কর্মসংস্থান তৈরিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে সরকার


সিএইচটি টাইমস ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ৩:০০ : অপরাহ্ণ 642 Views

জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশবাসীকে একটি এক স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়েছিলেন। আর পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা সেই যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ও অনুন্নত দেশটির রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতার দায়িত্বে আসার পর গত টানা দশ বছরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থান থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে এসেছে।

যেখানে গত এক দশক ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৬ শতাংশের ওপরে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ অতিক্রম করে ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাম্প্রতিক সময়ের বিশ্লেষণে বলছে বাংলাদেশের ভবিষ্যত অর্থনীতি শক্তিশালী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যারমধ্যে অন্যতম ও প্রধান চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে ‘বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে যে ধরণের বাণিজ্য–সুবিধা পেয়ে থাকে, পাকাপাকিভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে গেলে সেসব সুবিধা হারাবে।’ গবেষকরা বলছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অধীনে ২০৩০ সাল নাগাদ বেশ কিছু কঠিন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত লক্ষ্য অর্জনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর সঙ্গে লক্ষ্য রয়েছে ২০৩০ সাল নাগাদ একটি উচ্চ–মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বিশ্বের কাতারে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জগুলো অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাকা আরও গতিশীল করা এবং প্রবৃদ্ধির সুফল সবার মধ্যে বণ্টনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সুশাসনের উন্নতি, ব্যাংকিং খাত, শেয়ারবাজার, কর অবকাঠামো এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংস্কারের চ্যালেঞ্জ গহণ করেছে বলে এর আগেই জানিয়েছে সরকারের একটি মহল।

গবেষকরা বলছেন, ওই লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের জন্য প্রবৃদ্ধির গুণগত মানের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উর্ধ্বগতির সঙ্গে প্রবৃদ্ধির গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। কর্মসংস্থান এবং বৈষম্য এই দুটি বিষয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুণগত মানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এটি উদ্বেগের বিষয় যে এক দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উর্ধ্বমুখী হওয়া সত্ত্বেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য বেশি নয়। যেখান থেকে সরকারের বের হয়ে আসাটা একটা বড় চ্যালেঞ্চ।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় উদ্বেগের জায়গা হিসেবে গবেষকরা চিহ্নিত করছেন, শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণে এক ধরণের স্থবিরতা এবং পোশাক খাত ছাড়া অন্য কোনো শিল্প খাতে এখনো বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিকের কাজের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়াকে।

গবেষকদের মতে, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চালক। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ থাকে। এক দশকে পরিমাণের দিক থেকে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বেড়েছে। তবে জিডিপির অনুপাতে এ খাতের বিনিয়োগ এক ধরণের স্থবির অবস্থায় রয়েছে। কারণ অবকাঠামোগত সমস্যা, ঋণের প্রাপ্যতার অভাব, ঋণের উচ্চ সুদের হার, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা এবং অর্থনৈতিক নীতির সংস্কারের অভাব রয়েছে এ খাতে।

প্রবৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দুই অঙ্কের ঘরে নিতে হলে বিনিয়োগের হার জিডিপির অনুপাতে বর্তমানে ৩১ শতাংশ থেকে প্রায় ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের হার জিডিপির অনুপাতে বিদ্যমান ২৩ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশের ওপরে নিতে হবে। যা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
May 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!