
মানবিক সেবার অংশ হিসেবে বান্দরবান জেলা শহরে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় টানা ৭ম দিনের মতো ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড তথা বান্দরবান সেনা রিজিয়ন।গতকাল বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০ টায় বান্দরবান পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট বনানী সমিল ও অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে এই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন বান্দরবান সেনা রিজিয়ন তথা ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড এর মাননীয় ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জনাব খন্দকার মো.শাহিদুল এমরান এএফডব্লিউসি, পিএসসি।এসময় তিনি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এসব এলাকার ৩০০ পরিবারের হাতে ত্রাণ সামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেন এবং বন্যা দুর্গত পানিবন্দী নাগরিকদের খোঁজ খবর নেন।ত্রাণের প্রতিটি প্যাকেটে মুডি,চিড়া,চিনি,বিস্কিট এর মতো শুকনো খাবারের পাশাপাশি মোমবাতি,দেয়াশলাই,মিনারেল জার এর মতো অতি প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রী ছিলো।ত্রাণ বিতরণকালে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন (৬৯ পদাতিক ব্রিগেড) এর মাননীয় ব্রিগেড কমান্ডার খন্দকার মোহাম্মদ শহিদুল ইমরান এএফডব্লিউসি পিএসসি বলেন,বান্দরবান সেনা রিজিয়ন (৬৯ ব্রিগেড) তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চলমান বর্ষা,পাহাড়ি ঢল এবং যে কোন দুযোর্গপুর্ণ মুহুর্তে আর্তমানবতার সেবায় বেসামরিক প্রশাসনকে তাৎক্ষণিক সহায়তায় সার্বক্ষণিক পাশে ছিলো এবং আগামীতেও থাকবে।শান্তি সম্প্রীতি এবং উন্নয়ন এই মুলমন্ত্রকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন যাবৎ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছে।পাহাড়বাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা,চিকিৎসাসহ সকল সম্প্রদায়ের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।তিনি আরও বলেন,পাহাড়ের জনগনের জানমাল রক্ষা ও যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে,সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য তৎপর রয়েছে।এসময় তিনি ভয়াবহ এই বন্যার পানিতে যেসমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বইপত্র নষ্ট হয়ে গেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের পাশে থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করেন।এসময় বান্দরবান সেনানিবাসের বিএম মেজর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (পিএসসি),জি-২ মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন (পিএসসি),জি-৩ মোহাম্মদ সফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।ত্রাণ বিতরণ শেষে বান্দরবান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্যরা উক্ত এলাকার বন্যা আক্রান্তদের মাঝে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।এদিকে ত্রাণ সামগ্রী ও স্বাস্থ্য সেবা পেয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বনানী সমিল ও অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন এলাকাবাসীরা সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন এবং ভবিষ্যতেও বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁরা সেনাবাহিনীর সহায়তা পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেছেন।পাশাপাশি তাঁরা আরও বলছেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাধারণ জনসাধারনের জীবনযাত্রার সার্বিক মান উন্নয়নে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।সেনাবাহিনী সদস্যরা কোনও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব না হলেও প্রবল ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কখনও নৌ যোগে,কখনও কলার ভ্যালায় চড়ে কাদামাটির চরম দুর্গন্ধকে সঙ্গে নিয়ে যেভাবে ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছেন তাতে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষ সত্যিই অনেক আপ্লুত।