এই মাত্র পাওয়া :

প্রিয়া সাহার অভিযোগ বনাম বাস্তবতা


সিএইচটি টাইমস অনলাইন প্রকাশের সময় :২১ জুলাই, ২০১৯ ৫:১১ : অপরাহ্ণ 638 Views

প্রিয়া সাহা।বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে দেশে বিদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশিদের মাঝে প্রিয়া সাহা বেশ আলোচিত এবং সমালোচিত নাম।সম্প্রতি ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ১৬টি দেশের সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের শিকার হওয়া মানুষদের কয়েকজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল হোয়াইট হাউসে।গত ১৬ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন তারা।সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের শিকার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ‘নাই’ (ডিসএপ্যায়ার্ড) হয়ে গেছে। প্রিয়া সাহার এমন জঘন্য মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ।অনেকেই প্রিয়া সাহার এই অভিযোগকে বাংলাদেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করছেন।গত এক দশকে সারা বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় যেসব দেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছে তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহার এমন মিথ্যাচারের পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার।রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধ মন্দিরে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,বাংলাদেশি সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে প্রিয়া সাহা যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক নয়।বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমার প্রথম ৮ মাসের দায়িত্ব পালনকালে আমি বাংলাদেশের আটটি বিভাগেই ঘুরেছি।মসজিদ,মন্দির ও চার্চে গিয়ে ইমাম পুরোহিতদের সঙ্গে কথা বলেছি।এখন আমি এসেছি একটি বৌদ্ধ মন্দিরে,আমার কাছে যেমনটা মনে হয়েছে,এখানকার ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বাসের লোকজন একে অপরকে শ্রদ্ধা করে।তাই আমি মনে করি, তার অভিযোগ সঠিক নয়,বরং ধর্মীয় সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য নাম।বাংলাদেশর ১০০ ভাগের মাত্র ৮/৯ ভাগ হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও কখনো মুসলিম দ্বারা সরাসরি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায় তার নজির নেই বললেই চলে।তবে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালীদের দ্বারা জমি দখল,বাড়ি উচ্ছেদ এবং মন্দির দখলের ঘটনা মাঝে মধ্যে শোনা গেলেও তা ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে,সাম্প্রদায়িকতার জন্য নয়।মন্দির শুধু নয় বাংলাদেশে মসজিদ ও দখল হচ্ছে।বাংলাদেশে এমনও নজির রয়েছে সরকারী চাকুরীতে মুসলমানদের চেয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে বেশি মুল্য দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ ৩৩ ভাগ, যেখানে সংখ্যালঘুরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ। এছাড়া বর্তমান সরকার ২০০৮ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে চলেছে। সংখ্যালঘুদের জীবনমান উন্নয়নে ও তাদের ধর্মকর্ম স্বাধীনভাবে পালনের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দও দেওয়া হচ্ছে সরকারিভাবে। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবে সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কুশল বিনিময় করেন, যা বিশ্বে অনন্য নজির।পরিশেষে কোনো প্রকার যৌক্তিক তথ্য উপাত্ত ছাড়া বিদেশের কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে নিজের দেশ সম্পর্কে এমন মিথ্যাচার রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। প্রিয়া সাহার এমন মিথ্যাচারের ফলে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ প্রিয়া সাহার এই রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধের জন্য তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
October 2025
MTWTFSS
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930 
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!