![](https://www.chttimes.com/wp-content/uploads/2023/03/FB_IMG_1679990617993.jpg)
![](https://www.chttimes.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
বান্দরবান জেলা সদরের একটি অনাথালয় চত্বরে রাত নামলেই পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।এভাবে দুই সপ্তাহ ধরে প্রতি রাতেই বান্দরবান বৌদ্ধ অনাথালয়ের ভেতর চলছে এক্সক্যাভেটর দিয়ে নির্বিচারে পাহাড় কাটা।পাহাড় কাটার মাটি ট্রাকযোগে জেলা সদরের উপশহর বালাঘাটা এলাকায় একটি নিচু স্থান ভরাট করা হচ্ছে।গতকাল সরজমিন তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর, বান্দরবান।জড়িতদের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট মামলা করা হয়বে।মঙ্গলবার দৈনিক বণিক বার্তার একটি প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
এঘটনায় পুলিশ জানায়,পাহাড় কাটার খবর পেয়ে রোববার রাত সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে যায় বান্দরবান সদর থানার পুলিশ। বষয়টি জানাজানি হলে ওই রাতেই জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে যান।সেখানে বৈধ নম্বরপ্লেটবিহীন পাঁচটি ডাম্পার ট্রাক ও দুটি এক্সক্যাভেটর অনাথালয় ছাত্রাবাসের উঠানে পাওয়া গেছে।সদর থানার এসআই আবদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান,মধ্যরাত হওয়ায় গাড়িগুলো কারো জিম্মায় রাখা সম্ভব হয়নি।তবে প্রথম গেটটি তালা লাগিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়,দুই সপ্তাহের বেশি প্রতি রাতে অনাথালয়ের পাহাড় কাটা চলছিল।ইয়াসিন নামের এক যুবকের অধীন অবৈধভাবে পাহাড় কাটার কাজ চলছে।প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত দুটি এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাহাড় কাটার কাজ চলে।একই সঙ্গে রাতের মধ্যেই আটটি ডাম্পার ট্রাক দিয়ে মাটি সরবরাহ ও বিক্রি করা হয়।পাহাড় কাটার মাটি দিয়ে বালাঘাটার কাঠ ব্যবসায়ী শহীদ মাস্টারের কাঠের ডিপোর নিচু স্থান ভরাট করা হচ্ছে।রোববার রাতে পুলিশ আসার খবর পেয়ে চালকরা বান্দরবান বৌদ্ধ অনাথালয় ছাত্রাবাসের সামনে গাড়িগুলো রেখে পালিয়ে যান। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর চালকরা এসে সাদা রঙের একটি এক্সক্যাভেটরসহ পাঁচটি ট্রাক অনাথালয়ের দ্বিতীয় গেট দিয়ে অন্যত্র নিয়ে যায়।পুলিশ তালা লাগানোয় প্রথম গেট সারা রাত বন্ধ ছিল।তুলনামূলক ছোট হওয়ায় দ্বিতীয় গেট দিয়ে বের করতে না পেরে বাধ্য হয়ে সাদা রঙের এক্সক্যাভেটরটি বান্দরবান বৌদ্ধ অনাথালয়ের অভ্যন্তরে দক্ষিণ দিকের একটি ছাত্রী নিবাসঘেঁষে রাখা হয়।গতকাল সরজমিন দেখা যায়,ওই ছাত্রাবাসের সামনে হলুদ রঙের একটি এক্সক্যাভেটর।স্থানীয়দের তথ্যানুযায়ী সাদা রঙের এক্সক্যাভেটরটিরও দেখা মিলেছে।
এদিকে নিজের কাঠের ডিপোয় মাটি ভরাটের বিষয় স্বীকার করে উপশহর বালাঘাটা এলাকার শহীদ মাস্টার বলেন, ‘আমার ডিপোয় ২০-২৫ গাড়ি মাটি ভরাট করা হয়েছে।এছাড়া আরো দুই-তিন স্থানে মাটি ভরাট করা হচ্ছে।’ তবে কোথায় ভরাট করা হচ্ছে তা তিনি জানাননি।গতকাল ঘটনাস্থল তদন্ত শেষে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট আবদুছ ছালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবৈধভাবে আনুমানিক ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্য,৩০ ফুট প্রস্থ ও প্রায় ৪০ ফুট উঁচু পাহাড় কাটা হয়েছে।যেখান থেকে প্রায় দেড় লাখ ঘনফুট পাহাড়ের মাটি সরানো হয়েছে। পাহাড় কাটছিল ইয়াসিন নামের এক যুবক। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।’ এ বিষয়ে বান্দরবান বৌদ্ধ অনাথালয়ের বিহারাধ্যক্ষ তিক্ষিন্দ্রীয় থেরো’র সেলফোনে একাধিক কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।তবে সেলফোনে কথা হলে অভিযুক্ত ইয়াসিন বলেন, ‘পাহাড়টা আমার না,পাহাড় কাটার জন্য আমি এক্সক্যাভেটর দিয়েছি।’
সার্বিক বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী।তিনি বলেন, ‘অনাথালয়ের ছাত্রাবাসে যাওয়ার সড়ক প্রশস্ত করতে দিয়েছিলেন, কিন্তু নজরদারি না থাকায় ইয়াসিন বেহিসাবি পাহাড় কেটে ফেলেছে।এইজন্য ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন অনাথালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিক্ষু তিক্ষিন্দ্রীয় থেরো।এ ঘটনায় তাদের দুজনের নামে এনফোর্সমেন্ট মামলা করা হবে।’ এদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে কুলসুম সিএইচটি টাইমস ডটকম কে জানিয়েছেন,এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।