বান্দরবানে শিশু বলাৎকারের দায়ে ১ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১:২০ : পূর্বাহ্ণ 346 Views

তিন বছরের বালক শিশুকে বলাৎকারের দায়ে মো. শরিফুল ইসলাম (১৮) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বান্দরবানের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এই রায় দেন।আদালত সূত্রে জানা যায়,আলীকদম উপজেলার চেক্ষ‌্যং ইউ‌নিয়‌নের কর্বারী পাড়া ৬ নম্বর ওয়া‌র্ডের বাসিন্দা মামলার বাদী মো.জিয়াউর রহমান কর্তৃক আ‌নিত অভিযোগের সাক্ষ্যপ্রমাণ ও আসামীর স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী ও অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় মামলার আসামী মো.শরিফুল ইসলাম (১৮) কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সা‌লের সংশোধনী ২০০৩ সা‌লের ৯ এর ১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার ১ টাকা অর্থদন্ড,অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়।

মামলার বিবরণীতে আরও জানা যায়,গত ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের ১৪ তারিখ বিকাল সাড়ে ৫ টায় মামলার বাদী শিশু ছে‌লে‌টি খেলা করার সময় ফুসলিয়ে বাড়ির পিছনে নুরুল আলম সদাগরের নির্মাণাধীন ৪ কক্ষ বিশিষ্ট ঘরের ভেতরে আসামি মো.শরিফুল ইসলাম (১৮) শিশু মো.জেয়াবুল (৩)কে জোরপূর্ব গলা চেপে ধরে তার পায়ুপথে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনা দিন শিশু জেয়াবুলের মা রোকেয়া বেগম তার ছেলেকে ঘরে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। পরে হঠাৎ ঘটনাস্থল থেকে ‌জেয়াবু‌লের মা তার ছে‌লের (গোগড়ানো) কান্নার শব্দ পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে শিশু জেয়াবুলকে আসামী শ‌রিফুল ইসলাম ছেড়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ক‌রে।

তখন বাদী আসামী‌কে তার ছেলেকে পায়ুপথে ধর্ষণের কারণ জিজ্ঞাসা করলে বাদীর ছেলে জেয়াবুল আসামি শরিফুল ইসলাম তার পায়ুপথ দিয়ে ব্যাথা দিয়েছে বলেন।তখন তার মা পায়ুপথ রক্তাক্ত অবস্থায় এবং তার পরনের প্যান্টে পায়খানা দেখতে পায়।

এ সময় বাদীর স্ত্রী ছেলেকে এমন ভাবে ধর্ষণ করার বিষয়টি বললে আসামি দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মামলার বাদী তার ছেলেকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় আজাহার দায়ের করেন।

এ মামলায় ১৯৯৮ এর ১৬১ ধারায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখের অভিযোগ পত্র ৫৩ মূলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর সংশোধিত ২০০৩ এর ৯ এর ১ ধারায় পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করেন। পরে আদালতে অভিযোগ প্রক্রিয়া সমাপ্তির পর রাষ্ট্রপক্ষের ১১ জন সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই রায় দেন।

এ বিষয়ে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট বাসিং থুয়াই মারমা বলেন,২০১৯ সালে একটি বালক শিশুকে বলৎকারের ব্যতিক্রমধর্মী মামলায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সা‌লের সংশোধনী ২০০৩ সা‌লের ৯ এর ১ ধারায় পুলিশ চার্জ গঠন করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে একটি ৩ বছরের বালক শিশুকে বলাৎকার করা হয়েছে।এই প্রেক্ষিতে আসামি মো.শরিফুল ইসলাম (১৮) কে বিজ্ঞ আদালত দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার ১ টাকা অর্থদন্ড,অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন,নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত বিষয়ে খুবই কঠোর।আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ মামলার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতকে সহযোগিতা করেছি।এ রায়টি হচ্ছে এ আদালতের দ্বিতীয়তম রায়।এই রায়ের মাধ্যমে সমাজের কাছে আমরা একটি মেসেজ পৌঁছে দিতে চায় ধর্ষণকারী নারী নির্যাতনকারীদের এই সমাজে কোন স্থান নাই।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!