রফতানিতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম দেশের ওষুধ শিল্প


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ জুলাই, ২০২২ ১০:৩২ : অপরাহ্ণ 145 Views

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেছেন,ওষুধ খাতে আমাদের অর্জন অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক এবং দক্ষ মানবসম্পদের উপস্থিতির কারণে এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। বিশ^ব্যাপী বেশি হারে বায়োলজিক্যাল ড্রাগ উৎপাদনের প্রবণতা আগামীতে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বর্তমানে দেশের ব্যবহৃত মোট এপিআইর ১৫% স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়ে থাকে, তবে আরো বেশি হারে মূল্য সংযোজনের নিশ্চিতের বিষয়টি আমাদের জন্য অতীব জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশে তৈরী ওষুধের প্রশাধিকারের বিষয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী এবং একবার এটা করা সম্ভব হলে ওষুধ খাতের বৈশি^ক ইমেজ তৈরিতে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে এ খাতে প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি সম্ভব।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ওষুধ খাতের রফতানি : কৌশল নির্ধারণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। গতকাল ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ৮-১৫ শতাংশ শুল্ক প্রদান করতে হতে পারে, যার ফলে আমাদের মোট রফতানি ১৪.২৮% হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এর মূল্য প্রায় ৫.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থনৈতিক এ উত্তরণের পর ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশী পণ্যের মেধাস্বত্ব সুবিধা অব্যাহত থাকবে, তবে এ সময়কালের পর মেধাস্বত্ব আইনের আওতায় বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত না থাকার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানির ক্ষেত্রে আমাদের ওষুধখাতকে প্রবল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে, সেই সাথে কমবে রফতানি।

মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময়ে করোনা মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বেশকিছু বৈশি^ক সংকট দেখা দিয়েছে, যার কারণে এ বিষয়ে আমাদেরকে আরো সচেতন থাকতে হবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বেশি থাকায় আমাদের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, তৈরী পোশাক রফতানিতে আমরা আমাদের সক্ষমতা দেখিয়েছি এবং ওষুধ খাতসহ অন্যান্য খাতে এ সক্ষমতা বজায় রাখতে পারলে দেশের রফতানি উল্লেখজনক হারে বৃদ্ধি পাবে। এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ হতে বেসরকারি খাতকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জ¦ালানি সঙ্কটের কারণে দেশে বিদ্যুৎ খাতে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেসরকারি খাতসহ জনগণকে আরো সচেতন ও সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের অর্থনীতির জন্য ওষুধ খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেটি অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৯৭% উৎপাদন করতে সক্ষম, যার মূল্য প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ওষুধ খাতে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৮৮.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশের ওষুধ ও কেমিক্যাল খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ হলো ৪১৯.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ১.৯৪ শতাংশ। মোস্তাফিজ বলেন, গত অর্থবছর আমাদের ওষুধ খাত প্রায় ১০৫০.১ মিলিয়ন মার্কিন ডালারের কাঁচামাল আমদানি করছে, এমতাবস্থায় স্থানীয়ভাবে এপিআই উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর আরো মনোযোগী হতে হবে।

সেমিনারের নির্ধারিত আলোচনায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড.এ বি এম ফারুক এবং ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মোসাদ্দেক হোসেন অংশগ্রহণ করেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
July 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!