নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ে পেঁপে চাষে সফলতার মুখ দেখেছেন চাষিরা


মো.আব্দুর রশিদ প্রকাশের সময় :২১ অক্টোবর, ২০২২ ৫:০০ : পূর্বাহ্ণ 387 Views

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ে ও পতিত জমিতে পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার মুখ দেখেছেন পাহাড়ি, বাংগালী কৃষকরা। বাজারে পেঁপের ব্যাপক চাহিদা ও ভালো দাম থাকায় কৃষকরা খুশি।এছাড়াও অল্প খরচে পেঁপের অধিক ফলন ও দামে বিক্রি করতে পারা যায় বলে দিন দিন পেঁপের চাষ বাড়ছে।

উপজেলার সোনাই ছড়ি ইউনিয়নের পেঁপে চাষি অংক্যাজাই মার্মা জানান রেডলিপ, শাহী, কাশ্মিরি, টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে হয়ে উঠেছেন স্বাবলম্বী।

সরেজমিন দেখা যায় যে, উপজেলার সদর ইউনিয়ন, সোনাইছড়ি, ঘুমধম, দৌছড়ি ও বাইশারীতে পেঁপে চাষে করে অনেকে সফল হয়েছেন। এছাড়াও আরো বিভিন্ন উপজেলার চাষিরা পেঁপে চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।

চাষিরা জানান, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর পেঁপের বাম্পার ফলন হয়েছে। পেঁপে বিক্রি করে লাভও বেড়েছে কয়েকগুণ। ফল ও সবজি হিসেবে পেঁপে বেশ জনপ্রিয়। পেঁপের সারা বছরই চাহিদা থাকে। আগে পেঁপে বাড়ির আঙিনায় চাষ হলেও বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হচ্ছে। প্রতি মণ সময় ভেদে ৬’শ থেকে প্রায় ১৪’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এই পেপেঁ । চাষিরা পেঁপে বিক্রি করে সংসারের চাহিদা মিটিয়ে টাকা জমিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে বলে ও জানান।

উপজেলার সোনাই ছড়ি ইউনিয়নের লামার পাড়া গ্রামের মংচানু মার্মা বলেন, আমি ২ একর একর জমিতে পেঁপের চাষ করছি। প্রতিটি গাছেই পেঁপের ফলন এসেছে। প্রতিটা পেঁপে গাছে প্রায় ৫-৭ মণ পেঁপে ধরে। আমার বাগানে শাহী, কাশ্মিরি, টপ লেডি জাতের ৯ শতাধিক পূর্ণবয়স্ক পেঁপে গাছ রয়েছে। বাগান থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কেজি ওজনের পেঁপে সংগ্রহ করছি। এবছর আরো ৫’শ মণ পেঁপে বিক্রি করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, আমি নিজে বাগান করার পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় ফ্রি পেঁপে চারা লাগিয়ে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি। আগামীতে আরো বেশি জমিতে পেঁপের চাষ করবো।
পার্শ্ববর্তী রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের পেপে চাষী জসিম উদ্দিন বলেন তিনি ২ একর জমি ২৫ হাজার টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য লীজ নিয়ে গত ৮ মাস আগে ২০০০ চারা রুপন করেছেন। এখন ফল ও ফুলে ভরপুর। চারা লাগিয়েছেন হাই ব্রিড রেড লেডি জাতের। খরচ হয়েছে ৫ লাখ টাকার মতন। বর্তমানে দেড় লাখ টাকার পেপে বিক্রি করছেন। তিনি আশা করছেন খরচ পুষিয়ে তার ৪ লাখ টাকা আয় সম্ভব।
নিজের বিবেচনায় সব কিছু বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে তিনি করেছেন। কোন ধরনের সরকারী সহযোগিতা পাননি তিনি। একবার তিনি উপসহকারী কৃষি অফিসার কে পরামর্শ নেওয়ার জন্য নিয়ে আসছিল বাগানে । তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে তিনি আরো সফলতা অর্জনে সক্ষম হত বলে জানান।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বলেন,এই উপজেলায় অনেকগুলো পেঁপের বাগান রয়েছে। চাষিরা বাগানে খুব পরিশ্রম করছেন। পেঁপের চাষ আরো ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার এনামুল হক বলেন, বর্তমানে ধান চাষে খরচ বেশি হওয়ায় চাষিরা বিভিন্ন সবজি, ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তাদের পড়ে থাকা পতিত জমিগুলো ও পাহাড়ের ঢালুতে পেঁপের চাষ করে চমক দেখাচ্ছেন চাষিরা। বর্তমানে চাষিরা ডলিপ, শাহী, কাশ্মিরি, টপলেডি জাতের পেঁপে চাষে অনেক সফল হয়েছেন।তিনি আরো বলেন,আমরা পেঁপে চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের উৎসাহিত করছি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!