পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য


ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশের সময় :৯ অক্টোবর, ২০২২ ১:৩৪ : পূর্বাহ্ণ 272 Views

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। দিনটি সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ২৯ আগস্ট, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার, সূর্যোদ্বয়ের ঠিক পূর্বমুহূর্তে, সুবহে সাদিকের সময় মহাকালের এক মহাক্রান্তিলগ্নে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আবার তেষট্টি বছরের এক মহান আদর্শিক জীবন অতিবাহিত করে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ৮ জুন, ১১ হিজরি রবিউল আউওয়াল মাসের ১২ তারিখ একই দিনে তিনি পরলোক গমন করেন।

দিনটি মুসলিম সমাজে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে সমধিক পরিচিত। ঈদ, মিলাদ আর নবী তিনটি শব্দ যোগে দিবসটির নামকরণ হয়েছে। ঈদ অর্থ- আনন্দোৎসব, মিলাদ অর্থ- জন্মদিন আর নবী অর্থ নবী বা ঐশী বার্তাবাহক।
তাহলে ঈদে মিলাদুন্নবীর অর্থ দাঁড়ায় নবীর জন্মদিনের আনন্দোৎসব। ১২ রবিউল আউওয়াল একই সাথে মহানবীর জন্ম ও মৃত্যু দিবস হলেও তা শুধু জন্মোৎসব হিসেবেই পালিত হয়।

পৃথিবীর যেকোনো মানুষের মুত্যুই তাঁর পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করে। কিন্তু মহানবীর মৃত্যু মানবসমাজ ও সভ্যতার কোনো পর্যায়ে কোনো শূন্যতার সৃষ্টি করেনি। যদিও তাঁর মুত্যুর চেয়ে অধিক বেদনাদায়ক কোনো বিষয় উম্মতের জন্য হতে পারে না। তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন সমগ্র পৃথিবীর জন্য আল্লাহর রহমত হিসেবে। এরশাদ হয়েছে, আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি । (সূরা আল-আম্বিয়া : ১০৭) এরশাদ হয়েছে, আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের জীবন বিধানকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের ওপর আমার নেয়ামতরাজিকে পূর্ণতা দিলাম আর ইসলামকে তোমাদের একমাত্র জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম। (সুরা আল-মায়িদা ; ৩)

রবিউল আউওয়াল মাস এলে মুসলিম সমাজে মিলাদ মাহফিল ও সিরাত মাহফিল আয়োজনের ধুম পড়ে যায়। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.) যে আদর্শের সুষমা দিয়ে একটি বর্বর জাতিকে আদর্শ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতো ফুটতে থাকা একটি সমাজকে শান্তির সুশীতল ছায়াতলে এনে দিয়েছিলেন; সেই মহান আদর্শে উত্তরণের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। মহানবীর আদর্শ অনুসরন না করে শুধু মিলাদ মাহফিল আর সিরাত মাহফিল আয়োজনে কোনো লাভ নেই। কারণ মহান আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শকে জীবনে ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘হে রাসুল! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবেসে থাক তাহলে আমাকে অনুসরণ করো, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। (সুরা আল-মায়িদা : ৩১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্বের মাধ্যমেই একটি শ্রেষ্ঠ জাতি গঠন করেছিলেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন নিশ্চয়ই আমি সর্বোত্তম চরিত্রের পূর্ণাঙ্গতা সাধনের জন্য প্রেরিত হয়েছি। (ইবনে মাজা) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ ধারণ করেই সাহাবায়ে কেরাম (রা.) যুগের সর্বোত্তম মানুষ হতে পেরেছিলেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : সর্বোত্তম মানুষ হলো আমার যুগের মানুষ, অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগের মানুষ, তারপর তাদের পরবর্তী যুগের মানুষ। (সহীহ বোখারি)

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!