মায়া হচ্ছিল,বিয়ে বন্ধ করে দায়িত্ব নিয়েছি
নীলফামারী ডিমলা ঝুনাগাছ চাপানির সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ঝড়না আক্তার (ছদ্মনাম)। সোমবার (১০ অক্টোবর) ধুমধাম করে তার চলছিল বাল্যবিয়ের আয়োজন।খবর পেয়ে সেখানে যায় পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন।প্রশাসনের উপস্থিতিতে যেখানে সৃষ্টি হওয়ার কথা আতঙ্ক,তার বদলে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে এক আবেগঘন পরিবেশের৷বাবা মাকে বাল্য বিবাহের কুফল বুঝিয়ে ১৮ বছর পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীর পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।তারাও অঙ্গিকার করেছেন বিয়ে না দেওয়ার।
স্থানীয়রা জানায়,প্রশাসনের উপস্থিতিতে দাওয়াতে আসা লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যান।পরে ইউএনও ওই মেয়ের পরিবার ও স্বজনের ডেকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেন পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ে বিয়ে দেওয়া যাবে না এমন শর্তে মুচলেকা নিয়ে বিয়েটি বন্ধ করেন।পরে মেয়েটির পড়াশুনার দায়িত্ব নেন তিনি।ইউএনও মহাদয়ের মহৎ এমন কাজে খুশি তারা।
স্থানীয় শিক্ষক মতিয়ার রহমান বলেন,এত ছোট বাচ্চার বিয়ে দেওয়াটা উচিত নয়।তবে পরিবার, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও অভাব অনটনের কথা চিন্তা করে বিবাহ দিতে বাধ্য হয়।তবে ইউএনও মহাদয়ের এই মহৎ কাজ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল এলাকাবাসীর কাছে।
সমাজকর্মী সিয়াম হোসেন বলেন,আমরা সব সময় চেষ্টা করি বাল্যবিবাহ রোধ করতে।তবে বেশিরভাগ সময় প্রশাসনকে আইন প্রয়োগ করতে দেখলেও। বেলায়েত স্যারের এমন কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছি। পরবর্তীতে এলাকাবাসী ও নিজেরাও যেন এমন সিদ্ধান্ত নেই সে বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলায়েত হোসেন বলেন,বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বাচ্চাটিকে দেখে আমার খুব মায়া হচ্ছিল। এতো কম বয়সী একটা মেয়েকে পুরো একটা পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে, এই ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছিলো।আমি তার পরিবার ও স্বজনদের সাথে কথা বলি,১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত তার লেখাপড়া ও সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছি।তারাও অঙ্গীকার করেছে ১৮ বছর বয়স না হলে তার বিয়ে দিবেন না।
তিনি আরও বলেন,পেশাগত কারণে যেখানেই থাকি তার পরিবারের সাথে আমার যোগাযোগ থাকবে সব সময়েই।আসলে কাজটা আমি বিবেকের তাড়নায় করেছি।