।করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রনে আসার পর একের পর এক উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও জনবান্ধব সিদ্ধান্ত দিয়ে জেলা প্রশাসন ও জনসাধারনের মাঝে একটি সেতুবন্ধন রচনা করেন।২০২২ সালে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর নেতৃত্বে বান্দরবান জেলা প্রশাসন জাতীয় পর্যায়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ-২২ পুরষ্কার অর্জন করে।বিদেশী পর্যটকদের বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ এর অনুমোদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত ওয়েব বেইজড সফটওয়্যার fbta.gov.bd প্রস্তুত এর কারনেই বান্দরবান জেলা প্রশাসন জাতীয় পর্যায়ে ভাবগাম্ভীর্যপূর্ন এই পুরষ্কারটি অর্জন করে।

বান্দরবান জেলাজুড়ে পর্যটনকে এগিয়ে নিতে জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি নজিরবিহীন ভূমিকায় অবতীর্ন হন।পর্যটনকে এগিয়ে নিতে তিনি দায়িত্বশীল পর্যটন বিকাশে জেলা প্রশাসনের ভূমিকা শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লিখেন।প্রবন্ধ লিখেই থেমে থাকেননি জেলা প্রশাসন এর আওতাভুক্ত পর্যটনকেন্দ্র গুলো কে তিনি এককথায় আধুনিক স্থাপনায় জৌলসপুর্ন একটি নবরুপ দিয়েছিলেন।পর্যটকদের মন জয় করতে নীলাচলের স্বপ্ন চত্বর,থ্রীল এন্ড সুইং,ব্রান্ডিং বান্দরবান,মেঘলায় মাতৃছায়া নামে একটি স্থাপনা তৈরি করেন যেখানে রাখা হয়েছে মায়েদের ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও নামাজের কক্ষ,কায়াকিং বোট সংযুক্ত করে জেলাসহ সারাদেশ থেকে আগত লাখো পর্যটককে তিনি তাক লাগিয়ে দেন।প্রান্তিক লেক এর সৌন্দর্য্য বর্ধনে স্থাপন করা হয়েছে পুষ্পগিরি।এছাড়াও আধুনিক সুযোগ সুবিধা,পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন রাইড যুক্ত করে পর্যটন কেন্দ্র টি কে পর্যটক বান্ধব পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত করেন।নীলাচলে তিনি ভ্রমন পিপাসুদের জন্য মার্বেল পাথর দিয়ে সাজানো দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ নির্মান করেন।সব মহলে যা প্রশংসিত হয়েছে।

২ বছর ৭ মাসের সফল কর্মময় জীবনে তিনি দৃঢ়ভাবে বান্দরবানের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন।যখনই তিনি সুযোগ পেয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটে গেছেন।ভাগ্যকুল-কদুখোলা উচ্চবিদ্যালয়,জাগো স্কুলসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তিনি শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে আর্থিক অনুদানসহ নানা সহযোগিতা করেন।শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রমে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি যেনো এক জন অভিবাবক এর ভূমিকা পালন করছিলেন।অসংখ্য শিক্ষার্থীকে তিনি দিয়েছেন ভর্তি সহায়তা।

জেলা প্রশাসক হিসেবে ডিসি ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা এবং জেলা প্রশাসক মেধাবৃত্তি এর মতো উদ্যোগ ছিলো জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর সূদুরপ্রসারী একটি সিদ্ধান্ত।যা অত্র জেলায় শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকশিত করার জন্য শিক্ষার্থীদের মনের গভীরে অনুপ্রেরনা হয়ে থাকবে।জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে জেলাজুড়ে ক্রীড়াঙ্গনকে তিনি উজ্জ্বীবিত রাখতে নানা পরিকল্পনা গ্রহন করেন এবং সফলভাবে তিনি তা বাস্তবায়ন করেন।অসংখ্য ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠককে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বান্দরবান এর ক্রীড়াঙ্গনে একজন ক্রীড়ামোদি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি একটি অনবদ্য নজির স্থাপন করেন।বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ, জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপসহ বড় বড় টুর্নামেন্ট তিনি অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করেন।

এছাড়াও জেলা প্রশাসক এর গনশুনানী,আশ্রয়ন প্রকল্পে মাচাং ঘর নির্মানসহ নানা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিয়ে জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি বান্দরবানের মানুষের মনের গভীরে বহু বছর বেঁচে থাকবেন।তবে তাঁর নেতৃত্বে কলাগাছের সুতা থেকে তৈরিকৃত শাড়ি ও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী উৎপাদন তাকে সফলতার শীর্ষে পৌছে দেয়।স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলাগাছের সুতা থেকে উৎপাদিত শাড়ি ও পণ্য সামগ্রী তৈরির বিষয়টি কে নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!