![](https://www.chttimes.com/wp-content/uploads/2019/04/screenshot2019-04-19-13_54_06.jpg)
![](https://www.chttimes.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
৪০০ বছর হতে চললো ঢাকার বয়স। এর মধ্যে গঠিত হয়েছে ঢাকার নতুন একটি অংশ। কিন্তু আগের মতোই রয়ে গেছে ঢাকার আদি অংশ। ঢাকার এই অংশে বসবাসকারী মানুষ আবার নতুন ঢাকায় বসত গড়তে চান না। আর চাইলেও তা নিতান্তই কম। জীবন নির্বাহের জন্য তারা গড়ে তুলেছেন বাসার পাশে কিংবা বাসার মধ্যেই বিভিন্ন পণ্যের দোকান। সাথে কেমিক্যালের কারখানা। আর এতে করে পুরান ঢাকায় তৈরি হয়েছে ঘিঞ্জি পরিবেশ। যত্রতত্র দোকান ও কারখানা স্থাপন করার কারণে বেশ কয়েকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ঢাকার এই অঞ্চলে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস পৌঁছালেও আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাদের। চিকন গলি, রিকশার জট ও লাগোয়া বিল্ডিং থাকায় বেশ সময় লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। এতে করে সরকার কেমিক্যালের গোডাউন সরানোর জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও স্থানীয়দের বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত সরাতে পারেনি।
এর আগে সরকার পুরান ঢাকার কেমিক্যালের গোডাউন ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় সরানোর উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় এলাকাটি জনবহুল হওয়ায় তা আর সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। তবে কেরানীগঞ্জ বাদ দিয়ে নতুন করে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ৩১০ একর জমির উপর এই কেমিক্যাল পল্লী তৈরি করা হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৩১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১৭৮ দশমিক ৯০ বর্গমিটার অফিস ভবন নির্মাণ, ৪৬ দশমিক ৫০ বর্গ মিটার পাম্প ড্রাইভার কোয়ার্টার, ২টি মেইন গেট, একটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট, ৫ হাজার ৭৩০ মিটার শিল্প নগরীর সীমানা প্রাচীর, ৩২৬ বর্গফুট পুলিশ ফাঁড়ি, ৩টি নলকূপ স্থাপন, ৩১ হাজার ৩২৫ মিটার পানির লাইন, ৩১ হাজার ৯৪০ মিটার বিদ্যুৎ লাইন, ৬ হাজার মিটার গ্যাস লাইন, দুটি জেটি নির্মাণ, একটি সিইটিপি ও ডাম্পিং ইয়ার্ড ও ইনসিনেরেটর এবং ১৮৫ দশমিক ৮৬ বর্গমিটার পুকুর পাড়ে প্যালাসাইটিং নির্মাণ।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করার কাজ করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে কেমিক্যাল পল্লিতে ২ হাজার ১৫৪টি প্লট তৈরি করা হবে। ফলে ঢাকা মহানগরীর বিশেষ করে পুরনো ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা ও গোডাউনগুলো একটি পরিবেশবান্ধব এবং অপেক্ষাকৃত কম জনবহুল স্থানে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে। এ জন্য সকল প্রকার অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি কেমিক্যাল পল্লি গড়ে তোলা হচ্ছে। যেখানে প্রায় ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) অবদান রাখবে।
অন্যদিকে যতদিন এই কেমিক্যাল পল্লি স্থাপন না হচ্ছে ততদিন পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করতে অস্থায়ী ভিত্তিতে স্থাপন করা হচ্ছে ৫৪টি কেমিক্যাল গোডাউন। পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে অধিক সচেতনতার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।