সবুজের অরণ্য ঘেরা প্রকৃতিক সৌন্দর্য্যের ভরপুর পাহাড়ী কণ্যা বান্দরবান। চারদিকে উচু-নিচু ও আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ আর এই জেলায় ১১টি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। এই জনপদে পাহাড়ীদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পাশাপাশি প্রকৃতি সৌন্দর্য্যে প্রাণজুড়ানো দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে প্রতিবছর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে ভ্রমণ পিপাসুরা। তবে এবারে ঈদের ছুটিটা বেশ লম্বা। তাই বাড়তি সময় নিয়ে পর্যটন খ্যাত বান্দরবানে পর্যটকের ঢল নামতে পারে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।
দীর্ঘদিন কোভিড-১৯ এর কারণে ঈদের ছুটিতে পর্যটন স্পটগুলো অনেকটা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ দিনের পর এই মন্দা কাটিয়ে আবারও বিগত দিনের লোকসান পুষিয়ে নিতে চান পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
শহর থেকে কাছে মেঘলা ও নীলাচল পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, মেঘলা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রং দিয়ে সাজানো হচ্ছে নতুনভাবে। আর নীলাচলে যাওয়ার পথে টাইগার পাড়া সংলগ্ন ভ্রমণ পিপাসুদের সুষ্ঠু ও নিরাপদ যাত্রার সুবিধার্থে খানাখন্দ রাস্তাটি সংস্কার করছেন জেলা প্রশাসন।
তাছাড়া আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নতুন সাজে সাজানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারেনি। ঈদে লম্বা ছুটি থাকার কারণে এখানে প্রচুর পর্যটক আসবে। এখানে ৭০টি হোটেল মোটেল রিসোর্ট আছে। যার ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫ হাজারের অধিক। এরই মধ্যে হোটেলগুলোতে ৪০-৫০% অধিক আগাম বুকিং হয়ে গেছে। তাছাড়া ঈদের পরে বিশেষ করে ৫ ও ৬ তারিখ এ দুই দিন পর্যটকরা কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন আগাম।
শৈলপ্রপাত ফলমূল বিক্রেতা নিকো বম জানিয়েছেন, এবার ঈদে আশা করি ভালো বিক্রি হবে। মৌসুমে ভিন্ন রকমারি খাবারের নতুন ফল মুল সাজিয়ে রেখেছি। ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছেন
বান্দরবান জেলায় মধ্যে মেঘলা, নিলাচল,স্বর্ণ মন্দির, রামজাদী, শৈল প্রপাত, চিম্বুক ভিউ, নীলগিরি,প্রান্তিলেক ইত্যাদি সহ রয়েছে অধিক পর্যটন কেন্দ্র। সেসব কেন্দ্রগুলোতে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা সাজিয়ে রেখেছেন রংবেরঙে। শুধু কি তাই ঈদকে সামনে রেখে পর্যটকের আগমনে প্রহর গুনছেন তারা। পাশাপাশি পর্যটকদের স্বাগতম জানাতে সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বান্দরবানের ট্যুরিস্ট পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, এখানে অনেক পর্যটকের সমাগম হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটা পর্যটনকেন্দ্রে ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ট্যুরিস্টদের যে কোন প্রয়োজনে আমরা তাৎক্ষনিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এদিকে বান্দরবানে থানচি উপজেলা অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। এখানে বহমান সাঙ্গু নদীর স্বচ্ছ পানি আর নদী পথে বিশাল আকৃতির পাথর দেখতে প্রকৃতি প্রেমিকরা ছুটে আসেন এই জনপদে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সংগঠনের কিছু উগ্রপন্থী অপতৎপরতার কারনে পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কোন পর্যটক থানচি ঙাফাকুম সীমানা অতিক্রম করতে পারবে না বলে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভা পর্যটক গাইডের জন্য এই নির্দেশনা জারি করেন থানচি উপজেলা প্রশাসন।