করোনার নমুনা সংগ্রহে ‘ভিটিএম কিট’ তৈরি হলো দেশে


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ মে, ২০২০ ১০:৪৫ : অপরাহ্ণ 373 Views

করোনাভাইরাস শনাক্তে নমুনা সংগ্রহের জন্য ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া (ভিটিএম) কিট তৈরি হয়েছে দেশে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ডেজিগনেটেড রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্ট (ডিআরআইসিএম) এ কিট তৈরি করে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৭ মে ডিআরআইসিএমকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, এই কিট দিয়ে তারা পরীক্ষা করে আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছে। এ জন্য এই কিট নমুনা সংগ্রহে ব্যবহার করতে চায় অধিদপ্তর।

এ রকম পাঁচ হাজার কিট আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ডিআরআইসিএম। তবে এরপর সেগুলো কিনে সংগ্রহ করতে হবে। একেকটি কিটের দাম পড়বে গড়ে দুই শ থেকে আড়াই শ টাকা। বর্তমানে নমুনা সংগ্রহের কিট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। একেকটি কিটের দাম পড়ছে ৪৩০ টাকা থেকে সাড়ে চার শ টাকা।

ডিআরআইসিএমের পরিচালক মালা খানের নেতৃত্বে এই কিট তৈরি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির একদল গবেষক। ১২ জন সদস্য মিলে এই কাজটি করেছেন। এর মধ্যে চারজন বিজ্ঞানী রয়েছেন। মালা খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন এ রকম পাঁচ হাজার কিট তৈরি করার সক্ষমতা আছে তাঁদের।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ভিটিএম হচ্ছে লবণ, প্রোটিন ও অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয়ে তৈরি এক বিশেষ ধরনের সল্যুশন বা দ্রবণ, যার মাধ্যমে ভাইরাস সংগ্রহ, ট্রান্সপোর্ট এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায়।

মালা খান প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এই কিট করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে আনার সময় নমুনা সংরক্ষণ জরুরি। এই ভিটিএম কিটে সংগৃহীত নমুনা ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সহজেই তিন দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে নমুনা বাতিল হওয়া বা বাতিলের কারণে একই নমুনা একাধিকবার সংগ্রহ করার দীর্ঘ প্রক্রিয়াটিও এড়ানো সম্ভব। এই কিটে নমুনা খুব সঠিকভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব।

ডিআরআইসিএম জানিয়েছে, কিটটিতে সল্যুশন রাখার জন্য টিউব নির্বাচন করা হয় বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে। টিউবটি হালকা। সহজে এক হাতে ধরে রাখা যায়। এতে রাবার স্টপার্স–সংবলিত মুখ থাকায় চুইয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই। এ ছাড়া কিটটিতে নমুনা সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত সোয়াব স্টিক দেওয়া হয়েছে। রয়েছে একটি ‘ট্যাং হোল্ডার’, যা ব্যবহার করে সহজেই ডিপ থ্রট থেকে নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব। কিটটিতে ছবিযুক্ত একটি নির্দেশনালিপি দেওয়া হয়েছে, যাতে মাঠপর্যায়ের কর্মীরা সহজেই অনুসরণ করতে পারবেন।

গবেষক দলের প্রধান মালা খান বলেন, করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের জন্য দেশে এই কিট প্রথম তৈরি হলো। এখন প্রতিদিন পাঁচ হাজার কিট তৈরি করার সক্ষমতা থাকলেও প্রয়োজন হলে সুবিধা বাড়িয়ে সংখ্যাটি আরও বাড়ানো সম্ভব। এটি ব্যবহার করলে আমদানিনির্ভরতা যেমন কমবে, তেমনি খরচও কম। এই কাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ও সচিব এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম উৎসাহ দিচ্ছেন এবং বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ নিয়মিত তদারক করছেন বলে জানান মালা খান।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
September 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!