রোহিঙ্গাদের জন্য “সেফ জোন ইনসাইড রাখাইন” করতে চায় বাংলাদেশ


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ৮:২৭ : অপরাহ্ণ 662 Views

মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সে দেশের সরকার বারবার কথা দিয়েও কথা না রাখায় বাংলাদেশ সরকার নতুন কৌশলে এগোনোর পরিকল্পনা করেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ‘‘সেফ জোন ইনসাইড রাখাইন” করতে মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা নিশ্চিতে তাদের রাজি করানোর চেষ্টা করা হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।
২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে মিয়ানমারের সেনাদের অতর্কিত হামলায় রাখাইন রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ধর্ষিত হয়েছে কয়েক হাজার নারী থেকে কিশোরী। বর্মি সেনাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে রক্ষা পায়নি অবুঝ শিশুরাও। সেসময় জীবন বাঁচানোর তাগিদে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে প্রায় এগারো লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। প্রথম দিকে মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের বিরোধীতা করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ কূটনৈতিক কৌশলের কাছে নিজেদের কটু বক্তব্যগুলো বলা থেকে বিরত হয়। মানবাধিকারের নীতিতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নির্যাতনের পরিমান এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে, এই হামলাকে সমর্থন দেয়ায় মিয়ানমারের রাজনীতিতে অন্যতম নাম আং সান সুচির ‘শান্তিতে নোবেল’ পুরষ্কার কেড়ে নিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের জন্য “সেফ জোন ইনসাইড রাখাইন” করার জন্য শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী সচেষ্ট রয়েছেন। এরপর মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিবে জানালেও প্রায় বছর খানেক হতে চললো তারা তাদের দেয়া কথা রাখছে না।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ‘আমরা বিশ্বাস করেছিলাম যে তারা অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। তবে সে ব্যাপারে তারা খুব অগ্রসর হচ্ছে না৷ এই পরিস্থিতিতে আমরা চিন্তা করছি কীভাবে এর সমাধান করা যায়।’
বিষয়টি সমাধানের একাধিক পরিকল্পনা সরকারে আছে জানিয়ে নতুন এই মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চান একটি ‘‘সেফ জোন ইনসাইড রাখাইন” করতে৷ মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোই ওখানে তদারকি করবে৷ এটাতে আমার ধারণা হয়তো মিয়ানমার রাজি হবে৷’
আরও একটি সমাধানের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই সময়ে রোহিঙ্গাদের আমরা বিভিন্ন দেশে পাঠাতে পারি। তাদের বিভিন্ন কাজে নিয়োগের দেওয়ারও চিন্তা রয়েছে আমাদের৷ এরকম একাধিক পরিকল্পনা আছে আমাদের৷ তবে সবগুলোই নির্ভর করছে মিয়ানমারের অবস্থার ওপর৷ তারা কতটুকু সহনশীল হয়, তারা পৃথিবীর আইনগুলো কতটুকু মানে, তার ওপর৷’
রোহিঙ্গা সংকটে ভারত ও চীনের ভূমিকা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারত ও চীনের বিশেষ ভূমিকা রাখা উচিত৷ কারণ, মিয়ানমার চীনের কথা শোনে৷ আর এখানে কোনো অশান্তি বা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হলে ভারতসহ সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ এই অঞ্চলে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছি৷ আগামীতে এশিয়া হবে এই পৃথিবীর আকর্ষণ। ভারত, চীন, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড সবাইকে নিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হবে৷ তাদের বিশেষ ভূমিকা প্রয়োজন৷ বিশেষ করে ভারত ও চীনের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!