শিরোনাম: জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি’র এক ঘোষনায় ২০ লাখ টাকার অনুদান পেলো আলীকদম কলেজ নাইক্ষ্যংছড়িতে গ্রেফতার হলো স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক চুচু মং শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত বান্দরবানে ডেভিল হান্ট অভিযানঃ কারাগারে দুই আওয়ামীলীগ নেতা বান্দরবানের প্রথম পেশাদার ম্যারাথন কমিউনিটি “বান্দরবান হিল রানার্স” এর টিম জার্সি উন্মোচন করলেন নবাগত ইউএনও মারুফা সুলতানা খান হীরামনি বান্দরবানে মন্দির উৎসর্গ ও পঞ্চ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা উৎসব অনুষ্ঠিত রাজধানীর সোবহানবাগ থেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার গ্রেফতার ক্রীড়া উন্নয়ন ফোরামের শুভেচ্ছা উপহার পেলো প্রাথমিক ফুটবলের ক্ষুধে জেলা চ্যাম্পিয়নরা

লামার দূর্গম পাহাড়ে ঘাঁটি গেড়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী,হত্যা-ধর্ষণ-অপহরণ সহ নানা অপরাধ ঘটিয়ে চলে যায় মিয়ানমার


প্রকাশের সময় :২১ অক্টোবর, ২০১৭ ৯:৫৭ : অপরাহ্ণ 872 Views

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ-বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার দূর্গমে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হত্যা,ধর্ষণ,অপহরণ,চাঁদাবাজিসহ চলছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।এছাড়াও পাহাড়ি তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপের রয়েছে নিরাপদ ঘাঁটি।এসব ঘাঁটিতে নিয়মিত চলে অস্ত্র প্রশিক্ষণ।এ প্রশিক্ষণে যোগ দেয় মিয়ানমারের একটি উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী গ্রুপ।লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ত্রিশডেবা,গয়ালমারা,সরই ইউনিয়নের লেমু পালং,গজালিয়া ইউনিয়নের লুলাইং,সদর ইউনিয়নের পোপাখাল এবং রুপসীপাড়া ইউনিয়নের নাইক্ষ্যংমুখ, আলীয়াং বাবুপাড়া দূর্গম পাহাড়ি এলাকা।পায়ে হেঁটে ছাড়া যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা নেই।ওইসব এলাকার বাসিন্দারা পাহাড়ি তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে নিয়মিত চাঁদা দিয়েও নির্যাতন থেকে রক্ষা পান না।পিতা-মাতার সামনে থেকে তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে।তাদের এই পৈশাচিক কার্যক্রম নিয়মিত চলে।ওই এলাকায় প্রায় গলাকাটা বা মস্তকবিহিন লাশ পাওয়া যায়।এসব লাশ পাহাড়ি বাঙালিদের।সরেজমিনে এইসব দূর্গম এলাকায় গেলে পাহাড়ি ও বাঙ্গালীরা বলেন,স্বাধীন দেশে বসবাস করেও আমরা পরাধীন।তারা তিনটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। হত্যা,অপহরণ,গুম সেখানকার নিয়মিত ঘটনা। পাহাড়ি তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে মিয়ানমারের উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর যোগাযোগ থাকায় তারা উভয়েই দেশে নিয়মিত যাতায়াত করছে।এই উগ্রপন্থিরাও এই তিনটি এলাকার বাসিন্দাদের উপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।এলাকাবাসী এই অত্যাচার সম্পর্কে বলেন, আরাকান থেকে রোহিঙ্গাদের উপর যেভাবে নির্যাতন চালিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে তেমনিভাবে লামার এই তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ মিয়ানমারের উগ্রপন্থি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহায়তায় নির্যাতন চালাচ্ছে।এই এলাকার বাসিন্দারা এখান থেকে চলে গেলে পাহাড়ি তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ও মিয়ানমারের উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী গ্রুপ এই এলাকায় নিরাপদ প্রশিক্ষণ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।এ কারণেই বাসিন্দাদের উপর ধর্ষণ,হত্যা,গুম,অপহরণ ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে।এছাড়া উল্লেখিত এলাকার অনেক উপজাতি পুরুষরা দীর্ঘদিন কোথায় যেন হারিয়ে যায়। বেশ কয়েকদিন পরে আবার কোথায় থেকে যেন ফিরে আসে।বাসিন্দাদের অভিমত,এই এলাকায় নিরাপদ বসবাসের জন্য সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্ভব হবে না।স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তাও একই অভিমত ব্যক্ত করেন।বাসিন্দারা সেনা হস্তক্ষেপের জন্য প্রশাসনের শীর্ষ হস্তক্ষেপ কামনা করেন।লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন,গয়ালমারা, লেমুপালং ও পোপাখাল দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। পুলিশ সেখানে মাঝে মাঝে জীবন বাজি রেখে যায়।একটি ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন,ইতোমধ্যে একটি গলাকাটা লাশ উদ্ধার করতে থানা থেকে সকালে রওনা দিয়ে পুলিশ গয়ালমারা এলাকায় যায়।সঙ্গে তাদের টর্চলাইটসহ অন্যান্য সামগ্রী ছিল।প্রথমে তারা ৩৫ কিলোমিটার গিয়েছে চান্দের গাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায়।সেখান থেকে ২০ কিলোমিটার পথ হেঁটে ঘটনাস্থলে যায়।লাশ উদ্ধার করে পুনরায় থানায় পৌঁছতে ভোর হয়ে যায়।দুর্গম ও যাতায়াতে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুলিশের পক্ষে ওইসব এলাকায় নিয়মিত যাওয়া সম্ভব হয় না।ওইসব এলাকায় সংগঠিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পর্কে সকলেরই জানা বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।দেশের সার্বভৌমত্ব ও বাসিন্দাদের জীবন রক্ষার্থে সেনাবাহিনীর বিকল্প নেই বলে স্থানীয় প্রশাসনের কয়েক কর্মকর্তা জানান।তিনটি এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত নজরদারির বাইরে থাকায় মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ইয়াবা ও অস্ত্র আসছে বাংলাদেশে।এলাকাবাসী বলেন,নিয়মিত ইয়াবা ও অস্ত্রের চালানের দৃশ্য নীরব দর্শকের মতো দেখছি।পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সরই এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জন্য স্থানীয় জনসাধারণের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে মহামান্য হাইকোর্টের নিদের্শনা চেয়ে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।ফাঁসিয়াখালীর গয়ালমারায় সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জন্য স্থানীয় জনসাধারণ প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।গয়ালমারা এলাকা থেকে কিছুদিন পূর্বে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এক বাঙালি যুবতীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে।২৮৫নং সাঙ্গু মৌজার রুবেল ইসলাম, আব্দুর রহিম,নুরুল হুদা,নজরুল ইসলাম ও মানিক মিয়া জানিয়েছেন,পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের অব্যাহত চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের মুখে জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।পিএইচপি রাঙ্গাঝিরি রাবার বাগান ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম জানান,কয়েক শত রাবার শ্রমিককে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা বাগান থেকে নামিয়ে দিয়েছে।নির্ধারিত হারে চাঁদা দিতে না পারায় রাবার বাগানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বাগান মালিকদের হুমকি দিয়েছে।ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, গয়ালমারা,ত্রিশডেবা এলাকার গভীর অরণ্যে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নিরাপদে অবস্থান করেন।অ্যাডভোকেট মকবুল আহমদ নামক একজন আইনজীবী সরই এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি নিদের্শনা চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন।
লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন ও রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি সভায় একাধিকবার জানিয়েছেন, পোপা খালের আগার দুর্গম এলাকাগুলো পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা।কিছুদিন পূর্বে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পোপা খালের আগায় নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াদের নিমর্মভাবে পিটিয়ে আহত করেছে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
February 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!