শিরোনাম: দ্রুত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলের দাবি জানালো পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ বিতর্কিত শিক্ষা কর্মকর্তা কে বান্দরবানে বদলিঃ প্রতিবাদ জানিয়ে স্মারকলিপি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বান্দরবান জেলাজুড়ে চলছে বিশেষ প্রার্থনা শান্তি-শৃঙ্খলা সুদৃঢ় রাখতে আন্তরিক সহযোগিতা চাইলেন নবাগত পুলিশ সুপার আবদুর রহমান রাঙ্গামাটিতে পিসিএনপির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত বান্দরবানে ৬৪ মেধাবী শিক্ষার্থী “পৌর প্রতিভা” উপাধিতে ভূষিত সংকটাপন্ন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাঃ বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্বেগ বান্দরবানে আ’লীগ শাষনামলে নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীরা পেলেন সম্মাননা

গ্রেফতার হলেন সাংবাদিক নামধারী কেএনএফ সোর্স লোঙ্গা খুমী


অন্য মিডিয়া প্রকাশের সময় :১৯ মে, ২০২৩ ৯:৫৩ : অপরাহ্ণ 394 Views

সাংবাদিকতার আড়ালে মুখোশধারী লোঙ্গা খুমী নামে কেএনএফের এক সোর্স ও খাদ্য রসদ সরবরাহকারীকে রুমা থেকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।শুক্রবার (১৯ মে) সকাল ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল গোপনে অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার রুমা বাজার থেকে তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।লোঙ্গা খুমী জেলার রুমা উপজেলার কুলাইনপাড়া গ্রামের বগামুখ এলাকার ঙাচা খুমীর ছেলে।জানা যায়,আটক ব্যক্তি সাংবাদিকতার আড়ালে মুখোশধারী কেএনএফের অন্যতম সোর্স।তিনি দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।তার সরাসরি সম্পৃক্ততা বিষয়ক কেএনএফের গোপন অফিসিয়াল নথি সম্প্রতি সেনাবাহিনীর হাতে এলে সেই সূত্র ধরে তাকে আটক করা হয়।গোপন নথিতে কেএনএফের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অফিসিয়াল তালিকা রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র আরও নিশ্চিত করেছে,মিডিয়া জগতে কেএনএফের হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তিনি গত প্রায় দুই বছর আগে পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। তিনি দৈনিক মানবজমিনের রুমা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।তবে দৈনিকটির পক্ষ থেকে জানানো হয় গত ১৫-২০ দিন ধরে তার সংবাদ প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছিল।লোঙ্গা খুমীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার আড়ালে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন,চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন নিরীহ নাগরিকদের হয়রানি করারও অভিযোগ রয়েছে।তিনি রুমা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।বিএনপির ব্যানারে তিনি গত ২০১৬ সালে রুমা সদর ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন।কিন্তু তার অপকর্মের কারণে জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করে। তার বিভিন্ন অপকর্মের ফলে বর্তমানে তাকে বিএনপির কোনো পদেও রাখা হয়নি বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান।লোঙ্গা খুমী গত ২০০৮ সালে কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (কেএনডিও) সহ-সভাপতি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কেএনএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরেন সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।তিনি নাথানের প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ঠজন হিসেবে এলাকায় পরিচিত। লোঙ্গা খুমী বম সম্প্রদায়ের মেয়েকে বিয়ে করে নাথান বমের আরও আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন।এছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তথাকথিত দাবি আদায়ের আন্দোলনের নামে সে অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তন না হলেও নাথান বম ও লোঙ্গা খুমীর নিজেদের ভাগ্যের যথেষ্ট পরিবর্তন হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।নেতৃত্বকে পুঁজি করে উভয়েই তাদের স্ত্রীর জন্য রুমা উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরির ব্যবস্থা করে নিয়েছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। রাষ্ট্রের এত সুবিধা ভোগ করার পরেও সব সময় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার অবস্থান রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে মনে করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় তার বিচার দাবি করেছেন স্থানীয়রা। বান্দরবানে সম্প্রতি কেএনএফ ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের পরিচালিত যৌথ অভিযানের শুরু থেকেই লোঙ্গা খুমী অভিযানের বিরোধিতা করে আসছিলেন।এ বিষয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ‍্যমে কেএনএফের পক্ষে ও রাষ্ট্রের বিপক্ষে তাকে সোচ্চার থাকতে দেখা যায়। এর মাধ্যমে তিনি প্রত্যক্ষভাবে অন্যদের কেএনএফে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করছিলেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

রুমাতে অবস্থান করে যৌথ বাহিনীর আভিযানিক গতিবিধির ওপর নজরদারি করা ও সে সব তথ্য কেএনএফের সশস্ত্র কমান্ডারদের কাছে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে লোঙ্গা খুমীর বিরুদ্ধে। এমনকি সেনাবাহিনীকে সহায়তাকারী এ অঞ্চলের দেশপ্রেমিক নাগরিকদের তথ্যও তিনি কেএনএফের সশস্ত্র কমান্ডারদের কাছে পাঠাতেন বলে জানা যায়। এছাড়া সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তিনি বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য কেএনএফের অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি Vate Kuki তে প্রকাশের জন্য পাঠাতেন।

একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তার এসব অপকর্মের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।রুমার মুয়ালপী পাড়ায় ও রোয়াংছড়ির কাটা পাহাড় এলাকায় সম্প্রতি সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অতর্কিত গুলিবর্ষণে তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল বলে জানা যায়। তিনি সে টহলদল দুটির গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তা কেএনএফ সন্ত্রাসীদের পাঠাতেন বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে।উল্লেখ্য,তার তথ্যের ভিত্তিতেই সেই এলাকা দুটিতে সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কেএনএফ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালালে সেনাবাহিনীর কয়েকজন দেশপ্রেমিক সদস্য হতাহত হন।সবশেষ তথ্য মতে,আজ বিকেল ৩টায় লোঙ্গা খুমীকে রুমা থানা পুলিশ বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে বান্দরবান জেলা কারাগারে পাঠিয়েছেন।রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, ‘কেএনএফের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে লোঙা খুমীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এর আগে থানায় দুটি মামলা ছিল। সে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে মানবজমিনের মতো পত্রিকায় প্রতিনিধি হতে কে বা কারা তাকে সহযোগিতা করেছে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সচেতন মহল।কারা তাকে এই পরিচয়ে পরিচিত করার সহযোগিতা করেছে তা খতিয়ে দেখার আহবানও জানিয়েছে সচেতন মহল।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর