আইএমএলআইয়ের তথ্য: জিয়া পরিবারের ৩ সদস্যের অ্যাকাউন্টে ২ মাসে ২৫০ কোটি টাকা জমা


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ৫:২০ : অপরাহ্ণ 725 Views

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে অর্থাৎ নভেম্বর-ডিসেম্বরে জিয়া পরিবারের তিন সদস্যের অ্যাকাউন্টে অন্তত ২৫০ কোটি টাকা জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ পাচার তদারকি করা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল মানি লন্ডারিং ইন্টেলিজেন্স (আইএমএলআই)। সম্প্রতি তাদের একটি প্রতিবেদনে এমন একটি তথ্য উঠে এসেছে।

আইএমএলআইয়ের ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের নভেম্বর এবং ডিসেম্বর- এই দুই মাসে জিয়া পরিবারের তিন সদস্যের নামে চারটি দেশে ২৫০ কোটিরও বেশি টাকা জমা পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে সংগৃহীত টাকা তারেক রহমান তার নিজের অ্যাকাউন্টে না রেখে অন্যান্য অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছেন। যাদের নামে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। যে চারটি দেশে এই বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে তা হলো সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং দুবাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এই বিষয়ে তদন্ত শেষ করে একটি রিপোর্ট ইন্টারপোলের কাছে জমা দেয়া হবে। রিপোর্টের উপর নির্ভর করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে ইন্টারপোল। অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানের নামে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে নভেম্বর মাসের ১৯ তারিখে বাংলাদেশি টাকায় ১৭ কোটি টাকা জমা হয়েছে, অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ডিসেম্বরের ১ তারিখে বাংলাদেশি ৮ কোটি টাকা জমা পড়েছে। অবশ্য ব্যাংকের স্টেটমেন্টে দাবি করা হয়, জমাকৃত অর্থ ব্যবসায়িক মুনাফার অংশ। যদিও শর্মিলা রহমান সিঁথি কোন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সেটি স্পষ্ট জানাতে পারেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে ব্যাংকক, পরে মালয়েশিয়ায় গেলে সেখানেই আরাফাত রহমান কোকো ও শর্মিলা রহমান বসবাস শুরু করেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে কোকোর মৃত্যুর পর শর্মিলা রহমান তার দুই সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমান। সেখানে তার সন্তানরা পড়াশুনা করছে। এদিকে হঠাৎ করে একজন বিধবা মহিলার দুই অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ কীভাবে এলো সেটা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক নানা মহলে গুঞ্জন। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের নামে দুবাইয়ের আবুধাবিতে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টটিতে গত ৬ নভেম্বর ৪ কোটি টাকা, ১২ নভেম্বর ৮ কোটি টাকা এবং ২৮ নভেম্বর ৩২ কোটি টাকা জমা পরেছে। এগুলো ব্যবসার লভ্যাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

হঠাৎ করে এই দুই মাসে এমন বিপুল পরিমাণ টাকা কীভাবে জমা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একইভাবে তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানের নামে সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক ৩ নভেম্বর ৬ কোটি, ১৪ নভেম্বর ১৬ কোটি এবং ২৯ নভেম্বর ৩২ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এসব টাকার উৎস ব্যবসা এবং পড়াশুনার জন্য ঋণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে জাইমা রহমানের নামে লন্ডনের অ্যাকাউন্টে নভেম্বর এবং ডিসেম্বরের হিসেবে দেখা যায়, নভেম্বর মাসে মোট চারবার তার অ্যাকাউন্টে ৩ হাজার ও ৪ হাজার পাউন্ড জমা করা হয়। পরে আবার ৩ ও ৫ হাজার পাউন্ড জমা হয়। এই টাকাগুলো সম্বন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, আত্মীয় স্বজনের অনুদান এবং শিক্ষা খরচ।

উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হয়। যে বাণিজ্যের নেতৃত্ব দেন তারেক রহমান। বিভিন্ন মহল মনে করছে যে, মনোনয়ন বাণিজ্যের যে অর্থ, সেই অর্থই তারেক রহমান তার বিভিন্ন নিকটজনের অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছেন। সবচেয়ে মজার তথ্য হলো, তারেক রহমানের নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোন টাকা জমা হয়নি।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2025
MTWTFSS
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 
আলোচিত খবর