গুলিস্তানে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে হকার উচ্ছেদ


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:৩৩ : অপরাহ্ণ 84 Views

পদ্মা সেতু চালুর পর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচল বেড়েছে। সে কারণে গুলিস্তানে ফ্লাইওভার যেখানে নেমেছে, তার সামনের সড়কে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ওই এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার ওই এলাকার গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট (নূর হোসেন চত্বর) থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হয়ে আহাদ পুলিশ বক্স পর্যন্ত হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে।

আজ বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অভিযান চালিয়ে ওই এলাকা থেকে হকারদের পাশাপাশি ফুটপাতে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। অভিযান শেষে সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান বলেছেন, ‘গত তিন দিন এখানে টানা মাইকিং করা হয়েছে। আমরা এখানে কোনো হকার বসতে এবং কাউকে অবৈধভাবে দোকানপাট ও স্থাপনা নির্মাণ করতে দেব না। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

মুনিরুজ্জামান জানান, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচল ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের নির্দেশনায় গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হয়ে সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স এবং বঙ্গভবন ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারগামী ও ফ্লাইওভার থেকে গুলিস্তান চত্বর এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে।

মেয়র ফজলে নূর তাপস গত বুধবার তাঁর সিটির আওতাধীন এলাকার কোন সড়কে হকার বসতে পারবে আর কোন সড়কে বসতে পারবে না, তা নির্দিষ্ট করতে এই রেড জোনের ধারণা দেন। তিনি বলেছিলেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রেড জোন হিসেবে বিবেচিত হবে। এগুলো লাল চিহ্নিত থাকবে। রোববার (আজ) থেকে এখানে আর হকার বসতে না দেওয়া হবে না।

মেয়রের ওই ঘোষণা অনুযায়ী আজ অভিযান চালিয়ে হাজারো হকার উচ্ছেদ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রায় ছয় বছর আগেও এ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গুলিস্তান এলাকায় হকার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সময়ে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে গুলিস্তানে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গিয়ে হকারদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছাত্রলীগের দুই নেতা ফাঁকা গুলিও ছুড়েছিলেন।

হকারদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মচারী ও ছাত্রলীগ নেতাদের সংঘর্ষের পর সাঈদ খোকন ঘটনাস্থলে গিয়ে সংবাদিকদের বলেছিলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এতে কেউ বাধা দিলে কঠোরভাবে তাদের দমন করা হবে। কিন্তু এর কয়েক দিন পরই পরিস্থিতি আবার আগের মতো হয়ে যায়।

সেই স্মৃতি মনে করে অনেকে এবারের উচ্ছেদের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কিত। তাঁরা বলছেন, গুলিস্তান এলাকায় ফুটপাত দখলমুক্ত হলে আশপাশের এলাকায় যানজট কমে যাবে। এবার অভিযানে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় কি না, তা দেখতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে এবার হকারদের পুনর্বাসনে গুলিস্তান এলাকায় ১০ তলা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ বিপণিবিতান নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত বুধবার এ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মেয়র ফজলে নূর তাপস।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সড়কগুলোকে লাল রঙের পাশাপাশি হলুদ ও সবুজ রঙে চিহ্নিত করবে। হলুদ রঙের সড়ক হকারদের আংশিক উন্মুক্ত থাকবে। আর সবুজ রঙের সড়কের পাশে হকাররা প্রয়োজন অনুযায়ী বসতে পারবেন। এ আলোকে সড়কগুলোকে চিহ্নিত করতে রোববারই পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মুখপাত্র মো. আবু নাছের জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ কমিটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রণীত মহাপরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় রেখে রাস্তা ও হাঁটার পথ যানবাহন ও জন চলাচলের জন্য নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনা করবে।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

error: কি ব্যাপার মামা !!