বান্দরবান রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত রোয়াংছড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ চত্বরে “সকলের জন্য সেবা” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ‘শান্তি,সম্প্রীতি ও উন্নয়ন’ এ ভাবধারাকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাস্তুহারাদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সেনা জোনের মেডিকেল ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।রবিবার (৯ই এপ্রিল) বান্দরবান সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে: কর্নেল মাহমুদুল হাসান,পিএসসি এর মানবিক ও দূরদর্শি নেতৃত্বের ফলশ্রুতিতে এই মেডিকেল ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।
মেডিকেল ক্যাম্পেইনে মূলত পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকিচীন আর্মির অত্যাচারে খামতাম পাড়া হতে পালিয়ে আসা খিয়াং এবং বম জনসাধারণ ও রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন দূর্গম এলাকা হতে নারী, শিশু, পুরুষ সহ দীর্ঘকালীন সমস্যা জর্জরিত রোগীরা আগমন করেন।
বান্দরবান সেনা জোনের রেজিমেন্টাল মেডিক্যাল অফিসার ক্যাপ্টেন মো.আসাদুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধানে আগত রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়।ক্যাম্পেইনে চক্ষু,নাক,কান,গলা,নারী-শিশু সহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার জন্য প্রায় শতাধিক সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা,রোগ নির্ণয় পূর্বক প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয় এবং ছানি পড়া রোগীর তালিকা করা হয়। পরবর্তীতে তাঁদের চক্ষু অপারেশনের জন্য ব্যাবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।
এর আগেও সেনা জোনের আওতাধীন বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হতে বিভিন্ন সময়ে দুস্থ ও অসহায় মানুষগুলোকে সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে উন্নত চিকিৎসা প্রদান ও যাবতীয় ব্যয়ভার বহনও করেছে।
ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সেনা জোনের জোন উপ- অধিনায়ক মেজর এএসএম মাহমুদুল হাসান, পিএসসি ।
তিনি বলেন, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের অধীনে বান্দরবান সেনা জোন নিয়মিত পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় বছরের পর বছর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চয়তার জন্য চিকিৎসা সেবা, শান্তি-শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধির জন্য প্রতিনিয়ত নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই মেডিকেল ক্যাম্পেইন। পার্বত্য অঞ্চলে সু-চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মানুষের দ্বারে দ্বারে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করছে সেনাবাহিনী।
সম্প্রতি পাইক্ষ্যং পড়ায় গত ১২ ই মার্চ ২০২৩ তারিখ বান্দরবান সেনা জোনের উদ্যোগে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গেলে উক্ত এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন কর্তৃক ভয় প্রদর্শনপূর্বক গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করে যার ফলে উক্ত এলাকায় জনশূন্যতা পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন কুকিচীন কর্তৃক সেনা টহলের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় এবং আমাদের একজন সেনা সদস্য নিহত হন। যার ফলে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এত কিছুর পরেও সেনাবাহিনী সর্বদা এই পাহাড়ের মানুষদের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি,সম্প্রীতি ও উন্নয়ন বজায় রেখে মাদকদ্রব্য পরিহার এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত রেখে বসবাস করার জন্য তিনি সকলকে আহবান জানান।বর্তমানের ন্যায় ভবিষ্যতেও এরুপ জনহিতকর কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।