বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের নীতিমালা শিথিল, মেয়াদ পূর্তিতে ঋণ পরিশোধের অনুমোদন


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৭ অক্টোবর, ২০২০ ২:১৪ : অপরাহ্ণ 384 Views

বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের নীতিমালা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের চাপ কমাতে প্রতি তিন মাস অন্তর এসব ঋণ পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু এখন পরিশোধ করতে হবে ঋণের মেয়াদ পূর্তিতে। তবে একসাথে ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে চাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভিত্তিতে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিসংখ্যান মতে, শুধু স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণই দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা। বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেয়ায় একদিকে যেমন সুদে-আসলে মেয়াদ শেষে বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ বেড়ে যায়, অপর দিকে স্থানীয় ব্যাংকের উদ্বৃত্ত তারল্য বেড়ে যায়। এমনি পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণের হ্রাস টেনে ধরতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নীতিমালা কঠোর করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল, তিন মাস অন্তর ঋণ পরিশোধের নির্দেশনা। অর্থাৎ যে পরিমাণ ঋণ নেয়া হবে তা তিন মাস অন্তর পরিশোধ করতে হবে। প্রতি তিন মাস অন্তর বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ পরিশোধ করলে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ যেমন কমে যাবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার দায়ও কমে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, করোনার প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিকভাবে ঋণ পরিশোধ করতে পারছিলেন না। অনেকের বিরুদ্ধেই স্থানীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করে তা বৈদেশিক মুদ্রায় রূপান্তর করে ঋণ পরিশোধ করার অভিযোগ ওঠে। এমনি পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেয়ার জন্য তিন মাস অন্তর ঋণ পরিশোধের শর্ত রহিত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে জারি করা এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, সাপ্লায়ার্স/বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানির ক্ষেত্রে তিন মাস অন্তর দায় পরিশোধের ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হলো। অর্থাৎ এখন থেকে ব্যবসায়ীরা আগের মতো মেয়াদ পূর্তিতে ঋণ পরিশোধের সুযোগ পেলেন।
গতকাল দেয়া অপর দুইটি নির্দেশনায় উৎপাদনশীল খাত ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ আমদানির দায় পরিশোধের সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
আগে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী প্রভৃতি আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার অগ্রিম আমদানি মূল্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশনা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছিল। গতকাল তা ছয় মাস বাড়িয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। অপর দিকে উৎপাদনশীল পণ্য, কৃষি পণ্য ও রাসায়নিক সার আমদানির দায় পরিশোধের সময়সীমা ছয় মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৩৬০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রায় অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের আওতায় উপকরণাদি সরবরাহের বিপরীতে পরিশোধ কার্যক্রম ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে পরিচালিত এফসি ক্লিয়ারিং হিসাবের মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশনা শিথিল করে এডি ব্যাংকের নস্ট্রো হিসাবের মাধ্যমে সম্পাদনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অন্য একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সাপ্লায়ার্স/বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় গত সেপ্টেম্বরে স্থাপিত ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের দায় পরিশোধের জন্য রফতানি উন্নয়ন তহবিলের আওতায় ১৮০ দিন সময়ের জন্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতিমালায় ছাড় দেয়ায় ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, ব্যবসায়ীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতিমালায় উপকৃত হবেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
July 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!