এই মাত্র পাওয়া :

চলে গেলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আশরাফ


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ৩:১৮ : অপরাহ্ণ 764 Views

সরকার গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলো। আগামী রোববার থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে সরকার গঠনের কাজ। আর নতুন সরকার গঠনের সেই কাজের শুরুর কাজটা হয়ে গেলো গত বৃহস্পতিবার নির্বাচিত প্রার্থীদের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে। অতি শীঘ্রই শুরু হবে একাদশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রম। সেই সংসদে যেমন থাকবেন মাশরাফী মর্তুজা, নিজাম উদ্দিন জলিল জনের মতো তরুণরা ঠিক তেমনি থাকবেন শেখ হাসিনা, মোহাম্মদ নাসিম, মতিয়া চৌধুরীর মতো অভিজ্ঞ ও প্রবীণ রাজনীতিবিদরা। এদের অনেকেই আবার মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেবেন। তবে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত যারা মন্ত্রিসভায় থাকবেন না তাদের সবার সাথে সবার দেখা মিলবে একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনে। শুধু দেখা যাবে না একজনকে। তিনি হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ আশরাফ থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং বৃহস্পতিবার রাতে সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুক্তিযোদ্ধা, রাজপথের লড়াকু সৈনিক এবং জনমানুষের নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছিল এক সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে এই মহান নেতার জন্ম হয়। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই আশরাফুল ইসলামের ছিল রাজনীতির সাথে উঠাবসা। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মূলত বাবার হাত ধরেই তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি। ১৯৭০ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ–সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। একদিকে পিতা যখন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অন্যদিকে আশরাফুল ইসলাম বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মাঠে থেকে লড়েছেন বীরত্বের সাথে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান। কিন্তু প্রবাসে জীবন যাপনকালেও থেমে থাকেনি তাঁর রাজনৈতিক পথচলা। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে কিশোরগঞ্জ- ১ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ এবং সবশেষে ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর বলিষ্ঠ রাজনৈতিক জীবনে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আনিসুল হক, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ নাসিম, রাশেদ খান মেননসহ অনেকেই। এদিকে মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সব কর্মসূচি স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার বাদ জুম্মা সব সাংগঠনিক ইউনিটকে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2025
MTWTFSS
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আলোচিত খবর