সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম নারী কে নিয়ে লিখেছেন, “আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর-অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,অর্ধেক তার নর”।আবার ঘনকালো অমানিশা রাত্রির মধ্যেই বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন লিখেছিলেন ‘সুলতানাস ড্রিম’।একশো বছরের বেশি সময় আগে লেখা সেই ‘সুলতানাস ড্রিম’ বা সুলতানার স্বপ্ন যে এমন এক আলোর ঝলকানিতে রূপ নেবে তা হয়তোবা বেগম রোকেয়া নিজেও কখনো ভাবেননি।নারী জাগরণের এই অগ্রদূত ১৯০৫ সালে যে স্বপ্ন বানী লিখে গিয়েছিলেন তা আজ বাংলাদেশে অনেক বড় বাস্তবতা।উন্নয়নের জোয়ারে বর্তমান বাংলাদেশের আলোর পথে অনন্য সহযাত্রীরাই হলো নারী।আলোর পথের এই নারী দিশারীদের হাত ধরেই বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে।নারীর হাত ধরেই স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রাও শুরু করেছে।কবি নজরুল এর নারী কবিতার মর্ম বানী যত দিন গড়িয়েছে বাংলাদেশের বাস্তবতায় আজকে নারী ততটাই তাদের কর্মগুনে ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে যাচ্ছে।রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী।
সমাজে এখন নারীর বলিষ্ট উপস্থিতি বেড়েছে বহুগুন।প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পদে নারীর উপস্থিতি দেশ বিদেশে নজর কেড়েছে।সারাদেশে নারী কর্মকর্তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।বান্দরবান জেলাতেও এর সুরভিত প্রভাব টের পাচ্ছে এই জেলার সাধারন মানুষ।২০২১ সালের ৪ জানুয়ারী জেলার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে বান্দরবান জেলার দায়িত্ব গ্রহন করেন ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।পার্শ্ববর্তী রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় তাঁর জন্ম।কাপ্তাই ও চট্টগ্রামে কেটেছে শৈশব কৈশোরের দুরন্ত সময়টা।বাবা সৈয়দ শামসুদ্দীন আহমদ তিবরীজিও ছিলেন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার এর একজন দাপুটে কর্মকর্তা।চাকরিজীবনে বাবার বদলির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়েছে এবং নতুন নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়েছে।ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিষয়ে প্রথম বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।পরে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান উচ্চশিক্ষার জন্য।সেখানে তিনি ম্যাককুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘গভরনেন্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসি’ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি ২২তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন চৌকস কর্মকর্তা।তিনি চট্রগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ এর উপসচিব,চট্রগ্রাম জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক, বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সফলতার সাথে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করার পরপরই তিনি জেলাপ্রশাসন কে জেলার জনসাধারনের প্রশাসন হিসেবে গড়ে তোলেন।জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপুর্ন রেকর্ড রুম কে তিনি দালাল মুক্ত করে কিভাবে জনসাধারনের কাঙ্খিত সেবা সহজ করা যায় তা নিয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং কার্যকর করেন।জনসাধারন যাতে সহজে জেলা প্রশাসক পর্যন্ত পৌছাতে পারেন তা নিয়েও তিনি প্রতি বুধবার গনশুনানিতে অংশগ্রহন করেন।তাঁর এই গনশুনানির সুফল ভোগ করছে হাজারো নাগরিক।জেলা ছাপিয়ে গনশুনানির খবর এখন সারা দেশে ছড়িয়েছে এবং অনন্য একটি উদাহরন হিসেবে জনপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে উদাহরন সৃষ্টি করেছে।তিনি স্থানীয় জনসাধারনকে কর্মমূখী করার জন্য কলাগাছের তন্তু থেকে সুতা তৈরির পাইলট প্রকল্প গ্রহন করেন।এই প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় শতশত নারী এখন কলাগাছের তন্তু থেকে উৎপাদিত সুতা দিয়ে পণ্য সামগ্রী তৈরী করছেন।মূলত স্থানীয় নারীদের আত্মকর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করার স্বপ্ন নিয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর এমন উদ্যোগ।তিনি উৎপাদিত পণ্যের গুনগতমান উন্নত করতে স্থানীয় নারীদের নিয়ে একের পর এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন।সম্প্রতি সমাপ্ত হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো কলাগাছ এর তন্তু থেকে সুতা উৎপাদন এবং সেই সুতা দিয়ে নারীদের তৈরী করা পণ্য সামগ্রী উৎপাদনের বিষয়টি।একপর্যায়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রনালয় এর মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর কলা গাছের তন্তু থেকে সুতা উৎপাদন নিয়ে মন্ত্রনালয় গবেষনায় যাবে বলেও ঘোষনা দেন।
জনসাধারনের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়েই যে তিনি শুধু ভেবেছেন এমন নয়।পার্বত্য চট্রগ্রামের অপার সম্ভাবনা পর্যটন নিয়ে তিনি দায়িত্বশীল পর্যটন বিকাশে জেলা প্রশাসন এর ভূমিকা শীর্ষক নিবন্ধ লিখে তুলে ধরেছেন কিভাবে বান্দরবানসহ পার্বত্য চট্রগ্রাম এর পর্যটনখাত কে বিকশিত করা যায়।এরই ধারাবাহিকতায় পর্যটকদের জন্য আধুনিক পর্যটন সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনি নানা উদ্যোগ গ্রহন করেন।তাঁরই নেতৃত্বে আধুনিকায়ন করা হয়েছে জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্যটন কেন্দ্রগুলো।পর্যটন কেন্দ্র মেঘলা এবং প্রান্তিক লেকে কায়াকিং বোট যুক্ত হয়েছে।এছাড়াও প্রান্তিক লেকে বেশকিছু সোলার বোট দেয়া হয়েছে।মেঘলায় প্রথমবারের মতো ‘ব্রেস্ট ফিডিং’ জোন করা হয়েছে।সেখানে মায়েরা বিশ্রাম নেয়ার পাশাপাশি নারীদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।এক্ষেত্রে পর্যটন স্পটগুলোকে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষনীয় রুপে রুপায়িত করা হয়েছে।জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে শুধু আধুনিক অবকাঠামোগত উন্নয়নই নিশ্চিত করেছেন এমন নয়।একই সাথে তিনি পর্যটকদের যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয় সেই লক্ষ্য নিয়ে নিজস্ব পোশাকধারী নিরাপত্তা কর্মীদের বলয় তৈরি করে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।সাম্প্রতিক সময়কালে নীলাচলে সুইং এন্ড থ্রীল নামক ৪টি দোলনা সংযুক্ত করা হয়েছে।পর্যটকদের বাড়তি রোমাঞ্চকর ভ্রমন অনুভুতি দেয়ার জন্যই তিনি এই দোলনা স্থাপন এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন।নীলাচলে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে।তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে নীলাচল জামে মসজিদ আধুনিকায়ন করা হয়েছে।পানির সমস্যাসহ বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা দুর করে সম্পূর্ণ মসজিদটিকে মার্বেল পাথর এবং টাইলস দিয়ে সুন্দর করা হয়েছে।
নীলাচলেই পর্যটকদের দেখা মিলবে স্বপ্ন চত্বর এবং ভিআইপি কটেজসহ অসংখ্য স্থাপনার।নীলাচলে ব্র্যান্ডিং বান্দরবান নামে যে স্টলটি করা হয়েছে এখানে বান্দরবানের ১২টি জাতি গোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির পাশাপাশি জীবনধারনে ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন আসবাবপত্র সংরক্ষণ এবং বিক্রি করা হচ্ছে।কর্মসংস্থানও হয়েছে অনেকের।পার্বত্য বান্দরবানে ‘বাঙালিসহ ১১টি নৃগোষ্ঠী এই জেলায় বসবাস করে।নানা কারণে ধীরে ধীরে তাদের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এই বিবেচনায় তাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি যাতে হারিয়ে না যায়,সেজন্য তিনি একটি মিউজিয়াম করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন।এই মিউজিয়ামে পার্বত্য নৃগোষ্ঠীর সকল ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধারণ করা হবে।শুধু তাই নয়,এই অঞ্চলের জুমিয়া ও সাধারন কৃষকদের নিয়েও তিনি চিন্তাভাবনা করেন।এরই একটি উৎকৃষ্ট উদাহরন ‘মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে,চাষীরা যাতে ন্যায্যমূল্যে এসব কৃষিপণ্য অনলাইনে বিক্রি করতে পারে সেজন্য “একশপ” নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছেন।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর সার্বিক তত্বাবধানে প্রকাশিত “অপরুপা বান্দরবান” ব্রান্ড বইয়ের প্রতিটি পাতায় উঠে এসেছে পার্বত্য বান্দরবান এর অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের নানা তথ্য।বইটির প্রতিটি পরতে পরতে প্রকাশ পেয়েছে কেনও মানুষ বান্দরবানকে অপরুপ সৌন্দর্য্যের লীলাভুমি বলা হয়।অত্র অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি তিনি এতটাই অনুরাগী যেকারনে তাঁর দুরদর্শী এক সিদ্ধান্তে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানে তিনি পাহাড়ী ঐতিহ্যবাহী মাচাং ঘর নির্মানে প্রকল্প পরিচালক বরাবরে চিঠি মারফত বিশেষ আহবান জানিয়ে পত্র প্রেরন করেন।পরবর্তী সময়ে প্রকল্প কার্যালয় তাঁর আহবান খতিয়ে দেখেন।তাঁর এই উদ্যোগ পাহাড়ের মানুষের মাঝে বিপুলভাবে সাড়া জাগায়।পরে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী বিভিন্ন উপজেলার ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীর জনসাধারনের জন্য মাচাং ঘর তৈরি করে ধাপে ধাপে উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়।যা উঠে আসে দেশের শীর্ষ স্যাটেলাইট টেলিভিশন এবং দেশের শীর্ষ প্রিন্ট মিডিয়ার পাতায় পাতায়।নিয়ম অনুযায়ী একজন জেলা প্রশাসক জেলার বিভিন্ন দপ্তর সম্পর্কিত ১২০ টি কমিটির সভাপতি।সব কাজগুলো করার পরও তিনি নানা উদ্ভাবন দিয়ে বান্দরবানের স্থানীয় জনসাধারনকে চমকে দিয়েছেন।বিদেশী পর্যটকদের বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ এর অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করতে তাঁর উদ্যোগে প্রস্তুত করা হয় ওয়েব বেইজড অনলাইন সফটওয়্যার।এতে বিদেশী পর্যটকরা ঘরে বসে মাত্র ৫ দিনেই ভ্রমণ অনুমোদন আবেদন এর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারছেন।জেলা পর্যায়ে কারিগরি শ্রেষ্ঠ দল (সরকারি) হিসেবে এই সফটওয়্যারটি ডিজিটাল বাংলাদেশ-২২ পুরষ্কার অর্জন করে।
নেপোলিয়ন বলেছিলেন আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও-আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিবো।জেলা প্রশাসক নিজেও একজন মা।তাঁর সন্তানরা সাদামাটা আর দশটা পরিবারের সন্তানের ন্যায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।কিন্তু জেলা প্রশাসক এর মাতৃতুল্য স্নেহ এবং আর্থিক সহায়তা নিয়ে গত দুই বছরের বেশি সময়কালে বান্দরবান এর কতজন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন তা বান্দরবান এরজন্য শুধু নয় সারাদেশের জন্য একটি বিরল ঘটনা বৈকি।শুধু স্কুল-কলেজ নয় এই জেলার কত তাহসিন,লিদিরামদিন পার বম,মংসিং চিং,আরমান,ইমনরা জেলা প্রশাসক এর আর্থিক সহায়তা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবার স্বপ্ন পুরন করেছেন তা তো বান্দরবানের ইতিহাসে অনন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যুগ-যুগান্তর।কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসক এর সরাসরি অনুদান পেয়ে দারিদ্র পীড়িত পশ্চাৎপদ জনপদ পার্বত্য বান্দরবান জেলায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে তাঁরই প্রকৃষ্ট উদাহরন হয়ে আছে ভাগ্যকুল-কদুখোলা উচ্চবিদ্যালয় কিংবা অনলাইন ভিত্তিক জাগো স্কুল এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।তাঁর হাত ধরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের অংশ হিসেবে বান্দরবান জেলার ইতিহাসে এবারই প্রথম জেলা প্রশাসক ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।তিনি মনে করেন প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মেধার উন্মেষ ঘটাতে হলে এই ধরনের প্রতিযোগিতার বিকল্প নেই।একইভাবে বুদ্ধিভিত্তিক মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে পারবে এবং আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার সুযোগ দিতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।বান্দরবানের ক্রীড়াঙ্গন কে এগিয়ে নিতে তিনি একজন দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন।একজন জেলা প্রশাসক কেনও দর্শক সম্বোধন করা এটার কারনও আছে।বিগত সময়ে দেখা গেছে স্থানীয় যেসব খেলাধুলা আছে তিনি এসব খেলায় যারা সাফল্য পেয়েছে তাদেরকে যেমন বিভিন্ন প্রনোদনা দিয়ে উৎসাহিত করেছেন একইভাবে কোনও খেলোয়াড় খারাপ করলেও তিনি সেই খেলোয়াড় বা টিমগুলোর পাশে ছিলেন।ব্যার্থতা কাটিয়ে এসব খেলোয়াড় বা টিমগুলো যাতে সফলতায় ফিরতে পারে তা নিয়েও তিনি সবসময় তৎপর ছিলেন।তরুন সমাজ কে মাদকের করাল গ্রাস থেকে দুরে রাখতে খেলাধুলা কে তিনি সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন।স্কুল ক্রিকেট,ফুটবল টুর্নামেন্ট,দাবাসহ যখন যেভাবে সুযোগ পেয়েছেন পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি সবসময় এগিয়ে এসেছেন।বান্দরবান জেলা স্টেডিয়াম কে আধুনিক স্টেডিয়ামে রুপ দিতে তিনি তৎপর ছিলেন।মোয়ার মেশিন দিয়েছেন।জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে তিনি যতটুকু করা প্রয়োজন কোনওটাতেই তিনি ঘাটতি রাখেননি।নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টিতেও অনেক ক্রীড়া কর্মসূচি তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে জেলা প্রশাসক হিসেবে বান্দরবান জেলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবতী হিসেবে সন্তুুষ প্রকাশ করেছেন।একইভাবে বান্দরবান এর আপামর জনসাধারন জেলা প্রশাসক হিসেবে ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর মতো একজন মানবিক জেলা প্রশাসক পেয়ে নিজেদের ধন্য মনে করে।দেশের আনাচে কানাচে বান্দরবানের মানুষ যখনই অন্য কোনও জেলায় যাচ্ছেন উচ্ছ্বসিত আবেগ নিয়ে নিজেরাই সেসব জেলার মানুষকে বলছেন, “জানেন,আমাদের না ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি নামে একজন জেলা প্রশাসক আছেন।তাই শেষাংশে এসেও পুনরায় লিখতে হলো, “ঘনকালো অমানিশা রাত্রির মধ্যেই একশত বছর আগে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন যে ‘সুলতানা’স ড্রিম” এর কথা লিখেছিলেন,জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীর তিবরীজিদের মতো বিচক্ষন,দুরদর্শী, দেশপ্রেমিক নারীর হাত ধরেই লাল সবুজের ৫৬ হাজার বর্গমাইল জুড়ে শতশত স্বপ্ন বাস্তবে রুপ পাবে।জনপ্রশাসন এর একজন সৎ মেধাবী কর্মকর্তা কিংবা একজন জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি জনপ্রশাসনে যতটা নন্দিত হয়েছেন একই ভাবে তিনি এদেশের লাখো নারীর জন্য নিজের কর্মগুণে আলোর বাতিঘর হিসেবে নিজেকে তিনি আবির্ভুত করেছেন।