ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা


প্রকাশের সময় :২২ জুলাই, ২০১৭ ১:১৬ : পূর্বাহ্ণ 955 Views

সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইমতিয়াজ মাহমুদ নামে সুপ্রীম কোর্টের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি সদর থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে।গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকালে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ১৭,তারিখ-২১-০৭-২০১৭।মামলায় অভিযোগ করা হয়,ইমতিয়াজ মাহমুদ সাম্প্রতিককালে তার ফেসবুক আইডিতে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে প্রতিনিয়ত কল্প কাহিনী বানিয়ে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন।মামলার আর্জিতে বলা হয়,ইমতিয়াজ মাহমুদের মিথ্যা লেখাসমূহ পড়ে ও দেখে যারা লাইক ও কমেন্ট করে উক্ত লেখাকে সমর্থন করেছে তারাও দেশের প্রচলিত আইনের অপরাধজনক কাজ করেছে,যা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো.আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারায় মামলাটি হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতারের পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়েছে।
মামলার আর্জিতে আরো বলা হয়,বৃটিশ আমল থেকেই পার্বত্যাঞ্চলে বাঙালি সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করে আসছেন এবং পার্বত্য জনপদের বীর বাঙালিরার মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ করেছেন।ফলে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা এই অঞ্চলে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।মামলায় অভিযোগ করা হয়,গত ১ জুলাই রাত ১২.২৫টায় ইমতিয়াজ মাহমুদ তার ফেসবুক আইডিতে ‌’খুবই জরুরী এবং আশঙ্কাজনক একটি খবর’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেন।পোস্টে বলা হয়, ‘একটু আগে মাত্র খবর পেয়েছি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার ১নং সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের অন্তগত সৌনায়া গা ও ব্রত চন্দ্র চন্দ্র কার্বারী পাড়াতে পাশ্ববর্তী কালাঢেবা নামক এলাকা থেকে শতাধিক সেটলার সংবদ্ধভাবে হামলা চালাচ্ছে।এই গ্রামগুলিতে ত্রিপুরা আদিবাসীদের বাস।রাত এগারোটার দিকে সৌনায়া গা গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস করে লুটপাট চালানো হয়েছে।এবং এগারোটার দিকে ব্রত চন্দ্র কার্বারী গ্রামটিতে চলছিল নির্বিচার হামলা,মারধোর আর লুটপাট।সেটেলারদের সাথে এইসব হামলায় স্থানীয় চৌচালা বিজিবি ক্যাম্প থেকে বিজিবি সদস্যরাও অংশ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।গ্রামের ত্রিপুরা আদিবাসী মানুষজন প্রাণভয়ে পালাচ্ছে বাড়িঘর ছেড়ে।’ ‘আপনারা কেউ যদি এখনো জেগে থাকেন,একটু দেখবেন প্লিজ?ঐ এলাকার কোন সরকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক মানবাধিকার কর্মী বা রাজনৈতিক নেতা কর্মী যারাই আপনার পরিচিত আছেন,একটু যোগাযোগ করেন প্লিজ।দেখেন কিছু করা যায় কিনা।যদি কিছুটা হলেও মানুষকে রক্ষা করা যায়।‘আর মেহেরবানী করে অন্যদেরকেও জানান।দেখেন কি করতে পারেন।যদি কারো এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা থাকে বা জানার সুযোগ থাকে,জানাতে ভুলবেন না।এই সেটেলাররা তো আমাদেরকে শান্তিতে থাকতে দেবে না রে ভাই।’অথচ ঐদিন সেখানে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।পোস্টটি সম্পূর্ণ সত্যের বিপরীতে বানোয়াট কল্পকাহিনী ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির সহায়ক। ইমতিয়াজ মাহমুদ প্রতিনিয়ত এ ধরনের কল্প কাহিনী বানিয়ে পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন।কিছু দিন পূর্বেই রাঙামাটি জেলার লংগদুতে সাম্প্রায়িক শান্তি বিনষ্টকারী একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা সংঘঠিত হয়েছে।এর রেশ ধরে পার্বত্য জেলাগুলোতে এমনিতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।সরকারের অনেক মন্ত্রী-এমপি পার্বত্য অঞ্চল সফর করে সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।জেলা প্রশাসন,আইন-শৃক্সখলা বাহিনী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।কিন্তু ইমতিয়াজ মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) অসত্য তথ্য সরবরাহ করে এ সকল প্রচেষ্টা ব্যাহত করার চেষ্টা করছেন।তার এই হীন প্রচেষ্টা পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ভঙ্গের কারণ হচ্ছে।বর্তমান জনবান্ধব সরকার ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করে,যা বর্তমানেও চলমান।ইমতিয়াজ মাহমুদ সরকারের এই শুভ উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করার হীন প্রচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছেন।তাকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব না হলে অন্যরাও এ ধরনের শান্তি বিনষ্টকারী কাজে লিপ্ত হতে পারে।১ জুলাই -২০১৭-হতে ১০ জুলাই-২০১৭ পর্যন্ত আসামীর উল্লেখিত পোষ্টগুলো উস্কাকানীমূলক।যা পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য যথেষ্ট।তার প্রতিটি পোস্ট রাষ্ট্র,ব্যক্তি ও পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বিনষ্টে উসকানিমূলক।যা দেশের প্রচলিত আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।ইমতিয়াজ মাহমুদের এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট বন্ধ না হলে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি আশংকা করা হয়েছে অভিযোগে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!